প্রশংসার ঝাঁপি খুলে দিলেন অধিনায়ক

লক্ষ্যটা নাগালের মধ্যে রেখেছেন বোলাররা; শক্তিশালী ভারতের ব্যাটিং লাইনকে আটকে দিয়েছে ১৪৮ রানের মধ্যে। পরে ব্যাটসম্যানরা টেনেছেন সুন্দর সমাপ্তি। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং তিন বিভাগের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ পেয়েছে সাত উইকেটের দারুণ জয়। স্বাগতিক ভারতের ক্রিকেটের যে কোনো সংস্করণে এটাই প্রথম জয় টাইগারদের।

কালকের এই জয়ের ভিতটা বোলাররাই গড়ে দিয়েছেন বলে মনে করছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কারণ প্রথম ওভারে দুই চার হজমের পরও ভড়কে যাননি পেসার শফিউল ইসলাম। ওভারের শেষ বলে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে রোহিত শর্মাকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন ডানহাতি পেসার। রোহিতের উইকেটই টাইগারদের জয়ের প্রথম ভিত।

ভারতকে ইনিংসের শুরুতেই চেপে ধরা বাংলাদেশ ম্যাচের লাগামটা হাতে নিয়ে নেয়। শেষের দুই ওভার বাদ দিলে পুরো ইনিংসেই দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন টাইগাররা। আমিনুল-শফিউল-আফিফদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ভারতকে দেড় শ রানের মধ্যে বেঁধে ফেলে সফরকারীরা। ভারতকে নাগালে রাখতে প্রভাব রেখেছে দারুণ ফিল্ডিংও।

চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যমাত্রায় বাংলাদেশ পৌঁছেছে মুশফিক, সৌম্য, নাঈম, মাহমুদুল্লাহদের ব্যাটিং দৃঢ়তায়। লাল-সবুজ অধিনায়কের মতে ভারতের ইনিংসের শুরুতেই জয়ের ভিতটা পেয়েছে দল। কাল ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুল্লাহ বলেছেন, 'যেভাবে আমরা শুরু করেছিলাম, জয়ের ভিত গড়া হয়েছিল সেখানেই। বোলাররা অসাধারণ বোলিং করেছে।'

সতীর্থদের বোলিংয়ে ভীষণ মুগ্ধ মাহমুদুল্লাহ কৃতিত্ব দিচ্ছেন সব বোলারকে। তিনি বলেছেন, 'সব বোলারকে কৃতিত্ব দিতে হবে, বিপ্লব, আল আমিন, শফিউল, আফিফ…। ফিল্ডিং দারুণ হয়েছে আমাদের। সেই ছন্দটা পরে ব্যাটিংয়ে বয়ে নিতে পেরেছি আমরা।'

ভারতের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টিতে আগের আট ম্যাচের সবকটিতে হেরেছে বাংলাদেশ। মাশরাফিরা যা পারেননি সেটাই করে দেখিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ। তার দুর্দান্ত নেতৃত্বে ভারত গিঁট খুলেছে টাইগাররা। কিন্তু নিজেকে আড়াল করে সতীর্থদেরই মূল কৃতিত্বটা দিচ্ছেন অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার।

দিল্লি জয়ের পর সাংবাদিক বৈঠকে মাহমুদুল্লাহ বলেছেন, 'ছেলেরা ভালো করেছে বলেই নেতৃত্ব ভালো মনে হচ্ছে। ওটাই আসল। মুস্তাফিজ আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বটে। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে, ওই সময়টায় শফিউল, আফিফ আর আল আমিনদের ব্যবহার করলেই বেশি কাজে লাগবে।'

মাহমুদুল্লাহ প্রশংসার ঝাঁপি খুলে দিয়েছেন ব্যাটসম্যানদের জন্যও। বলেছেন, 'মুশি (মুশফিক) যেভাবে ব্যাট করেছে, কৃতিত্ব দিতেই হবে। মাঝের সময়টায় মুশি ও সৌম্য নিজেদের স্নায়ু সামলে জুটি গড়ে তুলেছে। নাঈমকেও কৃতিত্ব দিতে হবে। অভিষেক ম্যাচ হলেও সে দলকে ভালো শুরু এনে দিয়েছে। সব মিলিয়ে দারুণ জয়।'

ঐতিহাসিক জয়ের পরও বাংলাদেশের পা মাটিতেই। প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জয়ের উদযাপনটা বাধভাঙা করেনি টাইগাররা। সেটা সিরিজ জয়ের জন্য তুলে রেখেছে সফরকারীরা। মাহমুদুল্লাহ-মুশফিকদের চোখ এখন সিরিজ জয়ে। এরপরই আরো ভালো উদযাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জয়ের নায়ক মুশফিক।

তিনি বলেছেন, 'জয় তো জয়ই। এখনও দুইটা ম্যাচ আছে। এখনও সিরিজও জিতি নাই। আরও একটা ম্যাচ জিতে যদি সিরিজটা জিততে পারি তাহলে ইনশাল্লাহ আরও ভালো উদযাপন করব। আমরা এখানে প্রতিটা ম্যাচে লড়াই করতে এসেছি। প্রতি দিন একটু একটু করে উন্নতি করা আমাদের মূল লক্ষ্য। অবশ্যই আরেকটি জয়ের দিকে আমরা তাকিয়ে আছি। সেটা হতে পারে পরের ম্যাচেই।'