লড়াই করে হারল বাংলাদেশ

এবারের বিশ্বকাপে রান তাড়া করে জেতা সবচেয়ে কঠিন হয়ে উঠেছে। সেখানে বাংলাদেশের কাঁধে ৩৮১ রানের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। হিমালয়তুল্য রান দেখেও ভড়কে যায়নি টাইগাররা। লড়াই করেছে ম্যাচের শেষ পর্যন্ত। বাংলাদেশ দল হেরেছে ৪৮ রানে। এই হারের মাঝেও প্রাপ্তি হয়ে থাকল মুশফিকুর রহিমের হার না মানা সেঞ্চুরি ও ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের সর্বোচ্চ সংগ্রহটা।

আজ ট্রেন্ট ব্রিজে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ডেভিড ওয়ার্নারের সেঞ্চুরি ও উসমান খাজার ব্যাটিং দৃঢ়তায় পাঁচ উইকেটে রানের পাহাড় গড়ে অস্ট্রেলিয়া। জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ওভারে আট উইকেটে ৩৩৩ রান তুলতে সক্ষম হয় মাশরাফি বিন মর্তুজার দল।

অস্ট্রেলিয়া যে বড় সংগ্রহ করতে যাচ্ছে সেটা বোঝা গেছে ইনিংসের শুরু থেকেই। ট্রেন্ট বিজের ব্যাটিং স্বর্গে উদ্বোধনী জুটিতে ১২১ রান করেন দুই ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ ও ওয়ার্নার। ৫৩ রানে ফিঞ্চ ফিরলে স্বস্তি আসে বাংলাদেশ দলে। জুটি ভাঙেন পার্ট টাইম বোলার সৌম্য সরকার।

অধিনায়ক চলে গেলেও এক প্রান্ত আগলে রেখে রানের চাকা সচল রেখেছেন ওয়ার্নার। তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের ১৬তম সেঞ্চুরি। এই সেঞ্চুরি গড়ার পথে তাকে যোগ্য সঙ্গটাই দিয়েছেন উসমান খাজা। দ্বিতীয়জনও সেঞ্চুরির আভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে শতকবঞ্চিত করেছেন সৌম্য সরকার।

৭২ বলে ১০টি চারে ৮৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে আউট হয়েছেন উসমান। শেষ দিকে ১০ বলে ৩২ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। যা অস্ট্রেলিয়ার দলীয় সংগ্রহ সাড়ে তিন'শ ছাড়িয়ে নিয়ে গেছে। ওয়ার্নার আউট হয়েছেন ১৬৬ রানে। ১৪৭ বলের ইনিংসে ১৪টি চার ও পাঁচটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন ওয়ার্নার। ৩১৩ রানে দলের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হয়েছিলেন তিনি।

বাংলাদেশের বোলারদের বেধড়ক পিটিয়ে পৌনে চার শ ছাঁড়িয়েছে অস্ট্রেলিয়া। স্বাভাবিকভাবেই এই রান টপকানো কঠিন থেকে কঠিনতর। তবে মনোবল হারায়নি টাইগাররা। শুরু থেকেই লড়াই চালিয়ে গেছে বাংলাদেশ। যদিও হিমালয় জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সৌম্য সরকারের দুর্ভাগ্যবশত রান আউটে শুরুতেই হোঁচট খায় টাইগার বাহিনী।

এরপর সাকিব আল হাসানকে নিয়ে এগোতে থাকেন তামিম ইকবাল। দুজনের ব্যাটিং দৃঢ়তায় দলীয় সংগ্রহ সেঞ্চুরি ছাড়িয়েছেন। ফর্মের তুঙ্গে থাকা সাকিব আউট হয়ে যান ৪১ বলে ৪১ রান করে। তাতে ব্যাকফুটে চলে যায় টাইগাররা। একটু পরে সাজঘরে ফেরেন তামিমও। ৬৪ বলে ৭২ রানে ফিরেছেন তিনি। খানেক বাদে ২০ রানে আউট হয়ে যান লিটন দাস।

পরে পঞ্চম উইকেট জুটিতে দলকে স্বপ্ন দেখাতে থাকেন মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। দ্বিতীয় জনের আউটেই বাংলাদেশের জন্য লক্ষ্যমাত্রা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। ফেরার আগে ৫০ বলে ৬৯ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেছেন মাহমুদুল্লাহ। ইনিংসে পাঁচটি চার ও তিনটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশের হারটা নিশ্চিত হয়ে গেছে তাতেই। এই ম্যাচের প্রাপ্তির অপেক্ষায় ছিল টাইগাররা। সেটা শেষ ওভারে হয়ে গেছে। বিশ্বকাপের মঞ্চে স্বপ্নের সেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিক। ৯৭ বলে ১০২ রানে অজেয় ছিলেন টাইগার ব্যাটসম্যান। নয়টি চার ও একটি ছক্কায় রাজসিক ইনিংসটা সাজিয়েছেন মুশি। কিন্তু বৃথাই গেছে তার শতকটা। তবে বাংলাদেশের এমন সাহসিক রান তাড়া করে তিন শ ছাড়ানোটা অনেক বড় একটা অর্জনই বলা চলে।