পাকিস্তানের স্বপ্নময় প্রত্যাবর্তন

শুরুটা হয়েছিল দুঃস্বপ্নের মতো। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে মাত্র ১০৫ রানে গুটিয়ে গিয়ে উন্ডিজের বিপক্ষে সাত উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছিল পাকিস্তান। বিশ্বকাপের শুরুতে ওভাবে হেরেছিল বলে নয়, ওয়ানডে ফরম্যাটে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সময়টা যাচ্ছিল একেবারেই বাজে।

উইন্ডিজের বিপক্ষে হারার আগে টানা ১১ ওয়ানডে হেরেছে সরফরাজ আহমেদের দল। সেই দলটাই আজ তাক লাগানো পারফরম্যান্স করে দেখাল। চলতি বিশ্বকাপের নিজেদের দুই নম্বর ম্যাচ খেলতে নেমে দুর্দান্ত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৪ রানে অসাধারণ এক জয় তুলে নিল পাকিস্তান। ‘আনপ্রেডিকটেবল’ কী আর সাধে বলা হয়! এই ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই বিশ্বকাপের আগে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে পাত্তাই পায়নি পাকিস্তান।

নটিংহ্যামে পাকিস্তানের শুরুটাই হয়েছিল দুর্দান্ত। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে আগের ম্যাচের দুঃস্মৃতি ভুলিয়ে দিতে চেয়েছেন সরফরাজরা। দুই ওপেনার প্রথম উইকেটে ৮২ রান তুলে দারুণ সূচনা এনে দিয়েছিলেন। পরে মোহাম্মদ হাফিজ, বাবর আজম, সরফরাজ আহমেদরা দারুণ ভিত্তির সুবিধা কাজে লাগিয়ে পাকিস্তানকে ৩৪৮ রানের বিশাল সংগ্রহ এনে দেন। হাফিজ ৬২ বলে করেছেন সর্বোচ্চ ৮৪ রান। ফিফটি পেয়েছেন বাবর আজম (৬৩), সরফরাজ আহমেদও (৫৫)।

পরে বোলিংয়ের সূচনাটাও ভালো হয়েছে পাকিস্তানের। স্পিনার শাদাব খানকে দিয়ে বোলিং ইনিংসের উদ্বোধন করান পাকিস্তান অধিনায়ক। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই জেসন রয়কে ফিরিয়ে অধিনায়কের ব্রেক থ্রুর প্রত্যাশা পূরণ করেছেন শাদাব। শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে ইংল্যান্ড অবশ্য দারুণভাবে এগুচ্ছিল। জো রুট কার্যকারী এক সেঞ্চুরি করেছেন। মাঝের ওভারগুলোতে পাকিস্তানিদের কচুকাটা করেছেন জস বাটলার।

বাটলার মাত্র ৭৬ কলে ১০৩ রান করেছেন। জো রুট করেন ১০৪ বলে ১০৭। এই দুই সেঞ্চুরিয়ান উইকেটে যখন ছিলেন ম্যাচের পাল্লা ইংল্যান্ডের দিকেই হেলে ছিল। কিন্তু শেষ দিকে পাকিস্তানের দুই অভিজ্ঞ পেসার মোহাম্মদ আমির ও ওয়াহাব রিয়াজের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ম্যাচটার সুন্দর ফিনিংশ দিতে পারেনি ইংল্যান্ড।

রুট, বাটলার অল্প সময়ের ব্যবধানে ফিরে গেলে সাথে সাথেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন আমির, ওয়াহাব। শেষ মুহূর্তে ক্রিস ওকস (১৪ বলে ২১) চেষ্টা করলেও আমির-ওয়াহাবের পরিকল্পনার কাছে হেরে গেছেন। নির্ধারিত ৫০ ওভারে নয় উইকেট হারিয়ে ৩৩৪ রানে থেমে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস।

ওয়াহাব দশ ওভারে ৮২ রান দিলেও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তিনটি উইকেট তুলে নিয়েছেন। আমির ৬৭ ও শাদাব খান ৬৩ রানে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। একটি করে উইকেট পেয়েছেন শোয়েব মালিক ও মোহাম্মদ হাফিজ। ব্যাটিংয়ে দুর্দান্ত করা হাফিজের হাতেই উঠেছে ম্যাচ সেরার পুরস্কার।