পাকিস্তানকে জেতাতে ফিক্সিং করেছেন আফগান অধিনায়ক?

প্রতিটি ম্যাচ হেরে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে আফগানিস্তান। অন্যদিকে সেমিফাইনালের দৌড়ে লড়াই করছে পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং ইংল্যান্ড। সেমিফাইনালে যেতে হলে তিনটি দলকেই প্রত্যেক ম্যাচে জিততে হবে। ফলে সেমির দৌড়ে টিকে থাকতে গতকাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে পাকিস্তানকে জিততেই হতো।

খেলায় জিতেছেও পাকিস্তান। কিন্তু জয়টাকে আফগানিস্তান যেভাবে হাতের মুঠো থেকে ছেড়েছে তাতেই ফিক্সিংয়ের গন্ধ পাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।

গতকাল খেলায় বারবার রঙ বদলে গেছে। জয়ের পাল্লা কখনো আফগানিস্তানের দিকে আবার কখনো পাকিস্তানের দিকে হেলে ছিলো। তবে পাকিস্তানের ১৫৬ রানে ৬ উইকেট যাওয়ার পর আফগানিস্তানের জয়টা ছিল নিশ্চিত। কিন্তু আফগান অধিনায়ক গুলবাদিনের ৪৬তম ওভারে নাটকীয়ভাবে ১৮ রান দেয়া, শেষ ওভারে সহজ রান আউট মিস জন্ম দিয়েছে অনেক প্রশ্নের। বিশ্বজুড়ে ক্রিকেটপ্রেমীরা ফিক্সিং বা পাতানো ম্যাচের অভিযোগ তুলেছেন। বিশ্ব মিডিয়াও সেটা গুরুত্ব সহকারে প্রচার করছে।

ফিক্সিংয়ের অভিযোগের তীর আফগান অধিনায়ক গুলবাদিন নাইবের বিরুদ্ধে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে গুলবাদিন নাইবের কঠোর সমালোচনা করে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় তদন্ত করে আইসিসিকে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি আজগর আফগান, মোহাম্মদ নবীকে রেখে নাইবের অধিনায়কত্ব নিয়েও উঠেছে নানা প্রশ্ন।

ফক্স স্পোর্টস বলছে, 'আফগান অধিনায়ক গুলবাদিন নাইব ৪৬তম ওভারে পাকিস্তানকে ম্যাচটি উপহার দিয়ে এসেছেন।' তাদের প্রতিবেদনে টুইটার ও ফেসবুকে ফিক্সিংয়ের অভিযোগ তোলা ক্রিকেটপ্রেমীদের বিভিন্ন পোস্ট তুলে ধরা হয়। বিখ্যাত দ্য টেলিগ্রাফও ফিক্সিংয়ের বিষয়টি তুলে ধরেছে। পাকিস্তানের এমন জয়কে তারা নাটকীয় জয় বলছে।

বলা হচ্ছে, শেষ ৫ ওভারে পাকিস্তানের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৪৬ রান। যেহেতু ক্রিজে কোন স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান ছিল না তাই বলা যায় ম্যাচটা আফগানিস্তানের হাতের মুঠোতেই। এদিকে আবার রশিদ খান আর মুজিবের রয়েছে তিন ওভার। ঠিক তখমই বল করতে আসেন অধিনায়ক গুলবাদিন নাইব। বল হাতে নিয়েই সেই ওভারে ১৮ রান দেন আফগান অধিনায়ক। মূলত সেই ওভারেই হেরে যায় আফগানিস্তান। পরে শেষ ওভারে ৬ বলে যখন ৬ রান প্রয়োজন তখনো বাজেভাবে হুমড়ি খেয়ে ম্যাচটা হাতছাড়া করেছে গুলবাদিন।

পাকিস্তানের বিপক্ষে মুজিবুর রহমান ১০ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট, মোহাম্মাদ নবী ১০ ওভারে ২৩ রানে দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট, রশিদ খান ১০ ওভারে ৫০ রানে ১ উইকেট পেয়েছেন এবং সামিউল্লাহ শেনওয়ারি ৮ ওভারে দেন মাত্র ৩২ রান। সেখানে অধিনায়ক গুলবাদিন নাইব ৯.৩ ওভারে দিয়েছেন ৭৩ রান।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য প্রিন্ট’-এর প্রধান সম্পাদক শেখর গুপ্ত টুইটারে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, 'আফগানিস্তানের অধিনায়ক নিয়ে ভাবতে হবে। দলকে চাইলে জেতাতে পারতেন। কিন্তু তিনি সেটা না করে স্বার্থপরতা করেছেন। এমন অধিনায়ক দেখিনি। সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক মাইকেল ভনও টুইটারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ শুরু থেকেই ফিক্সিং রোধে নানা পদক্ষেপ নেয় আইসিসি। বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া প্রত্যেক দলের সঙ্গে জুড়ে দেয় দুর্নীতি দমন কর্মকর্তা। সবকিছু ঠিকই ছিল তবে শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তান-পাকিস্তান ম্যাচে আফগান অধিনায়ক গুলবাদিনের বিরুদ্ধে ফিক্সিংয়ের অভিযোগ চলে আসলো।