ফলোঅন এড়ালো বাংলাদেশ

প্রথম দিনের খেলা শেষ মলিনমুখে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ। আজ সকালেই হাসি ফিরেছে টাইগার শিবিরে। আফগানিস্তানকে অল্পতে থামানো গেছে- এই আনন্দে। এই অল্প রানও নেহাৎ কম নয়। অলআউট হওয়া আগে প্রথম ইনিংসে ৩৪২ রান তুলে ফেলেছে আফগানরা। কিন্তু উইকেট এবং কন্ডিশন বিবেচনায় এই রানই পাহাড়সম! তাই আফগানদের ইনিংস শেষে চাপে বাংলাদেশ।

চাপটা ক্রমবর্ধমান হয়ে বাড়ছে। আফগানদের ছুড়ে দেওয়া প্রায় সাড়ে তিন শ রানের জবাব দিতে নেমে শুরু থেকেই কাঁপতে থাকে বাংলাদেশের টপ অর্ডার। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট খোয়াতে থাকা টাইগাররা ইনিংস হারের শঙ্কায় পড়েছিল। মুমিনুল হকো ঝড়ো হাফসেঞ্চুরির সুবাদে বড় ধরনের লজ্জা এড়িয়েছে টাইগাররা। মিডল অর্ডারের ব্যাটিং স্তম্ভ মুশফিকুর রহিমের অপ্রত্যাশিত বিদায়-ই আশঙ্কায় ফেলে দিয়েছিল স্বাগতিকদের।

মধ্যাহ্ন ভোজের পর চা বিরতির আগে বাংলাদেশ হারিয়ে ফেলে পঞ্চম উইকেট। স্কোর বোর্ডে জমা পড়েছে মাত্র ৮৮ রান। আউট হওয়া ব্যাটসম্যানদের তিনজনই সাজঘরে ফিরেছেন উইকেটে থিতু হওয়ার পর। সৌম্য সরকার ১৭, লিটন দাস ৩৩ এবং অধিনায়ক সাকিব ফিরেছেন ১১ রানে। বাংলাদেশের ইনিংসে এখন পর্যন্ত প্রথম ও সবশেষ আউট হওয়া মুশফিক ও সাদমান দুজনের একজনও রানের খাতা খুলতে পারেননি। টেস্ট ক্যারিয়ারে এনিয়ে দশমবার শূন্য রানে আউট হয়েছেন মুশি।

মুশফিক দুই বল ও সাদমান টিকেছেন চার বল। প্রথমজনের আউট নিয়ে বিতর্ক আছে। রশিদের বল রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলেছেন মুশফিক। বল তার পায়ের অগ্রভাগে পড়ে যায় শর্ট লেগে ফিল্ডারের হাতে। ক্যাচের আবেদন জানায় সফরকারীরা। তৃতীয় আম্পায়ার ডাকেন ফিল্ডার আম্পায়ার। যদিও আউটে তার সফরট সিগন্যাল ছিল। সেটাই শেষ পর্যন্ত কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কিন্তু রিভিউতেও শতভাগ নিশ্চিত হওয়া গেল না মুশফিক আউট কি না। মাটিতে নাকি মুশফিকের বুটে কোন অংশে লেগে বল শর্ট লেগে যায়? উইকেটে পর্যাপ্ত ধুলোবালির কারণে ক্যামেরাতে একেক দিক থেকে একেক রকম মনে হচ্ছিল। এমন দ্বিধার পর তৃতীয় আম্পায়ার মুশফিককে আউট দেন। তার আগে একই ওভারে রশিদের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে গেছেন সাকিব।

এক প্রান্ত আগলে রেখে বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেছিলেন মুমিনুল। তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দল ফলোয়ান এড়িয়েছে ঠিকই; কিন্তু অল্পতে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কাটা ঠিকই আছে। ওয়ানডে মেজাজে খেলতে যাওয়া মুমিনুল ব্যক্তিগত ৫২ রানে আউট হয়ে গেছেন। তার আগে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। রশিদের বলে বোল্ড হয়েছেন ব্যক্তিগত সাত রানে।

মুমিনুল আউট হওয়ার পর ফের ফলোয়নের শঙ্কায় পড়েছিল বাংলাদেশ। মেহেদি হাসান মিরাজ ও মোসাদ্দেক হোসেন কোনোরকম বিব্রতকর এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচিয়েছেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মোসাদ্দেক ১২ এবং মিরাজ ১০ রানে ব্যাট করছেন। প্রথম ইনিংসে সাত উইকেটে বাংলাদেশ করেছে ১৪৪ রান। প্রথম ইনিংসে আফগানদের চেয়ে এখনো ১৯৮ রান পিছিয়ে আছে টাইগাররা।

স্বাগতিকদের এমন বিপদে ফেলেছেন আফগান অধিনায়ক রশিদ খান। টাইগারদের টপ অর্ডার ধসিয়ে দিয়েছেন এই লেগ স্পিনার। বাংলাদেশের পতন হওয়া সাত উইকেটের চারটিই নিয়েছেন এই স্পিনার। দুটি শিকার মোহাম্মদ নবির। একটি উইকেট নিয়েছেন আহমাদজাই।