পাকিস্তানের নাটকীয় জয়, চাপ বাড়ল বাংলাদেশের

লক্ষ্যটা ২২৮ রানের। আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে গিয়ে চোখ আর নাকের জল এক হয়ে গেছে পাকিস্তানের। আজ হেডিংলিতে শেষ পর্যন্ত নাটকীয় জয় তুলে নিয়েছে পাকবাহিনী। ম্যাচের দুই বল বাকি থাকতে তিন উইকেটের থ্রিলার জয় পেয়েছে সাবেক চ্যাম্পিয়নরা (২৩০/৭)।

এই জয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের আশা বেঁচে থাকল পাকিস্তানের। আট ম্যাচে নয় পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডকে টপকে টেবিলের চার নম্বরে উঠে এসেছে সরফরাজ আহমেদের দল। তাদের জায়গা দিতে গিয়ে বাংলাদেশ ছয় ও ইংল্যান্ড পাঁচে নেমে গেছে।

আজ টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নয় উইকেটে ২২৭ রানের লড়াকু পুঁজি সংগ্রহ করেছে আফগানিস্তান। জবাব দিতে নেমে সাত উইকেট হারিয়ে স্নায়ুক্ষয়ী জয় পেয়েছে পাকিস্তান। বিশ্বকাপের চলতি আসরে এনিয়ে আট ম্যাচের সবকটিতে হারল আফগানরা। রশিদ-নবিরা হারায় চাপে পড়ল বাংলাদেশও। সেমিফাইনালে ওঠাটা টাইগাদের জন্য আরো কঠিন হয়ে উঠল।

শেষ তিন ওভারে ১৮ রানের সমীকরণ ছিল পাকিস্তানের সামনে। ৪৮তম ওভারে এসে মাত্র দুই রান দেন মুজিবুর রহমান। ১২ বলে ১৬ রানের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয় পাকিস্তান। সেখান থেকে দুর্দান্তভাবে দলকে জিতিয়ে দেন ইমাদ ওয়াসিম ও ওয়াহাব রিয়াজ। নয় বলে ১৫ রানে অজেয় ছিলেন ওয়াহাব। ৫৪ বলে ৪৯ রানে অজেয় ছিলেন ওয়াসিম।

লক্ষ্যতাড়ায় শুরুতেই ধাক্কায় খায় পাকিস্তান। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে ফখর জামানের উইকেট হারায় তারা। পরে ইমাম উল হক ও বাবর আজম ধাক্কাটা সামলে নেন। দুজন মিলে গড়ে তোলেন ৭২ রানের জুটি। ৩৬ রানে ইমাম বিদায় নিলে ভাঙে জুটি। একটু পর ৪৫ রানে আউট হয়ে যান বাবরও।

এরপর উইকেট আগলে রাখতে গিয়ে আস্কিং রেটের চাপে পড়ে পাকিস্তান। মিডল অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ হাফিজ (১৯), হ্যারিস সোহেল (২৭) ও সরফরাজ আহমেদ (১৮) উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। বরং দলকে আরো চাপের মুখে ফেলে সাজঘরে ফিরে গেছেন এই ত্রয়ী। আফগানিস্তানের পক্ষে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন দুই স্পিনার মুজিব উর রহমান ও মোহাম্মদ নবি।

এর আগে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি আফগানিস্তানও। উদ্বোধনী জুটিতে ২৭ রান যোগ করে তারা। পঞ্চম ওভারে পরপর দুই বলে জোড়া ধাক্কা খায় আফগানরা। দলীয় ৫৭ রানে তৃতীয় উইকেটের পতন হয় তাদের। ব্যক্তিগত ৩৫ রানে সাজঘরে ফিরে গেছেন ওপেনার রহমত শাহ। অধিনায়ক গুলবাদিন নাইব আউট হয়েছেন ১৫ রানে।

চতুর্থ উইকেট জুটিতে ধাক্কাটা সামলে উঠে আফগানিস্তান। ইকরাম আলি খিল ও আজগর আফগান মিলে যোগ করেন ৬৪ রান। এই জুটি ভাঙতেই ফের চাপে পড়ে আফগানরা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট খোয়াতে থাকে তারা। শেষ দিকে নাজিবুল্লাহ জাদরান ও সলিমুল্লাহ শেনওয়ারির ব্যাটিং দৃঢ়তায় কোনোরকম লড়াইয়ের পুঁজি সংগ্রহ করে তারা।

ব্যক্তিগত ২৪ রানে আউট হয়েছেন ইকরাম। ৩৫ বলে ৪২ রানের ঝড় তুলে বিদায় নেন আজগর। ৫৪ বলে ৪২ রান করেছেন জাদ্রান। এ ছাড়া ১৬ রানে আউট হয়েছেন মোহাম্মদ নবি। সেনওয়ারি ১৯ রানে অপরাজিত ছিলেন। আফগানদের অল্পতে আটকে রাখতে মূল অবদান রেখেছেন শাহিন আফ্রিদি।

৪৭ রানে চার উইকেট তুলে নিয়ে আফগানদের ধসিয়ে দিয়েছেন এই তরুণ পেসার। দুটি করে শিকার ইমাদ ওয়াসিম ও ওয়াহাব রিয়াজের। অন্য উইকেটের মালিক শাদাব খান।