‘ক্ষমতাসীন‘দের একহাত নিলেন মরিনহো

আর্থিক দুর্নীতি ও তদন্তে অসহযোগিতা করার জন্য ইউরোপিয়ান টুর্নামেন্ট থেকে দুই বছরের জন্য নির্বাসন দেওয়া হয় ম্যানচেস্টার সিটিকে। পরে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে আবেদন করে ইংলিশ ক্লাবটি। তাতে সফল হয়েছে পেপ গার্দিওলার দল। সোমবার নিষেধাজ্ঞা থেকে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলতে সিটির সামনে আর কোনো বাধা থাকল না।

সিটি নিষিদ্ধ থাকলে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের পঞ্চমস্থানে থাকা দলটি চ্যাম্পিয়নস লিগের টিকিট পেত। কার্যত তা আর হচ্ছে না। আগামী মৌসুমেও ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় প্রতিযোগিতায় দেখা যাবে সিটিজেনদের। নির্বাসন থেকে রেহাই পাওয়ার পর অনেকেই সিটিকে অভিনন্দন জানিয়েছে। পাশাপাশি সিটির নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়াকে নেতিবাচক হিসেবে দেখলেন কেউ কেউ।

তাদের মধ্যে আছেন লিভারপুল প্রধান কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ। জার্মান কোচের সঙ্গে যোগ দিলেন টটেনহাম হটস্পার প্রধান কোচ হোসে মরিনহো। পর্তুগিজ কোচ অবশ্য তীব্র প্রতিবাদ জানালেন। ‘স্পেশাল ওয়ানে’র কাছে এটা অন্যায্য। তার ভাষায়, ‘এটা একটা লজ্জাজনক সিদ্ধান্ত।’ এমন বক্তব্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতের সিদ্ধান্তকে এক প্রকার অসম্মান করলেন মরিনহো। কখন যে আবার তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ ওঠে!

আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতের সিদ্ধান্ত কেন মানতে পারেননি সেটার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মরিনহো। মঙ্গলবার রাতে তিনি, ‘ম্যান সিটির যদি দোষ না থাকতো তাহলে তাদের শাস্তি দেওয়াটা অন্যায়। যদি আপনি দোষী না হন, তাহলে শাস্তি পাবেন না। যদি তারা অন্যায় করে থাকে তাহলে তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত। তাতে যতো বিপর্যেই নেমে আসুক না কেন। আপনি দোষী হলে খেলা উচিত নয়। আমি বলছি না যে ম্যানসিটি দোষী নয়।’

দুই বছরের নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি সিটিকে ৩০ মিলিয়ন পাউন্ড জরিমানা করেছিল উয়েফা। কিন্তু সিটির বিরুদ্ধে আর্থিক স্বচ্ছতা লঙ্ঘনের (এফএফপি) প্রমাণ পায়নি আন্তর্জাতিক আদালত। তবে তদন্তে উয়েফাকে বিভ্রান্ত করায় ১০ মিলিয়ন পাউন্ড জরিমানা করেছে আদালত। টটেনহামে কোচ মরিনহোর প্রশ্ন, সিটি যদি অন্যায়-ই না করে থাকে তাহলে জরিমানা করা হলো কেন?

সিটির নিষেধাজ্ঞা মুক্ত হওয়াকে আর্থিক স্বচ্ছতার আইন ভাঙার সঙ্গে তুলনা করছেন মরিনহো, ‘তাদের (সিটির) কাছে অর্থ খরচ করাটা সহজ। কিন্তু এটা একটা আইন। তাহলে আপনি কেন আট, নয় মিলিয়ন (পাউন্ড) জরিমানা দেবেন? এটা লজ্জাজনজক ব্যাপার। আমার সমালোচনা ম্যানসিটিকে উদ্দেশ্য করে নয়। আমি আসলে জানি না তারা দোষী কিনা। আমার সমালোচনা ক্ষমাসীনদের প্রতি। আমি এফএফপির শেষ দেখতে পাচ্ছি। এটার আর এখন দরকার দেখছি না।’

উয়েফার ফাইনান্সিয়াল ফেয়ার প্লে (এফএফপি) নীতিকে ভিডিও অ্যাসিসটেন্ট রেফারিংয়ের সঙ্গে তুলনা করলেন মরিনহো। তিনি বলেছেন, ‘এফএফপি শেষ করে দেওয়া উচিত। কিন্তু সেটা করা হবে না। আমি এফএফপির মূলনীতি সম্পর্কে জানি না। এই সার্কাসের সঙ্গেও অমি একমত নই। আপনার যদি মনে হয় দরজা খুলুন, লোকজনকে সার্কাস উপভোগ করতে দিন। যে নীতি ভঙ্গের জন্য আপনাকে নিষিদ্ধ করা হলো অথচ সেটা টিকল না। এটা এখন ভিএআরের মতো হয়ে গেছে।’