কিউইদের দর্পচূর্ণ: টিকে থাকল পাকিস্তান

চলমান বিশ্বকাপে ফেভারিটের তালিকায় নেই নিউজিল্যান্ড। তবু আসরে দুর্দান্ত পারফর্ম করে আসছে তারা। যে দুটি দল ৩২তম ম্যাচ পর্যন্ত অপরাজিত ছিল তার একটি ব্ল্যাক ক্যাপসরা। এই দলটাকে ছয় উইকেটে হারিয়ে সেমিফাইনালের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখল পাকিস্তান। বিশ্বকাপের চলতি আসরে সরফরাজ বাহিনীর এটা তৃতীয় জয়।

বুধবার বার্মিংহামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয় নিউজিল্যান্ড। জিমি নিশাম ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের ব্যাটে বিপদ সামলে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ওভারে ছয় উইকেটে ২৩৭ রানের লড়াকু পুঁজি গড়ে কিউইরা। জবাব দিতে নেমে ইনিংসের পাঁচ বল বাকি থাকতেই দারুণ জয় তুলে নেয় পাকিস্তান (২৪১/৪)।

এই জয়ে সেমিফাইনালের সম্ভাবনা বেঁচে থাকল সরফরাজ-আমির-হাফিজদের। সাত ম্যাচে সাত পয়েন্ট নিয়ে বিশ্বকাপ টেবিলের ছয়ে উঠে এসেছে পাকিস্তান। তাদের সমান পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে এগিয়ে পাঁচে আছে বাংলাদেশ। টাইগারদের ওপরে আছে যথাক্রমে ইংল্যান্ড, ভারত, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া।

পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪৬ রানেই চার উইকেট হারিয়ে ফেলে নিউজিল্যান্ড। ৮৩ রানে পঞ্চম উইকেটের পতন কিউইদের। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন নিশাম, ডি গ্র্যান্ডহোম ও কেন উইলিয়ামসন। শেষের জন ৪১ রান করে প্রাথমিক বিপর্যয় সামলাবার চেষ্টা করেন। ৭১ বলে ৬৪ রানে আউট হয়েছেন ডি গ্র্যান্ডহোম।

তবে অল্পের জন্য ক্যারিয়ারের প্রথম শতক হাতছাড়া হয়ে গেছে নিশামের। ১১২ বলে পাঁচটি চার ও তিন ছক্কায় ক্যারিয়ার সেরা ৯৭ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। দশ ওভারে তিন মেডেনসহ ২৮ রানে তিন উইকেট তুলে নিয়ে নিউজিল্যান্ডের টপ অর্ডার ধসিয়ে দিয়েছেন তরুণ পেসার শাহিন আফ্রিদি। একটি করে শিকার শাদাব খান ও মোহাম্মদ আমিরের।

২৩৮ রানের লক্ষ্যমাত্রায় ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় পাকিস্তান। ৪৪ রানের মধ্যে পাক দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে ম্যাচ জমিয়ে দেন নিউজিল্যান্ডের দুই পেসার লোকি ফার্গুসন ও ট্রেন্ট বোল্ট। কিন্তু আশা জাগিয়েও লড়াই করতে পারেনি কিউইরা। পাকিস্তানের জয়টাকেই শুধু বিলম্বিত করতে পেরেছেন তারা। শুরুর জোড়া ধাক্কা সামলে পাকিস্তানকে পথ দেখান মোহাম্মদ হাফিজ, হ্যারিস সোহেল ও বাবর আজম।

১১০ রানে দলের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফিরে যান হাফিজ। ফেরার আগে ৫০ বলে পাঁচটি চারে ৩২ রান করেছেন পাক অলরাউন্ডার। পরে হ্যারিস সোহেলকে নিয়ে দলের সহজ জয়ের দিকে এগোতে থাকেন বাবর। চতুর্থ উইকেটে দুজন মিলে গড়েন ১২৬ রানের ম্যাচ নির্ধারক জুটি। দলকে জয়ের খুব কাছে পৌঁছে দিয়ে সাজঘরে ফিরে আসেন সোহেল।

৭৬টি বলে পাঁচটি চার ও দুই ছক্কায় ৬৮ রান করেন সোহেল। দুর্ভাগ্যবশৎ রানআউটে কাঁটা পড়েন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলেন তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামা বাবর। তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দশম শতক। ১২৬ বলে ১১টি চারের সুবাদে ১০১ রানের অজেয় ইনিংস খেলার পথে বাবর পাড়ি দিয়েছেন ওয়ানডে ক্রিকেটে তিন হাজার রানের মাইলফলক।