কীভাবে বুঝবেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, দিনকে দিন যা হয়
- Details
- by জীবনশৈলী ডেস্ক
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহানে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) উদ্ভব হয়। চলতি বছরের এপ্রিলে ভাইরাসটি বিশ্বের ১৮৭টি ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ফেব্রুয়ারি মাসেই পরিস্থিতি বিবেচনা করে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা জারি করেছে।
বিশ্বব্যাপী মরণঘাতী এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত দুই লাখ ৫১ হাজারের বেশি সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে ৩৫ লাখের বেশি। সুস্থ হয়ে উঠেছে ১২ লাখ।
প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই বিভিন্ন দেশের গবেষক ও বিজ্ঞানীরা ভাইরাসটির উৎস ও প্রতিষেধক বের করার চেষ্টায় ব্যস্ত আছেন। তাদের বিভিন্ন গবেষণায় জানা গেছে, একজন মানুষ এই ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হলে দেহে কী কী প্রভাব পড়ে। সেইসঙ্গে ভাইরাসটির বিভিন্ন রূপ নিয়েও তারা আলোচনা করেছেন।
সংক্রমণের বিভিন্ন মাত্রা
নভেল করোনাভাইরাসের কারণে সাধারণত একজন আক্রান্তের দেহে শ্বাসপ্রশ্বাস জনিত সমস্যা হয়। সেই সঙ্গে স্বর্দি কাশিও হয়ে থাকে।
ভাইরাসটি মূলত সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপাইরেটরি সিনড্রোম (সার্স) ও মিডেল ইস্ট রেসপাইরেটরি সিনড্রোম (মার্স) এর সমগোত্রীয়। তবে সংক্রমণের মাত্রা এই দুই ভাইরাস থেকে করোনার কয়েকগুণ বেশি।
এই ভাইরাস মূলত হাঁচি, কাশির ড্রপলেটের মাধ্যমে মানবদেহে ছড়িয়ে থাকে। এছাড়া সংক্রমিত ব্যাক্তির ঘনিষ্ট সংযোগ থেকেও এর বিস্তার হয় বলে জানা গেছে।
কোনো ব্যক্তির দেহে ভাইরাসটি প্রবেশ করলে সাধারণত পাঁচ থেকে ছয়দিনের মধ্যেই জানান দেয়। এসময়ের মধ্যে শরীরে বিভিন্ন উপসর্গও দেখা দিতে শুরু করে। তবে এর ব্যতিক্রমও আছে। অনেকেই আছেন যাদের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি সংক্রান্ত কোনো উপসর্গই দেখা যায়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি স্বাস্থ্য সেবার প্রধান মারিয়া ভন কারকোভ বলেন, শ্বাসনালীতে ভাইরাসটি প্রজনন শুরু করে। সেসময় উপসর্গগুলো একে একে দেখা দিতে শুরু করে। এসময় দেহে স্বর্দি হয়। ধীরে ধীরে তা নিউমোনিয়ার দিকে ধাবিত হয়।
গবেষকরা বলছেন, বেশিরভাগ সংক্রমিত রোগীই সুস্থ হয়ে ওঠেন। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি তারা খুব দ্রুত এর থেকে সুস্থ হয়ে ওঠেন।
১৭ হাজার রোগীর ওপর একটি গবেষণা করে দেখা গেছে, ৮২ শতাংশ মৃদুভাবে ভাইরাসে আক্রান্ত। ১৫ শতাংশের অবস্থা হয়েছে গুরুতর। তিন শতাংশ রোগীর শারীরিক অবস্থা শুরু থেকেই আশঙ্কাজনক ছিল।
জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া
উহানের করোনা সংক্রমিত ১৩৮ রোগীর ওপর এক গবেষণা হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গ হচ্ছে জ্বর, অবসাদ ও শুকনো কাশি। এছাড়া মাংসপেশীতে ব্যথা ও শ্বাসকার্যের সমস্যার কথাও অনেকে বলেছেন। এদের মধ্যে ১০ শতাংশের ডায়রিয়া ও বমি বমি ভাব ছিল। মৃত্যু হয়েছিল ৬ জনের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীন থেকে প্রাপ্ত উপাত্ত থেকে আমরা জানতে পেরেছি কম বয়স্করা তুলনামূলক কম ঝুঁকিতে। বয়স যত বৃদ্ধি পাবে মৃত্যু ঝুঁকি তত বেশি থাকবে। বিশেষ করে ৪০-৬০ বছর বয়সী অনেক লোককেই আমরা কোনো জটিল শারীরিক সমস্যা ছাড়াই মরতে দেখেছি।
দিন যত যাবে লক্ষণ ততো বাড়তে থাকবে
সংক্রমণের প্রথম তিন দিন গলা খুস খুস, কাশি, জ্বরের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। কারো কারো বুকে সামান্য চাপ অনুভব করতে পারেন। সেইসঙ্গে স্বাদ ও ঘ্রাণশক্তি কাজ নাও করতে পারে। জ্বর ছাড়া বাকি সব উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
চতুর্থ-ষষ্ঠ দিন সময়ে অনেকেই সুস্থ হয়ে ওঠেন। অসুস্থতার মাত্রা খুব একটা বাড়ে না। যাদের আগের থেকে শারীরিক সমস্যা আছে তাদের অবস্থা গুরুতর হতে শুরু করে। এই পর্যায়ে তাদের দেহে লাগাতার জ্বর ও কাশি থাকে। শিশু ও তরুণদের দেহে এইসময়ে র্যাশের লক্ষণ দেখা দেয়।
সপ্তম-অষ্টম দিন পর্যন্ত সুস্থতা বোধ করেন। তবে কিছু রোগীর অসুস্থতা বেড়ে যায়।
অষ্টম-দ্বাদশ দিন সময়টি করোনাভাইরাসে কেউ সংক্রমিত হলে এই সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রোগীকে কঠিন নজরদারিতে রাখতে হবে।
মাউন্ট সিনাই-ন্যাশনাল জিউইশ হেলথ রেসপিরেটরি ইনস্টিটিউটের পরিচালক চার্লস এ পাওয়েল বলেন, করোনাভাইরাসের তীব্র লক্ষণগুলো আট থেকে ১২ দিনের মাথায় স্পষ্ট হয়ে যায়। এই সময়ের মধ্যেই বোঝা যায় কে সুস্থ হওয়ার পথে আর কার অবস্থা আশঙ্কাজনক। যাদের পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যায় তাদের শ্বাসকষ্ট ও কাশি বেড়ে যায়।
এই সময় কারো বাসায় থাকাটা নিরাপদ নয়। বাড়ির লোকদের পক্ষেও সব কিছু সামাল দেয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না।
১৩ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে যারা ভাইরাসটিতে মৃদুভাবে সংক্রমিত হয় তাদের অধিকাংশই এই সময়ের মধ্যে সুস্থ হয়ে যান। যাদের অসুস্থতা বেশি ছিল এবং অক্সিজেন চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল তাদেরও অনেকে সুস্থবোধ করতে পারেন। তবে যারা গুরুতর পর্যায়ে আছে তাদের অবস্থা এই সময়ের মধ্যে ঠিক নাও হতে পারে। এদের সেরে উঠতে আরো কিছুদিন সময় লাগে।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.