আপনি পড়ছেন

পবিত্র কোরআনের সূরা কামারে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘ওয়ালাকাদ ইয়াসসারনাল কোরআনা লিজজিকরি ফাহাল মিমমুদদাকির। হে মানুষ! আমি বোঝার জন্য কোরআন সহজ করে দিয়েছি। তোমরা কি তারপরও কোরআন থেকে উপদেশ নিয়ে জীবন সাজাবে না?’ এই দরদমাখা কথাটি একই সূরায় চার চার বার বলেছেন আল্লাহ তায়ালা। গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয়ই বার বার বলা হয়। কোরআন বোঝার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আর কি হতে পারে!

quran

তবুও আমাদের মাঝে কোরআন বোঝার কোনো পেরেশানি নেই। সত্যি বলতে কোরআন বোঝার কোনো আগ্রহ মুসলমানদের মধ্যে আছে বলেও মনে হয় না। সারা বছর আলমারির ওপর, ঘরের কোণে বড় অযত্নে পরে থাকে কোরআন শরিফ। কোরআনের ওপর ধুলা জমতে থাকে। রমজান এলে সে ধুলামাখা কোরআন নিয়ে আমরা বসে পড়ি খতম করার জন্য।

আমি শহরে থাকি। গ্রামে আমার আত্বীয়-স্বজন আছেন। যেখানেই যাই, রমজান মাসে দেখি সবাই গভীর আগ্রহ নিয়ে কোরআন পড়ছে। অনেকেই গর্ব করে বলে, এ রমজানে আমার দশ খতম হলো। কেউ বা বলে আমার পাঁচ খতম হয়েছে।

তাদের আমি জিজ্ঞেস করি, বুঝে পড়েছেন কয়টি আয়াত? তখন আর কোনো জবাব পাই না। কেউবা বলেন, বুঝার দরকার নেই, সওয়াবের দরকার। অথচ কোরাআন খতম করে সওয়াব কামানোর উৎসাহ সম্পর্কে না একটি কোরআনের আয়াত পেলাম, না কোনো একটি হাদিস শুনেছি। হায়! কোরআন বোঝার জন্য আল্লাহ যে বার বার দরদি আহ্বান করেছেন, সে আহ্বানে মুসলমানরা কেনো সাড়া দেয় না।

মুসলমানরা যদি বুঝে কোরআন পড়তো, কোরআন মতে জীবন চালাতো, তাহলে তো তাদের ওপর কোনো মহামারি নেমে আসত না। পৃথিবীর কেউ তাদের চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলার সাহস পর্যন্ত পেত না।

আজ কোরআন ছেড়ে দেয়ার কারণেই গোটা বিশ্বে মুসলমানরা লাঞ্চিত, নির্যাতিত এবং হত্যা ও নিপীড়নের শিকার। কোরআন না বুঝলে, সে অনুযায়ী জীবনযাপন না করলে, কিংবা কোরআনের বিধান সুবিধামতো কিছু মানলে যে লাঞ্চনার জীবন নেমে আসবে এ কথা তো কোরআনেই বলা আছে। সুরা বাকারা-৮৫।

যারা রমজানকে কোরআন খতমের মাস বানিয়ে নিয়েছে, তাদের জীবনের দিকে তাকালে চোখে পানি চলে আসে। কোরআন বলেছে একভাবে চলতে, তারা চলে পুরো উল্টোভাবে। কোরআন বলে মিথ্যে বলো না, ধোঁকা দিও না, জুলুম করো না, মুনাফাখোর হইও না। অথচ এমন হাজারো কোরআনবিরোধী কাজ করতে দেখি কোরআন খতম করা মানুষগুলোকে।

একদিকে তারা খতমের পর খতম করে যাচ্ছে, অন্যদিকে জীবন থেকে তারা কোরআনের শিক্ষা ছেড়ে দিয়েছে। এদের সম্পর্কে সূরা ফোরকানে কঠিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আল্লাহ বলেন, ‘ওয়াকালার রাসুলু ইয়া রাব্বি ইন্না কাওমিত্তাখাজু হাজাল কোরআনা মাহজুরা’।

অর্থ: কেয়ামতের দিন উম্মতদরদী নবিই তার উম্মতের বিরুদ্ধে খোদার কাছে নালিশ করে বলবেন, হে আমার রব! আপনি কোরআন দিয়েছেন, কোরআন বুঝে জীবন সাজানোর জন্য। কিন্তু আমার উম্মত কোরআন বোঝা ছেড়ে দিয়েছে। ফলে তারা কোরআনহীন জীবনযাপন করেছে। সূরা ফোরকান, আয়াত ৩০।

আসুন! আমরা কোরআন বুঝে পড়ার চেষ্টা করি। কোরআন বুঝে পড়লে দুনিয়া ও আখেরাতের বাদশাহী আল্লাহ মুসলমানদের উপহার দেবেন।

সূরা আরাফে আল্লাহ বলেন, ‘দেশের জনগণ যদি আল্লাহর ওপর ইমান আনতো এবং তাঁকে ভয় করে চলতো, তবে আকাশ ও পৃথিবীর কল্যাণের দরজাগুলো তাদের জন্য খুলে দেয়া হতো।’ আয়াত ৯৬।

লেখক: সাংবাদিক। 

Email: This email address is being protected from spambots. You need JavaScript enabled to view it.

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.