ক্যারিবীয়দের নাটকীয় হার

ম্যানচেস্টারে ইনিংসের শুরুতেই জোড়া ধাক্কা। প্রথম ওভারেই শূন্য রানে বিদায় নিলেন দুই ওপেনার কলিন মুনরো ও মার্টিন গাপটিল। শুরুর এমন বিপর্যয় নিউজিল্যান্ড সামলে নিয়েছে কেন উইলিয়ামসনের ব্যাটিং দৃঢ়তায়। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন অভিজ্ঞ সেনানী রস টেলর।

উইলিয়ামসনের সেঞ্চুরি ও টেলরের হাফসেঞ্চুরির ওপর দাঁড়িয়ে আট উইকেটে ২৯১ রানের শক্তিশালী সংগ্রহ তোলে নিউজিল্যান্ড। জবাব দিতে নেমে ক্রিস গেইল ঝড় ও শিমরন হেটমায়ারের অর্ধশতকের পরও পাঁচ রানে হেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইনিংসের এক ওভার বাকি থাকতেই ২৮৫ রানে গুটিয়ে গেছে ক্যারিবীয়রা।  ৪১ রানের জুটি ভাঙতেই উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে নিউজিল্যান্ড।

শনিবার জয়ের আশা জাগিয়েছিল শেষ তথা দশম উইকেট জুটি। এই জুটিতে চালকের ভূমিকায় থাকলেন কার্লোস ব্র্যাথওয়েট। শেষ পর্যন্ত লড়ে গেছেন তিনি। জয়ের খুব কাছে চলে এসেছিল ক্যারিবীয়রাও। ব্র্যাথওয়েট তুলে নিয়েছেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। আশা জাগিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি তিনি। স্বাভাবিকভাবেই হতাশায় ভেঙে পড়েন ব্র্যাথওয়েট। উইকেটে তাকে নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়দের সান্ত্বনা দেওয়ার দৃশ্যটা এই বিশ্বকাপের প্রতীকী ছবি হয়ে থাকল।

বিশ্বকাপে ছয় ম্যাচে এটা ওয়েস্ট ইন্ডিজের তাদের চতুর্থ হার। এই হারে খাদের শেষ কিনারায় গিয়ে ঠেকলো। অন্যদিকে ছয় ম্যাচের পাঁচটিতে জিতে সবার আগে সেমিফাইনাল প্রায় নিশ্চিত করে ফেললো শীর্ষে থাকা নিউজিল্যান্ড। কিউদের পয়েন্ট ১১। তাদের পেছনে থাকা অস্ট্রেলিয়ার পয়েন্ট দশ।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুর ধাক্কা সামনে উইলিয়ামসন তুলে নিয়েছেন বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। টেলর পান হাফসেঞ্চুরি। দুজন মিলে তৃতীয় উইকেট জুটিতে করেন ১৬০ রান। জুটি ভাঙে টেলর ৬৯ রানে বিদায় নিলে। একপ্রান্ত আগলে রেখে উইলিয়ামসন স্পর্শ করেন তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার।

আউট হওয়ার আগে কিউই দলপতি করেছন ১৪৮ রান। ১৫৪ বলের ইনিংসে ১৪টি চার ও একটি ছক্কা মেরেছেন তিনি। এ ছাড়া জিমি নিশাম ২৮ রান করেছেন। নিউজিল্যান্ডের পতন হওয়া আট উইকেটের চারটি তুলে নেন শেলডন কটরেল। দুটি শিকার কার্লোস ব্রাথওয়েট।

শুধু বল হাতে নয়, এদিন ব্যাট হাতে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করেছেন ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার। বিশ্বকাপের মঞ্চে তুলে নিয়েছেন স্বপ্নের সেঞ্চুরি। ৮২ বলে ১০১ রানের বিধ্বংসী সেঞ্চুরি করেছেন ব্র্যাথওয়েট। ১০১ রানের ইনিংসে নয়টি চারের পাশাপাশি পাঁচটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ গেইলের। ৮৪ বলে ৮৭ রানে আউট হয়েছেন ক্যারিবীয় ওপেনার। ৪৫ বলে ৫৪ রান এসেছে শিমরন হেটমায়ারের ব্যাট থেকে। এই জুুটির আগে ও পরে ধস নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিং অর্ডারে। ২০ রানে দুই উইকেট হারানোর পর গেইল-হেটমায়ার দলের হাল ধরেন।

তৃতীয় উইকেটে ১৩২ রানের জুটি ভাঙতেই ধসে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট খোয়ানো ক্যারিবীয়দের হার নিশ্চিত হয়ে উঠেছিল। ১৬৪ রানে সাত উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। পরের তিনটি জুটিই আশার প্রদীপ জ্বলেছিল। তন্মধ্যে সবচেয়ে রোমাঞ্চকর হয়ে উঠেছিল দশম উইকেট জুটি।

কিন্তু অবিশ্বাস্য কিছু হয়নি শেষ পর্যন্ত। ৪৯তম ওভারের শেষ বলে নিশামের শিকারে পরিণত হন ব্রাথওয়েট। ক্যারিবীয়দের পতন হওয়া উইকেটের চারটি নিয়েছেন ট্রেন্ট বোল্ড। এই পেসারই ওয়েস্ট ইন্ডিজের টপ ও মিডল অর্ডারে ধস নামিয়েছেন। লোকি ফার্গুসনের শিকার তিনটি।