নিউজিল্যান্ডে শ্রীলঙ্কার দুঃস্বপ্নের দিন

ক্রাইস্টচার্চের হেগলি ওভালে টস জিতেছিলেন লঙ্কান অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। তারপর কী ভেবে ফিল্ডিংয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি কে জানে! নিউজিল্যান্ড যে ব্যাটিংয়ে নেমে এক রকম পাড়ার মানে নামিয়ে আনলো লঙ্কান বোলারদের। প্রথম দিনে ১৩৪ বলে ম্যাককুলামের ঝড়ো ১৯৫ রানে ভর স্বাগতিকরা তুলে ফেলেছে ৪২৯ রান। হাতে এখনো অক্ষত তিন উইকেট। নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে মাঠের প্রথম দিনটা এমন দুঃস্বপ্নের মতোই ছিলো লঙ্কানদের কাছে।

ম্যাথুজ হয়তো ভেবেছিলেন লঙ্কান পেস ও স্পিন আক্রমণের সামনে কিছুই করতে পারবে না কিউইরা। কিন্তু তার ধারণা পুরোপুরি উল্টে দিয়ে মাঠ গরম করে দিয়েছে কিউই ব্যাটসম্যানরা। ৮০ ওভার তিন বলে ৫.৩২ গড়ে রান তুলেছে তারা। শেষ কবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টের প্রথম দিনে প্রতিপক্ষ এতোটা আক্রমণাত্মক ছিলো তা রীতিমতো গবেষণার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দিন শেষে শ্রীলঙ্কার চেয়ে বহু এগিয়ে থাকলেও কিউইদের দিনের শুরুটা এতোটা ঝলমলে ছিলো না। মাত্র ৮৮ রানের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে লঙ্কান বোলারদের দিকেই দিনের ভাগ্য হেলিয়ে দিয়েছিলো তারা। কিউইদের ব্যাটিং লাইনে প্রথম আঘাতটা হানেন লঙ্কান পেসার সুরাঙ্গা লাকমাল। ১৮ রান করা হ্যামিশ রাদারফোর্ডকে বোল্ড করে ফেরান তিনি। দলীয় রান তখন ৩৭। পরে ৬০ রানে টম লাথামকে ফেরান সামিন্দা ইরাঙ্গা। তিনি করেছিলেন ২৭ রান। দলীয় ৮৮ রানে রস টেলরকে রান আউট করে শ্রীলঙ্কা স্বপ্ন দেখে দারুণ একটি দিনের।

কিন্তু তাদের স্বপ্নে প্রথম আঘাতটা হানে কিউইদের চতুর্থ উইকেট জুটি। গত কয়েক সিরিজ ধরে দারুণ ফর্মে থাকা কেন ইলিয়ামসনকে নিয়ে ১২৬ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক ম্যাককুলাম। ২১৪ রানে গিয়ে ধামিকা প্রসাদের বলে করুনারত্নেকে ক্যাচ দিয়ে ৫৪ রান করে ফিরেন উইলিয়ামসন। পরে পঞ্চম উইকেটে আবার বড় একটি জুটি গড়েন ম্যাককুলাম। এবার জেমস নিশামকে সাথে তিনি স্কোর বোর্ড যোগ করেন ১৫৩ রান। জুটি ভাঙে দলীয় ৩৬৭ রানে ম্যাককুলামের বিদায়ের মাধ্যমে। আউট হওয়ার আগে লঙ্কান বোলারদের নাকের জল চোখের জল এক করে ছেড়েছেন তিনি। ১৯৫ রান করেছেন মাত্র ১৩৪ বলে। ১১টি ছয়ের সাথে মেরেছেন ১৮টি চার। বোঝাই যাচ্ছে তার সামনে একেবারে অসহায় হয়ে গিয়েছিলো লঙ্কানরা।

৪২০ রানে আউট হন জেমস নিশাম। তিনি করেন ৮৫ রান। দলীয় ৪২৯ রানে কিউইদের সপ্তম উইকেট পতনের পর দিনের খেলা সমাপ্ত ঘোষণা করেন আম্পায়াররা। ততক্ষণে ৫.৩২ গড়ে রান তুলে মোটামুটি পাহাড়ই গড়ে ফেলেছে কিউইরা। দিন শেষে নিশ্চয় আফসোসে পুড়েছেন ম্যাথুজ। ভেবেছেন কেনো তিনি ফিল্ডিং নিতে গিয়েছিলেন!