ইরান ইস্যু: চীনের ওপর চটেছে যুক্তরাষ্ট্র

ইরানের কাছ থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখলে চীনের বিরুদ্ধে ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এ হুমকি দেন। ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে দেশটির ঘনিষ্ঠ মিত্র চীনকেও এবার হুমকি দিলো যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইরানের কাছ থেকে তেল কিনে চীন বেআইনি কাজ করছে। যেসব দেশ বা কোম্পানি মার্কিন নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করবে ইরানি তেল কিনবে, সেসব দেশ ও কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

এর আগে গত রোববার মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিফেন মানুচিন ঘোষণা করেছিলেন, ইরানের কাছ থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখলে চীনের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

এদিকে আগে থেকেই চীনা শীর্ষ কর্মকর্তারা বলে এসেছেন, ইরানের ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অবৈধ। তারা এ নিষেধাজ্ঞা মানেন না।

প্রসঙ্গত, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ আলোচনার পর ২০১৫ সালের জুলাই মাসে ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা সই করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন ও রাশিয়া। ডেনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর ২০১৮ সালের গত মে মাসে এ সমঝোতা থেকে একতরফাভাবে বেরিয়ে গিয়ে তেহরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।

এর জবাবে ২০১৯ সালে সমঝোতার ২৬ ও ৩৬ ধারা অনুযায়ী এটি বাস্তবায়ন স্থগিত করে ইরান। সর্বশেষ চলতি বছরের গত ৩ জানুয়ারি ইরানি প্রভাবশালী কমান্ডার জেনারেল কাশেম সোলায়মানিকে ইরাকের বাগদাদ বিমানন্দরের কাছে মার্কিন বাহিনী ড্রোন হামলা চালিয়ে হত্যা করলে পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠে। ওই হত্যার প্রতিশোধ নিতে ইরাকের দুটি মার্কিন ঘাঁটিতে অন্তত ২২টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্য থেকে মার্কিন বাহিনীদের বিতাড়িত করা এবং পরমাণু সমঝোতা বাতিলের হুমকি দেয় ইরান।

এই হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়ে যায়, যা যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এজন্য মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেন অব্যাহত রাখা দেশগুলোর ওপর ক্ষেপেছে ট্রাম্প প্রশাসন। বর্তমানে চীন ছাড়াও ভারত, ইরাক, রাশিয়া ও তুরস্কসহ অনেক দেশের সঙ্গে ইরানের বাণিজ্য রয়েছে।