মুস্তাফিজ যেনো স্বর্গের শিশু

কেন উইলিয়ামসনকে মনে করা হয় বর্তমান বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন। তেমনি স্টিভ স্মিথও। অথচ এই দুজনই মুস্তাফিজুর রহমানের বলে বোল্ড হয়েছেন একইভাবে। মুস্তাফিজের বিস্ময়ভরা বাঁহাত থেকে বের হওয়া স্লোয়ার বুঝতে পারেননি তাদের কেউই।

ক্যারিয়ার শুরুই করেছিলেন সবাইকে বোকা বানিয়ে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মুস্তাফিজের প্রথম উইকেট শহিদ আফ্রিদি। ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম বিখ্যাত ক্রিকেটার তিনি। মুস্তাফিজের যে কাটারে আফ্রিদি ক্যাচ আউট হয়েছিলেন, সেটা আসলেই ক্যাচ ছিলো কিনা; সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে। কাটারে বিভ্রান্ত হয়ে আফ্রিদি লাইনে ব্যাট চালাতে পারেননি, আম্পায়ারও বনে গেছেন বোকা। বোঝেননি বল ব্যাটে লেগেছে কিনা! সেই যে শুরু হলো অনন্ত রহস্যের। যার সমাধান আপাতত নেই।

রোহিত শর্মা ভারতীয় দলের অন্যতম স্তম্ভ। সেই তার বিপক্ষে চারবার বোলিং করেছেন মুস্তাফিজ। চারবারই তাকে শিকার করেছেন 'ক্রিকেটের মেসি'! মুস্তাফিজ যেনো স্বর্গ থেকে পথ হারিয়ে ধুলোর পৃথিবীতে এসে পড়া এক শিশু। যার সব কিছুতেই বিস্ময়। সব কিছুতেই অপার রহস্য।

শনিবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ২২ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটাই সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড। মুস্তাফিজ পিছনে ফেলেছেন জেমস ফকনারকে। মজার ব্যাপার হলো, টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে কোনো বাঁহাতি পেসারের সেরা সাফল্যের গল্পটাও লিখে ফেলেছেন মুস্তাফিজ।

তার কাটার রহস্যে পা দিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন পাঁচ পাঁচজন কিউই ব্যাটসম্যান। এর মধ্যে ফিল্ডারের সহায়তায় মুস্তাফিজ আউট করেছন মাত্র একজনকে। বাকি চারটাতে কেবলই তার বাঁ হাতের জাদু- বোল্ড!

২০১৫ ভারত বাংলাদেশের কাছে সিরিজ হেরে যায় মূলত মুস্তাফিজের কারণেই। তার হাত থেকে বের হওয়া একেকটা বল ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের কাছে হয়ে উঠে দুর্ভেদ্য ধাঁধার মতো। যার কোনো কুল-কিনারা এখনো বের করতে পারেননি ব্যাটসম্যানরা।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ হেরে গেলেও এ দেশের পাগল সমর্থকদের মন খারাপ হচ্ছে না মোটেই। কারণ মুস্তাফিজের ওই রকম ঈর্ষণীয় সাফল্য। যা দেখে মাশরাফি- উইলিয়ামসন থেকে শুরু করে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন অনিল কুম্বলের মতো কিংবদন্তীরাও।

বর্তমান বিশ্বের প্রায় সব ব্যাটসম্যানকেই শিকার করা হয়ে গেছে মুস্তাফিজের। যেখানে নাম আছে রোহিত শর্মা, কুইনটন ডি কক, রোহিত শর্মা, জেপি ডুমিনি, হাশিম আমলা ও এমএস ধোনিদের মতো ব্যাটসম্যানদের। বিপিএলে তার একটি বলই খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন ক্রিস গেইল এবং এক বলেই ইতিহাসের অন্যতম ভয়ঙ্কর ব্যাটসম্যানকে বোল্ড করেন মুস্তাফিজ!

মোট ছয়বার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পরপর দুই বলে দুই উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজ। কিন্তু ধরা দেয়নি পরম সাধনার হ্যাটট্রিক। এখন পর্যন্ত ক্যারিয়ারের সম্ভাব্য সবই তো অর্জন হয়ে গেছে। এই হ্যাটট্রিকটাও হয়তো ধরা দিবে মুস্তাফিজের বাঁ হাতে।

আপনি আরো পড়তে পারেন

হতাশ বাংলাদেশ শেষ ম্যাচে ভেঙেই পড়লো

বোল্ড করার বিশ্ব রেকর্ডে বাংলাদেশ

নিজেকে 'অযোগ্য' বললেন আফ্রিদি

রেকর্ড গড়ে কিউইদের ১৪৫ রানে আটকালেন মুস্তাফিজ