চালকের আসনে আফগানিস্তান

চট্টগ্রাম টেস্টের শুরু থেকেই চালকের আসনে আফগানিস্তান। তিন দিনের লড়াই শেষে আধঘণ্টার জন্যও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হাতে নিতে পারেনি বাংলাদেশ। আফগানরা কঠিন থেকে কঠিনতর চ্যালেঞ্জের দিকে ঠেলে দিচ্ছে টাইগারদের। আজ দিনের খেলা শেষে তো জয়ের স্বপ্ন দেখছে রশিদ খানের দল।

প্রথম ইনিংসে ৩৪২ রানে থেমেছে আফগানিস্তানের রানের চাকা। বাংলাদেশকে ২০৫ রানে গুটিয়ে দিয়ে ফের ব্যাটিং করছে আফগানরা। তাদের ফিরতি ইনিংসেও শুরুটা ভালো হয়নি। চার রানের মধ্যে দুই উইকেট ফেলে দিয়ে সফরকারীদের চাপে রেখেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

চাপটা অব্যাহত রাখতে পারেনি স্বাগতিক শিবির। সময় যতই সমান এগিয়েছে ততোই ব্যাক ফুটে চলে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে লিডের পাহাড় গড়েছেন রশিদরা। তৃতীয় দিনের খেলা শেষে টাইগারদের কাঁধে চাপিয়ে দিয়েছেন ৩৭৪ রানের বোঝা। আফগানদের হাতে আছে আরো দুই উইকেট। এই দুই উইকেটে যতদূর সম্ভব ততদূরই যেতে মরিয়া আফগানিস্তান।

আজ জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৩৭ রান করেছে টেস্ট ক্রিকেটের নবজাতকরা। সংগ্রহটা আরো বাড়তে পারতো। কিন্তু শেষ বিকেলে আলোক স্বল্পতা ও এক পশলা বৃষ্টির কারণে আধ ঘণ্টা আগেই শেষ হয়েছে দিনের খেলা। কাল আফসার জাজাই ৩৪* ও আহমাদজাইকে নিয়ে দিনের খেলা শুরু করবেন। শেষ বিকেলে সঙ্গী কায়েস আহমেদ সাকিবের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে গেছেন ১২ রানে।

চট্টগ্রাম টেস্টের ইতিহাসে আগে ব্যাট করা কোনো দল অন্তত তিন শ রান করা দল হারেনি। ইতিহাস এ-ও সাক্ষ্য দিচ্ছে এই- টেস্টে আফগানদের হারার সম্ভাবনা নেই। স্বাভাবিকভাবেই শুরু থেকেই নির্ভার সফরকারীরা। দুশ্চিন্তা যা বাংলাদেশেরই। জয় টাইগারদের জন্য প্রায় অসম্ভব। জিততে হলে সাকিবদের গড়তে হবে ইতিহাস। কারণ টেস্ট ক্রিকেটে ২১৫ রানের বেশি তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই টাইগারদের।

সেই জয়টাও দশ বছর আগে; ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে। হাতে সময় আছে আরো দুদিন- বাংলাদেশ ড্র করতে পারলেও সেটা হবে বিরাট অর্জন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে- রশিদ-নবিদের মতো বিশ্বমানের স্পিনারের সামনে দাঁড়াতে পারতো তো বাংলাদেশ? প্রথম ইনিংসেই তো ধসে পড়েছিল স্বাগতিকদের ব্যাটিং অর্ডার।

আজ বাংলাদেশের স্বস্তি বলতে ওপেনার ইব্রাহিম জাদ্রানকে শতক বঞ্চিত করা। ছয়টি চার ও চারটি ছক্কা মারা ইব্রাহিম আউট হয়ে গেছেন ব্যক্তিগত ৮৭ রানে। প্রথম ইনিংসে অল্পের জন্য শতকবঞ্চিত হওয়া আসগর আফগান আজ আউট হয়েছেন ৫০ রানে। ওয়ানডে মেজাজে খেলতে গিয়ে রশিদ আউট হয়েছেন ২২ বলে ২৪ রান করে।

তার আগেই দারুণ একটা অর্জন হয়ে গেছে তার। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমে হাফসেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পাওয়া চতুর্থ ক্রিকেটার হয়েছেন রশিদ। এই কীর্তি তার আগে করেছেন কেবল তিনজন- ইংলিশ অলরাউন্ডার স্ট্যানলি জ্যাকসন, পাকিস্তানের ইমরান খান ও বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান।