বিশ্বকাপের ১১ ভেন্যুর ইতিহাস

অপেক্ষার শেষ দিনটিও ফুরিয়ে গেছে। শুরু হয়ে গেলো দেড় মাসব্যাপী আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ। যুক্তরাজ্যের ১১টি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে ৪৮ ম্যাচের এই টুর্নামেন্ট। একনজরে দেখে নেওয়া যাক এসব ভেন্যু।

১. রোজবোল (সাদামটন): তুলনামূলকভাবে মাঠটি একেবারে নতুন। ২০০১ সালে নির্মান করা হয় স্টেডিয়ামটি। নতুন হলেও এই ভেন্যু ক্রিকেটের তিন ফরমেটের ম্যাচই নিয়মিত আয়োজন করে আসছে। এবার বিশ্বকাপে অভিষেক হবে ভেন্যুটির। আসরে পাঁচটি ম্যাচ পেয়েছে মাঠটি। আগামী ২৪ জুন আফগানিস্তানের পরীক্ষা নেবে বাংলাদেশ। ভেন্যুটির আসন সংখ্যা ১৭,০০০।

২. টনটাউন (সমারসেট): ভেন্যুটি বেশ প্রাচীন। সমারসেট কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের হোম গ্রাউন্ড প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৮২ সালে। যদিও এখানো টেস্ট ভেন্যুর মর্যাদা পায়নি মাঠটি। প্রতিষ্ঠাকালের এক শ বছর পর ওয়ানডে ম্যাচ আয়োজন করে ভেন্যুটি। এবারের বিশ্বকাপে তিনটি ম্যাচ হবে এখানে। তন্মধ্যে আছে ১৭ জুন বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যাচ। বিশ্বকাপের ১১ ভেন্যুর মধ্যে এই মাঠই দর্শক সক্ষমতা সবচেয়ে কম; মাত্র ৮০০০।

৩. ব্রিস্টল ক্রিকেট গ্রাউন্ড (ব্রিস্টল): ১৮৮৯ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় ব্রিস্টল ক্রিকেট গ্রাউন্ডের। এখানে এখনো হয়নি টেস্ট ম্যাচ। ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয় ১৯৮৩ সালে। আয়তনের দিক থেকে ভেন্যুটি অনেক বড় থাকা স্বত্বেও এর আসন সংখ্যা সীমিত; মাত্র ১১০০০। বিশ্বকাপের তিনটি ম্যাচ হবে এই ভেন্যুতে। আগামী ১১ই জুন এখানে শ্রীলঙ্কাকে মোকাবেলা করবে বাংলাদেশ।

৪. সোফিয়া গার্ডেন্স, (কার্ডিফ, ওয়েলস): ১৯৬৭ তৈরি করা হয় ভেন্যুটি। যদিও প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯৯ সালে। এবারের বিশ্বকাপে চারটি ম্যাচ পেয়েছে ভেন্যুটি। আগামী ৮ জুন কার্ডিফের এই মাঠে ইংল্যান্ডের সঙ্গে খেলবে বাংলাদেশ। ভেন্যুটির আসন সংখ্যা ১৫,২০০।

৫. এজবাস্টন ক্রিকেট গ্রাউন্ড (বার্মিংহাম): যুক্তরাজ্যের চতুর্থ বৃহত্তম ক্রিকেট ভেন্যু এটা। যা নির্মিত হয় ১৮৮৬ সালে। এখানেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৩ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনাল। সেবারই প্রথম লর্ডসের বাইরে ফাইনাল হয়েছিল অন্য কোনো ভেন্যুতে। এবারের বিশ্বকাপে সেমিফাইনালসহ পাঁচটি ম্যাচ হবে এজবাস্টনে। আগামী ২ জুলাই ভারতের বিপক্ষে একটি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ভেন্যুটির আসন সংখ্যা ২৫ হাজার।

৬. রিভারসাইড, চেস্টার লে স্ট্রিট (ডারহাম): তুলনামূলকভাবে ভেন্যুটির বয়স বেশি হয়নি। ১৯৯৫ সালে নির্মান করা হয় স্টেডিয়ামটি। ২০০৩ সালে ভেন্যুটি টেস্ট ভেন্যুর স্বীকৃতি পেয়েছে। এবারের বিশ্বকাপে ডারহাম গ্রাউন্ড আয়োজন করবে তিনটি ম্যাচ। ভেন্যুটির আসন সংখ্যা ১৪,০০০।

৭. ওল্ড ট্রাফোর্ড (ম্যানচেস্টার): ইংল্যান্ডের সবচেয়ে প্রাচীন স্টেডিয়ামগুলেরা মধ্যে একটি ওল্ড ট্রাফোর্ড। ১৮৮৪ সালে অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই মাঠেই। যদিও ওয়ানডে ভেন্যু হিসেবে মাঠঠি যাত্রা শুরু করে ১৯৭২ সালে। ওল্ড ট্রাফোর্ডে সেমিফাইনালসহ ছয়টি ম্যাচ আয়োজন হবে। তন্মধ্যে আছে ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথও। ভেন্যুটির দর্শক ক্ষমতা ২৪,৬০০।

৮. ট্রেন্ট ব্রিজ (নটিংহাম): ১৮৯৯ সালে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হলেও ওয়ানডে ম্যাচ আয়োজনের জন্য ট্রেন্ট ব্রিজের মাঠটিকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত। মাঠটিকে ব্যাটসম্যানদের স্বর্গরাজ্য বলা হয়ে থাকে। ওয়ানডে ক্রিকেটের ও ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ ৪৮১ রানের রেকর্ডের ম্যাচটির সাক্ষী হয়েছে ট্রেন্ট ব্রিজ। এবারের বিশ্বকাপে পাঁচটি ম্যাচ আয়োজন করবে ভেন্যুটি। আগামী ২০ জুন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এখানে খেলবে বাংলাদেশ। ভেন্যুটির আসন সংখ্যা ১৭,০০০।

৯. হেডিংলি (লিডস): ইয়র্কশায়ার কাউন্টি ক্লাবের এই মাঠটি অনেক প্রাচীন। ১৮৯৯ সালে ভেন্যুটি আয়োজন করে টেস্ট ম্যাচ। যদিও ওয়ানডে ম্যাচের স্বাগতিক হওয়ার জন্য ভেন্যুটিকে অপেক্ষা করতে হয় ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত। এবারের বিশ্বকাপের চারটি ম্যাচ আয়োজন করবে ভেন্যুটি। এর আসন সংখ্যা ১৮,৩৫০।

১০. লর্ডস (লন্ডন): লর্ডস স্টেডিয়ামকে ইংল্যান্ডের 'হোম অব ক্রিকেট' বলা হয়। যা নির্মিত হয়েছিল দুশো বছরেরও আগে; ১৮১৪ সালে। ২০০৫ সাল পর্যন্ত এখানেই ছিল আইসিসির সদর দপ্তর। এবারের বিশ্বকাপে ফাইনালসহ পাঁচটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে লর্ডস স্টেডিয়ামে। আগামী ৫ই জুলাই এখানে পাকিস্তানকে মোকাবেলা করবে বাংলাদেশ। লন্ডনের এই মাঠের আসন সংখ্যা ২৮,৫০০।

১১. ওভাল (লন্ডন): ১৮৪৫ সালে ওভালের এই মাঠে ফুটবলও খেলা হতো। এখান শুধু ক্রিকেটই খেলা হয় এখানে। ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার প্রথম টেস্ট ম্যাচটি হয়েছিল এখানেই; ১৮৮০ সালে। ওভালের মাঠটি বিশ্বকাপের পাঁচটি ম্যাচ আয়োজন করবে। এই মাঠে পরপর দুটি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ (২ জুন, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ৫ জুন নিউজিল্যান্ড)। ভেন্যুটির আসন সংখ্যা ২৫,০০০।