আপনি পড়ছেন

প্রতিটি ধর্ম-বর্ণ জাতির জন্য আলাদা আলাদা উৎসব-সংস্কৃতি আছে। উৎসব-সংস্কৃতিই বলে দেয় একটি জাতি কতবেশি কর্মতৎপর। কতবেশি উৎফুল্ল। কত বেশি উন্নত। রাসুল (সা.) যখন মক্কা থেকে হিজরত করে মদিনায় আসলেন, তখন দেখলেন, ইহুদিদের মত মুসলমানরাও উৎসবে মেতে ওঠেছে। তখন রাসুল (সা.) মুসলমানদেরকে বললেন, তোমরা হলে শ্রেষ্ঠ নবীর শ্রেষ্ঠ উম্মত। তোমাদের উৎসবও অন্য সবার থেকে আলাদা হবে।

hijri

সেখানে নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় থাকবে। শুরু হল ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা নামের দুটি উৎসব।

এভাবে কেটে যায় অনেক বছর। দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.) এর সময়ে রাষ্ট্র পরিচালনার সুবিধার জন্য চালু করা হয় একটি স্বতন্ত্র সন পদ্ধতি। যতদিন বিশ্বের সিংহাসনে মুসলমানরা বসেছিলো, ততদিন ওই সন মতই চলেছে বিশ্বের সব মানুষ। যখন মুসলমানরা কোরআনহারা হয়ে গেলো, তাদের জীবন থেকে সব উৎসব-আনন্দ হারিয়ে গেলো, তখন আস্তে আস্তে সন পদ্ধতি এবং ইসলামি নির্দশনগুলোও পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে শুরু করল। আর আজ হিজরি সন বলে যে মুসলমানদের জন্য একটি স্বতন্ত্র সন আছে- এ কথাটিও জানে না অনেকে।

হায়! যে ধর্ম সংস্কৃতিকে এত গুরুত্ব দিয়েছে, যে নবী উৎসবকে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে দিয়েছেন, সে ধর্মের অন্যতম উৎসব হিজরি নববর্ষ এখন উদযাপন করে না তার অনুসারীরা। ইংরেজি নবর্বষ, বাংলা নববর্ষ যতটা ধুমধামের সঙ্গে উৎযাপন হয়, তার ছিটেফোঁটারও প্রকাশ ঘটে না হিজরি নববর্ষে। পত্রিকা কিংবা খবরের চ্যানেলে চোখ না রাখলে তো জানাও যায়না কবে হিজরি সন এলো আর কবে শেষ হলো।

হজরত ওমর (রা.) যখন একটি নতুন ইসলামি সনপদ্ধতি চালু করেছিলেন, তখন তিনি অনেক ভেবে চিন্তে নবীজির হিজরতের দিনটিকে বেছে নিয়েছিলেন। রাসুল (সা.) যে দিন মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেছেন, সেদিনটিকে ইসলামি সনের প্রথম দিন ধরা হয়। আমরা যদি একটু গভীরে যাই, তাহলে দেখব, সেদিন মদীনায় কেমন সাড়া পড়েছে। রাসুল (সা.) মদিনায় পা রাখামাত্রই মদিনাবাসী আনন্দে আত্মহারা হয়ে গান-উৎসবে মেতে ওঠেছিলো। রাসুল (সা.) তাদের এই উৎসবকে সমর্থন দিয়েছেন। সেই স্মৃতিকে স্মরণ করেই ওমর (রা.) হিজরি সন গণনা শুরু করেন।

হায়! বছর ঘুরে সেই আনন্দঘন দিন মুসমানের দুয়ারে ফিরে আসে, কিন্তু মুসলমান থাকে ঘুমিয়ে। অথচ এই মুসলমানই শত বাধা এবং আইনি নিষেধ লঙ্ঘন করে ইংরেজি নববর্ষ উৎযাপন করে। ধর্মের গন্ডি পেরিয়ে বাংলা নববর্ষ উৎযাপন করে। ইংরেজি কিংবা বাংলা নববর্ষ উৎযাপন দোষণীয় আমি তা বলছি না। আমি বলতে চাই, অন্যসব বর্ষ উৎযাপনে আমরা যেমন বাধভাঙা আনন্দের জোয়ারে ভেসে যাই, হিজরি নবর্বষে কেনো তার কানাকড়িও করছি না। এর জন্য অবশ্যই সাধারণ মানুষে দোষ নেই। দোষ আলেমদের। তারা কখনো মানুষকে হিজরি বর্ষ উদযাপনের কথা বলে না। বলা হয় না নবীজি (সা.) এর স্মৃতিবিজড়িত হিজরতের কথা স্মরণ করে এ দিনটিকে ধর্মের বৈধ সীমায় উদযাপনের সওয়াবের কথা। সাধারণ মানুষের কানে যেহেতু এ দিনটির কথা পৌঁছে না, তাই সাধারণ মানুষের ঘুমও ভাঙে না।

আফসোস! আমরা ইসলামকে সংকীর্ণ করতে করতে এতটাই সংর্কীণ করে ফেলেছি যে, এখন আর ইসলামি সংস্কৃতি বলতে মানুষের মনে বিশুদ্ধ কোনো সংস্কৃতির ছবি ফুটে ওঠে না। এখন আর ইসলামি বিনোদন বলতে মানুষের সামনে সুন্দর কোন চিত্র ভেসে ওঠে না। তাই বলতে চাই, আসুন! আবার আমরা ইসলামের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনি। সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতিসহ সব বিভাগেই ইসলামের আলোক মশাল কোরআনের বাতি জ্বেলে বিশ্ব মানুষকে শান্তির অমিয়-স্রোতে ভাসিয়ে নিই। আল্লাহপাক আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর তাওফিক দিন। 

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.