মৃত্যুর আগে আসাদুল্লাহ: আর ইনজেকশন দিয়েন না, বুক ধড়ফড় করছে

‘আঙ্কেল আমার হাত ব্যথা করে। আমাকে আর ইনজেকশান দিয়েন না। আমার বুক ধড়পড় করছে।’ গত বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় মৃত্যুর আগে পল্লি চিকিৎসক আবদুল নূরের কাছে বাঁচার জন্য এভাবেই মিনতি করেছিল ৯ বছরের স্কুলছাত্র আসাদুল্লাহ।

আগের দিন বুধবার খেলতে গিয়ে হাতে ব্যথা পায় আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের ধর্মনগর গ্রামের আল-আমিন মিয়ার ছেলে আসাদুল্লাহ। পরে তাকে কসবার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের গোসাই বাজারের পল্লি চিকিৎসক আবদুল নূরের কাছে নিয়ে যান তার বাবা।

ওই চিকিৎসক শিশুটির হাতের এক্স-রে করার পরামর্শ দেন। পরে গত বৃহস্পতিবার উপজেলার একটি বেসকারি ক্লিনিকে এক্স-রে করে দেখা যায় আসাদুল্লাহর হাতের হাড় ফেটে গেছে।

তখন ওই পল্লি চিকিৎসক শিশুটির বাবাকে বলেন, তার হাতে প্লাস্টার করতে হবে। এরপর শিশুটির হাতে কয়েকটি ইনজেকশন পুশ করলে কিছুক্ষণের মধ্যে খিঁচুনি উঠে ঘটনাস্থলেই মারা যায় আসাদুল্লাহ। ব্যাপারটি বুঝতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান আবদুল নূর ও তার সহকারী জালাল মিয়া।

গণমাধ্যমের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে শিশুটির বাবা আল আমিন মিয়া কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ওই পল্লি চিকিৎসক জোর করে তার ছেলের হাতে প্লাস্টার করে। এ সময় তার ছেলে চিকিৎসককে কাকুতি-মিনতি করে বলেছিল, ‘আঙ্কেল আমার হাত ব্যথা করে। আমাকে আর ইনজেকশন দিয়েন না। আমার বুক ধড়পড় করছে।’ কিন্তু ওই চিকৎসক সে আঁকুতি না শুনে ফের ইনজেকশন পুশ করলে তার ছেলের খিঁচুনি উঠে মারা যায়।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে আবদুল নূর ও জালাল মিয়ার নামে কসবা থানায় একটি মামলা দায়ের করে আসাদুল্লাহর পরিবার। পরে শুক্রবার নিহতের লাশ উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কসবা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আশাদুল ইসলাম বলেন, ওই পল্লি চিকিৎসকের ভুলে শিশুটি মারা গেছে। ঘটনার পর থেকেই ওই চিকিৎসক ও তার সহকারী পলাতক আছে। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে।