লেবুশানের ইতিহাসের পর লর্ডসে ড্র

লর্ডস টেস্ট যে ড্রয়ের দিকে যাচ্ছে সেটা আগে থেকেই আন্দাজ করা যাচ্ছিল। বৃষ্টিতে ভেসে গেছে ম্যাচের দুই দিন। বড় কোন নাটকীয়তা না ঘটলে তাই ড্র'ই অনুমিত ফল। হয়েছেও তাই, শেষ দিনে ২৬৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া ছয় উইকেটে ১৫৪ রান তুলতেই দিনের খেলা শেষ হয়ে যায়। ফলে নিষ্ফলা ড্র'ই মেনে নিতে হয়েছে দু'দলকে।

এই ড্রয়ে অ্যাশেজ সিরিজের দুই টেস্ট শেষে ১-০ ব্যবধানে এগিয়েই থাকল অস্ট্রেলিয়া। সিরিজের প্রথম টেস্টটি জিতেছিল অজিরা। এদিকে, লর্ডসে অনুমিত ড্রয়ের মধ্যে বাড়তি আলোচনা ছড়াচ্ছে মার্নাস লেবুশানের 'কনকাশন' হয়ে মাঠে নামা।

সিরিজের প্রথম টেস্টে দুই ইনিংসে দুই সেঞ্চুরি করে অস্ট্রেলিয়াকে জেতান স্মিথ। দ্বিতীয় টেস্টেও আলোচনা অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক। দলের বাকিদের অপ্রত্যাশিত ব্যাটিংয়ের মধ্যে প্রথম ইনিংসে বীরত্বগাঁথা রচনা করেছিলেন স্মিথ। ব্যক্তিগত ৮০ রানের মাথায় ইংলিশ পেসার জোফরা আর্চারের বাউন্সারে মাথায় আঘাত পেয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরেছিলেন। চিকিৎসা নিয়ে পরে ব্যাটিং করতে নামলেও আঘাতটা যে ছোট ছিল না সেটা বোঝা গেল দ্বিতীয় ইনিংসে তার ব্যাটিংয়ে না নামাতে। ইতিহাস হলো তাতেই।

আইসিসির নতুন নিয়মে ম্যাচ রেফারি পরিস্থিতি বিবেচনা করে মাথায় আঘাত পাওয়া খেলোয়াড়ের বদলি আবেদন মঞ্জুর করতে পারবেন। তবে আঘাতপ্রাপ্ত খেলোয়াড় যে ধরনের হবেন বদলি হিসেবেও বেছে নিতে হবে ঠিক সেই ধরনের ক্রিকেটারকেই। এই নিয়ম মতে স্মিথের বদলে ব্যাটসম্যান লেবুশানকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করায় অস্ট্রেলিয়া। ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে 'কনকাশন' বদলি হয়ে মাঠে নেমেই দারুণ এক ফিফটি করেছেন লেবুশান। ড্রয়ের হিসেব আরও সহজ হয়েছে তাতেই।

বেন স্টোকসের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে (১১৫*) টেস্টের শেষ দিনে ৫ উইকেটে ২৫৮ রান তুলে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে ইংল্যান্ড। দুই ইনিংস মিলিয়ে অজিদের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ২৬৬। আর্চার ঝড়ে ৪৭ রানে অস্ট্রেলিয়ার তিন ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে অবশ্য ম্যাচ জমিয়ে তুলেছিল ইংল্যান্ড। তবে লেবুশানের ওই ফিফটিতে জয়ের স্বপ্ন আর সত্যি হয়নি স্বাগতিকদের।

ঠিক ১০০ বল খেলে ৮টি চারের সাহায্যে ৫৯ রান করেন লেবুশান। এছাড়া ট্রাভিস হেড অপরাজিত থাকেন ৪২ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডের হয়ে তিনটি করে উইকেট পেয়েছেন জ্যাক লিচ। ম্যাচ সেরার পুরস্কার উঠেছে বেন স্টোকসের হাতে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস ২৫৮, দ্বিতীয় ইনিংস (৭১ ওভারে ২৫৮/৫ ডি. স্টোকস ১১৫*, বাটলার ৩১, বেয়ারস্টো ৩০*; কামিন্স ৩/৩৫, হেইজেলউড ০/৪৩, সিডল ২/৫৪, লায়ন ০/১০২)।

অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস ২৫০, দ্বিতীয় ইনিংস দ্বিতীয় ইনিংস (৪৭.৩ ওভারে ১৫৪/৬, ওয়ার্নার ৫, ব্যানক্রফট ১৬, খাওয়াজা ২, লেবুশান ৫৯, হেড ৪২*, ওয়েড ১, পেইন ৪, কামিন্স ১*; ব্রড ০/২৯, আর্চার ৩/৩২, ওকস ০/১১, লিচ ৩/৩৭, স্টোকস ০/১৬, রুট ০/৭, ডেনলি ০/০)।

ফল: ম্যাচ ড্র

সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজের দুটি শেষে অস্ট্রেলিয়া ১-০তে এগিয়ে।

ম্যান অব দা ম্যাচ: বেন স্টোকস।