‘মীরাক্কেলে’র আশায় তাইজুল

টস হারা- এ আর তেমন কী! চট্টগ্রাম টেস্টের মধ্যাহ্ন ভোজের আগে এমন ভাবনা হয়তো এসেছিল। সেই ভাবনাটা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াল দিন শেষে। টেস্ট ক্রিকেটের নবজাতক আফগানিস্তান শুরুর ধাক্কা সামলে যেভাবে লড়াইয়ে ফিরল তাতে স্পষ্ট- ‘তাদের ক্রিকেট অনেকটাই এগিয়েছে’। তাহলে কি পিছিয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেট? এখনই এই প্রশ্নের উত্তর আগ বাড়িয়ে দেওয়াটা অমূলক।

তবু চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ দলের একাদশ ও আফগানিস্তানের দুর্দান্ত ব্যাটিং অশনি সংকেত বহন করছে। কারণ এই উইকেটে প্রথম ইনিংসে তিন শর বেশি রান বেশি করা দল সাধারণত হারে না। প্রথম দিনের খেলা শেষে ইতোমধ্যেই পাঁচ উইকেটে ২৭১ রান তুলে ফেলেছে আফগানরা। তিন শ তো বটেই, রশিদরা চার শ করলেও সেটা বিস্ময়কিছু হবে না।

যতো দ্রুত সম্ভব আফগানদের গুটিয়ে দেওয়াই দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে সফরকারীরা কার্যত যা রান করেছে সেটা ঢের হয়ে গেছে। এটা বোঝার জন্য ক্রিকেট বিষয়ে গভীর জ্ঞান থাকার দরকার পড়ে না কারোরই। অথচ প্রথম দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি হয়ে এসে তাইজুল ইসলাম যা বললেন তাতে সবার বিস্ময় আকাশ ছোঁয়ার কথা।

তাইজুলের মতে, ‘আমার মনে হয় রানটা কমই হয়েছে। বোলাররা ভাল বল করেছে। আমরা এখনো ঠিক জায়গায় আছি। উইকেটের অবস্থা যে করম, খারাপ হয়েছে বলব না।’ টানা দ্বিতীয় টেস্টে বিশেষজ্ঞ কোনো পেসার ছাড়াই খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ। উইকেট থেকে সর্বোচ্চ সুবিধায় আদায় করে নিতেই এই টেস্টে দর্শক সারিতে রাখা হয়েছে পেসারদের।

কিন্তু যে প্রত্যাশায় পেসবিহীন একাদশ বানানো হয়েছে সেটার প্রতিফলন কি ঘটেছে? তাইজুলের দাবি প্রত্যাশার বাইরে কিছু হয়নি। আজ দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি বলে গেলেন, ‘প্রত্যাশার বাইরে যায়নি। আসলে উইকেটটা মুখস্ত হয়ে গেছে। উইকেটে যদি দেখা যেত মাঝে মাঝে টার্ন, মাঝে মাঝে সোজা- এ রকম হলে উইকেটের সংখ্যাটা বেশি থাকত। কিন্তু উইকেটের যে অবস্থা বল একই রকম হচ্ছে। ওরাও (আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানরা) মুখস্ত মতোই খেলেছে।’

তাহলে আর বাংলাদেশ তৃপ্ত হতে পারল কই। দায়টা বোলারদের ওপর চাপাতে নারাজ তাইজুল। তবে মানছেন আরো ভালো করা যেতো, ‘প্রত্যাশা অনুযায়ী উইকেট যেমন বোলাররা তেমন বলই করেছে। হয়তো বা এর চেয়ে একটু ভাল করতে পারতো। উইকেটের ব্যবহার হিসেবে পাঁচ উইকেট ঠিক আছে। এরচেয়ে আরও ভাল করার সুযোগ ছিল।’

যেহেতু সেটা হয়নি তাই আগামীকাল দ্বিতীয় দিন অলৌকিক কিছুর আশায় আছেন তাইজুল। বলেছেন, ‘আমরা যদি ১০ রানে যদি ৫ উইকেট ফেলে দিতে পারি তাহলে তো আলহামুদিল্লাহ। ক্রিকেটে ‘মীরাক্কেল’ (মিরাকল) যে নেই তা কিন্তু নয়। কখনো হয়নি এমনটাও না। হতেই পারে, এটা তো অস্বাভাবিক না। নাঈম দুই বলে দুই উইকেট পায়নি আজ? ভালো দুই ব্যাটসম্যান, দুটোই আউট হয়ে গেছে দুই বলে (আসলে দুই বলে নয়)।’