তামিমই কি সর্বকালের সেরা?

সর্বকালের সেরা ব্যাপারটা আসলে কী? সাধারণ অর্থে তো সর্বকালের সেরা বলতে বোঝায়, যার মতো কেউ আসেনি এবং আসবেও না। বাংলাদেশের ক্রিকেটে তামিম ইকবাল কি সে রকমই কেউ? এটা স্রেফ একটা প্রশ্ন। তবে অযৌক্তিক নয়। বাতুলতাও নয়। পরিসংখ্যান অন্তত তাই বলে।

তামিমের আবির্ভাবের আগে অনেক ব্যাটসম্যান খেলে গেছেন। যারা বাংলাদেশকে চিনিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের রাজপথ। মেধায়- প্রতিভায় তারা তামিমের চেয়ে কম ছিলেন না। আবার তামিমের পরও অনেকে আসবেন। তারা নিশ্চয় তামিমকে টপকেও যাবেন। পৃথিবীর নিয়মই এমন।

কিন্তু তামিম যেভাবে নিজেকে একের পর এক ধাপ উঁচুতে নিয়ে যাচ্ছেন, তিনি যেভাবে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে নানা ধরনের রেকর্ড করছেন, তাতে সর্বকালের সেরা ব্যাপারটা তামিমের নামের সঙ্গে উচ্চারণ করলে খুব একটা বেমানান লাগে না।

২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা শুরু করেন তামিম। তার পরিবার থেকে আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে গেছেন আকরাম খান ও নাফিস ইকবাল। প্রতিভার দারুণ জ্যোতি ছড়িয়ে এলেও, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নাফিস টিকতে পারেননি। কেনো পারেননি, বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম এক অমীমাংসিত রহস্য হলো এটি। তবে আকরাম খান পেরেছেন। তার সময়ে যতোটা পারা দরকার, তিনি ততোটাই পেরেছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট এতোটা পথ পারি দিয়ে এসেছে, আকরাম খানের এক হাফ সেঞ্চুরিতে ভর করে। সেটা সবারই জানা।

দুই টেস্ট ক্রিকেটারের পরিবার থেকে এসে তামিম তাদের সবাইকে গেলেন ছাড়িয়ে। একে একে দখলে নিলেন বাংলাদেশের ব্যাটিং রেকর্ডের প্রায় সব। পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি টেস্ট রান তামিমের। ওয়ানডে রানের মালিকও তিনি। সাকিবকে সরিয়ে টি-টোয়েন্টির সবচেয়ে বেশি রানও তারই। তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটেই এভাবে সব কিছু নিজের করে নিতে, কোন দেশের আর কোন ব্যাটসম্যান পেরেছেন? তামিমকে সর্বকালের সেরা বলার একটা কারণ কি এটা হতে পারে না?

টেস্টের সবচেয়ে বড় ইনিংসটা তামিম ইকবালের। ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিতেও তাই। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরিও করে ফেলেছেন তিনি। তামিম ইকবালের রেকর্ডের খাতাটা ক্রমেই পরিণত হচ্ছে।

আজ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আরো একটা কীর্তি নিজের করে নিলেন তামিম। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে লিস্ট-এ ক্রিকেটে পূরণ করে ফেললেন ছয় হাজার রানের মাইলফলক। খুব বড় কিছু কি? নাহ। খুব বড় না, কিন্তু চাইলেই যে অতিক্রম করে ফেলা যাবে, সে রকমও নয়।

সবচেয়ে আনন্দের ব্যাপার হলো, যতো দিন যাচ্ছে, তামিমের ব্যাটিং ততোই পরিণত হচ্ছে। ক্যারিয়ারের শুরুতে তামিমকে বলা হচ্ছিলো বাঁহাতি সেহওয়াগ। কিন্তু তামিম হয়তো সেভাবে ভাবেননি। এখন আর তাকে বাঁহাতি সেহওয়াগ বলা হয় না। তিনি এখন শুধুই তামিম; নিজের নামই যার সেরা পরিচয়।

বয়স সবেমাত্র ২৭ বছর। তামিমের সামনে বড় আছে আরো বড় একটা সময়। শরীর- স্বাস্থ্য ঠিক থাকলে, এ কথা বলাই যায় যে, টেস্ট ক্রিকেটে ১০ হাজার রান করা ক্লাবে প্রথম বাংলাদেশি হয়ে যেতে পারবেন তামিম। ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিতেও গড়বেন দারুণ কিছু রেকর্ড।

সব মিলিয়ে তামিম ইকবালকে যদি বলা হয়, বাংলাদেশের প্রথম সত্যিকারের বিশ্বমানের ব্যাটসম্যান; খুব বেশি ভুল বোধহয় হবে না। মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসানরাও দুর্দান্ত; তামিমকে নিয়ে এরাই বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে আকর্ষণীয় প্রজন্ম। আর এ প্রজন্মের সবচেয়ে বড় তারাটার নাম নিঃসন্দেহে তামিম। তামিম ইকবাল খান! সর্বকালে সেরা- বলতে যাই বোঝাক না কেনো, তামিমের নামের পাশে এটা জুড়ে দেয়াই যায়!

এখন পর্যন্ত তামিমের ক্যারিয়ার:

আপনি আরো পড়তে পারেন

আজ প্রথম ফাইনালিস্ট পাবে আইপিএল

ভারতীয় জাতীয় দলে পাঁচ নতুন মুখ, বাদ বিরাট কোহলি!

লঙ্কান জাতীয় দলে ফিরলেন কুসাল পেরেরা

বিরাট কোহলি থামবেন কোথায়?