ফরিদপুরের যুবলীগ নেতার ফাঁসি মওকুফ

ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত ছিলো। কারা কর্তৃপক্ষকেও দেয়া হয়েছিলো প্রয়োজনীয় নির্দেশনা। তারপরও ফাঁসি কার্যকর হয়নি খুনের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের সাজা পাওয়া ফরিদপুরের যুবলীগ নেতা আসলাম ফকিরের।

জানা গেছে, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঠিক আগের দিন তার ফাঁসির দড়ি সরিয়ে ফেলা হয় এবং তার মৃত্যুদণ্ড দ্বিতীয়বারের আবেদনে মওকুফ করেন রাষ্ট্রপতি। আসলামের প্রাণভিক্ষা চেয়ে দুইবার আবেদন করা হয় রাষ্ট্রপতির কাছে। অথচ এই আবেদন একবারের বেশি করার নিয়ম নেই। প্রথমবার রাষ্ট্রপতি আবেদন নাকচ করে দিলেও দ্বিতীয়বার তার আবেদন গৃহীত হয় এবং তার শাস্তি ১৪ বছরে নামিয়ে আনা হয়।

দণ্ড মওকুফ করার আগে তাকে ছাড়ানোর জন্য নানা ধরনের তৎপরতা দেখা গেছে কর্তৃপক্ষের। বিশেষ বিশেষ দিবসে অপরাধীদের সাধারণ ক্ষমার যে বিধান রয়েছে, একবার সেই বিধানের সুযোগে তাকে ছেড়ে দেয়ার চেষ্টাও করা হয়েছিলো। সাংসদ নিলুফার জাফরউল্লাহ এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিক চিঠিও দিয়েছিলেন। কিন্তু তা গ্রহণ করা হয়নি।

জানা গেছে, ২০০৩ সালে আসলাম ফকির তারই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাহেব আলি মিয়াকে হত্যা করেন। আসলাম ও সাহেব পালাক্রমে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হয়ে আসছিলেন। কিন্তু সর্বশেষ নির্বাচনে পরাজয়ের পর এলাকায় আধিপত্য বিস্তারে সুবিধা করতে না পেরে সাহেবকে খুন করেন আসলাম।

পরে এ ঘটনায় দায়রা জজ আদালত পুলিশের প্রতিবেদনের পর আসলামকে মৃত্যুদণ্ড দেন এবং হাইকোর্ট এ রায় বহাল রাখেন। পরে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইলে তা নাকচ করা হয়। ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর ফাঁসি কার্যকর করার কথা ছিলো। কিন্তু এই দিনের একদিন আগে আচরণ বদলে যায় আসলামের। কারাগারের নথির ভাষায় তা ছিলো ‘অস্বাভাবিক’। ফলে আসলামের ফাঁসি কার্যকর হয়নি। এ পর্যায়ে আবার প্রাণভিক্ষার আবেদন করা হয় রাষ্ট্রপতির কাছে এবং ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাষ্ট্রপতি আসলামের প্রাণভিক্ষার আবেদন মঞ্জুর করেন।

ঘটনার অনেক পর এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো (৯ মে, ২০১৬)। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসলাম ফকির এখন ভালো আছেন বলে জানিয়েছেন কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জেষ্ঠ্য জেলসুপার মিজানুর রহমান। ফাঁসি কার্যকরের তারিখে আসলাম অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন কিনা, জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘কিছুক্ষণ পর মৃত্যু হবে, জানলে তো যে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়বে।’

জানা গেছে, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ১৪ বছরের জেল শেষ হবে আসলামের। তারপর ফরিদপুরে ফিরবেন তিনি।

আপনি আরো পড়তে পারেন

অনিবন্ধিত সিম আবার টাকা দিয়ে কিনে নিতে হবে

বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নেয়ার আশ্বাস দিল আরব আমিরাত

খালেদাকে 'লেডি লাদেন' বললেন মতিয়া

এক রবীন্দ্রনাথের দুই জন্মদিন!