উঠে আসছে এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বী

ইস্তানবুলের মেয়র নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছিলেন, 'ইস্তানবুল যে জিতবে, তুরস্কও সে জিতবে।' এরদোয়ানের সেই কথাই যেনো এখন ফলতে বসেছে। দুই দশক ধরে দোর্দণ্ড প্রতাপে দেশ শাসন করে আসা এরদোয়ান এখন অখ্যাত ইক্রেম ইমামোগলুর কাছে অনেকটাই অসহায়।

সদ্যই শেষ হওয়া ইস্তানবুলের মেয়র নির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে জয় পেয়েছেন মধ্যম পর্যায়ের জেলা বেলিকডুযুর মেয়র ইক্রেম ইমামোগলু। নির্বাচনে তিনি এরদোয়ানের দল একে পার্টির প্রার্থী তুরস্কের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিমকে হারিয়েছেন।

ইমামোগলুর এই বিজয় আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছে এরদোয়ান বিরোধীদের। ধর্মনিরপেক্ষ রিপাবলিকান পিপলস পার্টি বা সিএইচপির সদস্য এই ইক্রেম ইমামোগলুকেই ২০২৩ সালে দেশটিতে অনুষ্ঠিতব্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখতে চাচ্ছেন অনেকে।

আর যদি সত্যিই তা হয় তাহলে নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে, কঠিন এক সমস্যার মুখোমুখী হতে যাচ্ছেন এখন পর্যন্ত তুরস্কের ‘অপ্রতিদ্বন্দ্বী’ প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান।

কারণ যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অবরোধে পড়ে তুরস্ক এখন কঠিন এক সময় পার করছে। স্টিলসহ বিভিন্ন তুর্কি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আরোপ করায় তুর্কি মুদ্রা লিরার দাম পড়ে গেছে ৪০ শতাংশের মতো। দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতির পরিমাণ এখন আকাশচুম্বী। জাতীয় নির্বাচনে ভঙ্গুর এই অর্থনীতির প্রভাব আগামী নির্বাচনে পড়বে বলে বিশ্বাস করেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

ইক্রেম ইমামোগলুর জয়ের আগে দীর্ঘ ২৫ বছর গুরুত্বপূর্ণ এই শহরটির নিয়ন্ত্রণ ছিলো একে পার্টির হাতে। বর্তমান শাসক এরদোয়ান এই শহরেরই সাবেক মেয়র। সেই অবস্থান থেকেই উঠে এসে এখন দেশটির সরকার চালাচ্ছেন তিনি।

এই সূত্র ধরে ইক্রেম ইমামোগলুর ভবিষ্যতও এঁকে ফেলছেন অনেকে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এরই মধ্যে ইমামোগলুর কাছে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলো। জিজ্ঞাসা করেছিলো, নিজেকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চান কি না।

বুদ্ধিমান ইক্রেম ইমামোগলু এক গাল হেসে 'আল্লাহ জানেন' বলে উত্তর দেয়ার দায়িত্ব শেষ করেছেন।