রেড জোনে ঘরেই পড়তে হবে নামাজ

দেশে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) বিস্তার রোধে ঘোষিত লাল (রেড) জোনের আওতাভুক্ত এলাকাগুলোতে মুসলিমসহ সকল ধর্মালম্বীদের নিজ নিজ ঘরে বসেই ইবাদত-বন্দেগি বা প্রার্থনা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ এসব এলাকার বাসিন্দারা নামাজ অথবা প্রার্থনার জন্য মসজিদ কিংবা অন্যন্য ধর্মীয় উপসনালয়ে সমাবেত হতে পারবেন না।

রেড জোনে ঘরেই নামাজ পড়ার নির্দেশনা

আজ শনিবার জনস্বার্থে ইবাদত-প্রার্থনার বিষয়ে পাঁচটি নির্দেশনা দিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এতে বলা হয়, দেশে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে এ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। সকল ধর্মের মূলনীতি বিচার-বিশ্লেষণ করেই এই নির্দেশনা তৈরি করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়নের জন্য মসজিদসহ সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় উপসনালয়গুলোর পরিচালনা কমিটিকে অনুরোধ করা হলো। কোনো প্রতিষ্ঠান সরকারি এ নির্দেশনা অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নির্দেশনাগুলো হলো-

১. নভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমণ রোধে যেসব এলাকায় লাল জোন ঘোষণা করা হয়েছে, সেসব এলাকার মসজিদগুলোতে শুধু ইমাম, মুয়াজ্জিন, খতিব ও খাদেমগণ নামাজ আদায় করতে পারবেন। এ ছাড়া এলাকার বাকি বাসিন্দাদের নিজ নিজ বাসায় নামাজ আদায় করতে হবে। পবিত্র জুমার দিনে জামায়াতে নামাজ আদায়ের পরিবর্তে বাসায় জোহরের নামাজ আদায় করতে হবে।

২. লাল জোন ঘোষিত এলাকাগুলোতে মসজিদে জামায়াত চালু রাখার ক্ষেত্রে ইমাম, মুয়াজ্জিন, খতিব ও খাদেমগণ সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে পারবেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে অনধিক পাঁচ জন ও জুমার নামাজে অনধিক ১০ জন অংশ নিতে পারবেন। তবে জনস্বার্থে বাইরের কোনো মুসল্লি মসজিদের ভেতর জামায়াতে অংশ নিতে পারবেন না।

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়

৩. মুসল্লিরা ছাড়াও লাল জোন ঘোষিত এলাকাগুলোতে অন্যান্য ধর্মালম্বীরা প্রার্থনার জন্য তাদের উপাসনালয়ে সমাবেত হতে পারবেন না। তাদেরকেও নিজ নিজ বাসায় থেকে প্রার্থনা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।

৪. করোনাভাইরাসের এ সংকটকালে জনস্বার্থে দেশের কোথাও ওয়াজ মাহফিল, তাবলীগ জামাত, তাফসির মাহফিল বা মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা যাবে না। সবাইকে নিজ নিজ বাসস্থানে থেকে ব্যক্তিগতভাবে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে যিকির, তিলাওয়াত ও দোয়া প্রার্থনা করার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

৫. এ সময় অন্যান্য ধর্মালম্বীরাও ধর্মীয় বা সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান পালনের জন্য একত্রে সমাবেত হতে পারবেন না।

প্রসঙ্গত, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় গত ৬ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তি জারির মাধ্যমে জনসাধারণের মসজিদসহ ধর্মীয় উপসনালয়ে সমাবেত না হয়ে নিজ নিজ বাসায় ইবাদত-প্রার্থনার নির্দেশনা দেয় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। পরে গত ৬ মে সেই নির্দেশনা শিথিল করে শর্তসাপেক্ষে নামাজের অনুমতি দেওয়া হয়।

কিন্তু বর্তমানে দেশে সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সরকার সংক্রমণের ভিত্তিতে এলাকাভিত্তিক তিনটি জোনে ভাগ করে লকডাউন কার্যক্রম শুরু করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় লাল জোন ঘোষিত এলাকাগুলোতে মসজিদ ও উপাসনালয়ে জনসাধারণের সমাবেত বন্ধের পরামর্শ দেওয়া হয়।