তথ্য গোপন করে রোগী দেখছিলেন করোনাক্রান্ত চিকিৎসক

মরণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরও নিয়মিত রোগী দেখার অভিযোগ উঠেছে ডা. জাহাঙ্গীর আলম নামের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। তিনি নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান। তথ্য গোপন করে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখছিলেন তিনি।

জানা গেছে, গত ৬ জুন তার শরীরে ভাইরাসটির উপস্থিতি শনাক্ত হয়। এরপর থেকে নিজ বাসায় আইসোলেশনে ছিলেন তিনি। কিন্তু সপ্তাহখানেক পর থেকেই তথ্য গোপন করে শহরের প্রাইম জেনারেল হাসপাতালে নিয়মিত রোগী দেখেছেন। এমনকি গত ২৩ জুন তার দ্বিতীয় করোনা রিপোর্টও পজেটিভ আসে। সেই তথ্যও তিনি গোপন করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরেও তাকে হাসপাতালটির ২০২ নম্বর কক্ষে রোগী দেখা অবস্থায় পাওয়া যায়। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে আতঙ্কে আছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগী এবং হাসপাতালের স্টাফরা। বাড়তি সতর্কতা হিসেবে ইতোমধ্যে ওই ক্লিনিকে নতুন করে রোগী ভর্তির ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, করোনা শনাক্ত হওয়ার পর থেকে বাড়িতেই ছিলেন। শারীরিকভাবে সুস্থ হওয়ায় স্ত্রীকে নিতে হাসপাতালে আসেন। তার স্ত্রীও প্রাইম জেনারেল হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক।

অভিযুক্ত ডা. জাহাঙ্গীর আলম

প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে ফলোআপ পরীক্ষায় করোনা পজেটিভ আসার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, এ বিষয়টি কিছুক্ষণ আগেই জেনেছি। আরো একটা ফলোআপ পরীক্ষা আছে। আশা করি, সেটায় নেগেটিভ আসবে। তাছাড়া আমি শারীরিকভাবে সুস্থ। স্ত্রীকে নিতে হাসপাতালে এসেছিলাম।

প্রাইম জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আহসানুল কবির বলেন, ফলোআপ পরীক্ষায় তার করোনা পজেটিভ আসার বিষয়টি তিনি জানতেন না। একই সঙ্গে ডা. জাহাঙ্গীর আলম হাসপাতালে রোগী দেখার বিষয়টি অস্বীকার করেন এই পরিচালক।

বিষয়টি জানতেন না দাবি করে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. গৌতম রায় বলেন, একজন চিকিৎসকের কাছ থেকে এটা কখনোই কাম্য নয়। তিনি নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন বলে জানতাম। অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে অবশ্যই তাকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, করোনা পজেটিভ হয়েও চেম্বারে রোগী দেখার বিষয়টি ‘গর্হিত, অনৈতিক এবং দণ্ডনীয় অপরাধ’। ঘটনা জানার পর পরই উক্ত বেসরকারি হাসপাতালে নতুন রোগী ভর্তির ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি যেসব রোগী ওই চিকিৎসকের সংস্পর্শে এসেছেন তাদের ব্যাপারেও খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। হাসপাতালটি ইতোমধ্যে লকডাউন করা হয়েছে।