নতুন যারা জিততে পারেন ব্যালন ডি’অর

ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর এখন ক্যারিয়ারের শেষের শুরু। বর্তমান প্রজন্মের ভিড়ে দুজনের পক্ষে ব্যালন ডি’অর জেতা কিছুটা হলেও কঠিন হতে পারে। এই দুজন ছাড়া ব্যালন ডি’অরের দাবি রাখতে পারেন কয়েকজন ফুটবলারই। দেখে নেওয়া এ বছরের ও ভবিষ্যতের সম্ভাব্য জয়ীদের।

ভার্জিল ফন ডাইক: ২০১৯ সালেই ব্যালন ডি’অর জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন ভার্জিল ফন ডাইক। কিন্তু লিওনেল মেসির সঙ্গে দুর্দান্ত লড়াইয়ের পর হেরে গেছেন লিভারপুলের ডাচ ডিফেন্ডার। এ বছরও ব্যালন ডি’অরের লড়াইয়ে তিনি থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রায় তিন দশকের অপেক্ষা ঘুচিয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জিততে চলেছে লিভারপুল। অল রেডদের এই স্বপ্নযাত্রার অন্যতম সারথি ফন ডাইক। দুর্দান্ত পারফর্ম করে চলেছেন তিনি। লিভারপুলের শেষ দশ ম্যাচে ফন ডাইক মাত্র একটি গোল হজম করেছেন। গোলবার অক্ষত রাখার পাশাপাশি মধ্যমাঠ এবং আক্রমণভাগেও সহায়তা করছেন তিনি।

কেভিন ডি ব্রুইন: এই প্রজন্মের সম্ভবনাময় একজন ফুটবলার কেভিন ডি ব্রুইন। এই মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটি সুবিধা করতে না পারলেও দারুণ ছন্দে আছেন বেলজিয়ান মিডফিল্ডার। ইংলিশ লিগে সিটির ২২ গোলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অবদান রেখেছেন ডি ব্রুইন। তিনি ভাঙতে চলেছেন লিগের এক মৌসুমে সর্বোচ্চ ২০টি অ্যাসিস্ট করা আর্সেনাল কিংবদন্তি থিয়েরি অঁরির রেকর্ড।

এই মৌসুমে লিগে সতীর্থদের দিয়ে ১৫টি গোল করিয়েছেন ডি ব্রুইন। যেভাবে ছুটছেন তিনি তাতে অঁরির ১৭ বছর আগের রেকর্ড ভাঙা বেলজিয়ান সেনসেশনের জন্য যেন শুধুই সময়ের অপেক্ষা। ফর্মটা তিনি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগেও বয়ে নিয়ে গেছেন। সিটির হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ কিংবা বেলজিয়ামের হয়ে ইউরো বিশ্বকাপ জিতলে ব্যালন ডি’অরের লড়াইয়ে চলে আসতে পারেন ডি ব্রুইন।

আর্লিং হাল্যান্ড: এই মৌসুমে ইউরোপিয়ান ফুটবল কাঁপিয়ে দিচ্ছেন আর্লিং হাল্যান্ড। চ্যাম্পিয়নস লিগে ছয় ম্যাচে আট গোল করেছেন তিনি। গেল জানুয়ারিতে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডে নাম লেখানোর পর এখানেও দারুণ ফর্মে রয়েছেন ইংলিশ বংশোদ্ভূত নরওয়েজান সেনসেশন। চলতি মৌসুমে ২৬ ম্যাচে ৩৬টি গোল করে ফেলেছেন তিনি। ১৯ বছর বয়সীর তার ধারে কাছেও নেই কেউ! এই গোলবন্যা হাল্যান্ডকে নিয়ে আসতে পারে ব্যালন ডি’অরের লড়াইয়ে।

নেইমার: ব্যালন ডি’অর জয়ের স্বপ্নে বার্সেলোনায় পাড়ি জমিয়েছিলেন নেইমার। কিন্তু লিওনেল মেসির ছায়া থেকে বের হতে পারেননি তিনি। ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার বিশ্ব রেকর্ড গড়ে চলে আসেন প্যারিস সেন্ট জার্মেইতে (পিএসজি)। নতুন ঠিকানায় মাঠে যতটা সময় থাকছেন আগুন ঝরাচ্ছেন নেইমার।

তার দুর্বার ছন্দে বারবার বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে ইনজুরি। চোটের কারণে ইউরোপিয়ান ফুটবলে এখন অবধি একটা মৌসুমও ঠিকঠাক খেলতে পারেননি নেইমার। তবু প্রতিবারই ব্যালন ডি’অরের লড়াইয়ে তাকে অনেকেই গোনার মধ্যে রাখেন। এই মৌসুমেও তাই। ইতোমধ্যে পিএসজির হয়ে ১৮ ম্যাচে ২৫টি গোল করে ফেলেছেন তিনি। তাকে ঘিরেই চ্যাম্পিয়নস লিগ স্বপ্ন দেখছে পিএসজি।

কিলিয়ান এমবাপ্পে: পিএসজির স্বপ্নসারথি আছেন আরো একজন। তিনি কিলিয়ান এমবাপ্পে। কুঁড়ির আগেই বিশ্বকাপ জেতা হয়ে গেছে তার। এখন তিনি স্বপ্ন দেখাচ্ছেন প্যারিসিয়ানদের। নেইমারের সঙ্গে তার জুটি বর্তমান ফুটবল দুনিয়ায় সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। গোল এবং অ্যাসিস্ট দুটোতেই সমান পারদর্শী হয়ে উঠেছেন এমবাপ্পে।

চলমান মৌসুমে এখন অবধি ফরাসি স্ট্রাইকার করেছেন ২২ গোল। সতীর্থ দিয়ে করিয়েছেন আরো ১৩টি। এমবাপ্পেকে হাতছানি দিচ্ছে বড় তিনটি শিরোপা। ফ্রান্সের হয়ে ইউরো বিশ্বকাপ ও অলিম্পিক ফুটবল স্বর্ণপদক এবং পিএসজির জার্সিতে চ্যাম্পিয়নস লিগ- এই তিনটির যে কোনো দুটি জিতলে এ বছরের সেরা ফুটবলার হয়ে যেতে পারেন এমবাপ্পে।