মিয়ানমারে কট্টর মুসলিমবিদ্বেষী বৌদ্ধ নেতার বিরুদ্ধে পরোয়ানা

মিয়ানমারের কট্টর মুসলিমবিদ্বেষী বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতা অশ্বিন উইরাথুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। দেশদ্রোহিতার এক মামলায় ইয়াঙ্গনের একটি আদালত তাকে গ্রেপ্তারের আদেশ দিয়েছে।

দোষী সাব্যস্ত হলে তার তিন বছরের কারাদণ্ড হতে পারে বলে কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিষোদগারের জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পেয়েছেন উইরাথু।

বিবিসি বলছে, উগ্রপন্থী এই জাতীয়তাবাদীকে 'বার্মার বিন লাদেন' বলা হয়। ২০১৩ সালের ১ জুলাই টাইম ম্যাগাজিন আশ্বিন উইরাথুকে নিয়ে একটি প্রচ্ছদ প্রতিবেদন করেছিল। প্রচ্ছদের শিরোনাম ছিল, ‘একজন বৌদ্ধ সন্ত্রাসীর প্রতিমূর্তি’।

খবরে বলা হয়েছে, নিয়মিত সোশাল মিডিয়া এবং তার অনুসারীদের উদ্দেশ্যে ভাষণে তিনি মুসলিমদের, বিশেষ করে রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিয়ে খোলাখুলি বিদ্বেষ এবং উস্কানিমুলক কথা বলতেন। মুসলিমদের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন তিনি।

রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে উস্কানিমুলক পোস্ট দেওয়ার কারণে ফেসবুক গত বছর তাকে নিষিদ্ধ করে।

বিবিসির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিষোদগারের পাশাপাশি সম্প্রতি অং সান সূচির সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা শুরু করেন উইরাথু। তার বক্তব্য - সুচির 'দুর্নীতিবাজ' সরকার সেনাবাহিনীর ক্ষমতা খর্ব করতে চাইছে।

শুধু তাই নয়, জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াংহি লি-কে 'বেশ্যা' বলে গালি দিয়েছেন এই আশ্বিন উইরাথু।

১৯৬৮ সালে জন্ম নেয়া উইরাথু ২০০১ সালে তিনি মুসলিমবিরোধী এবং জাতীয়তাবাদী একটি গ্রুপ গঠন করেন, যার নাম ছিল ৯৬৯ গ্রুপ। এ সংগঠনটিকে উগ্রপন্থী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

২০০৩ সালে তাকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০১০ সালে অন্যান্য রাজবন্দীর সাথে তাকে মুক্তি দেয়া হয়।

২০১২ সালে রাখাইন রাজ্যে মুসলমান এবং বৌদ্ধদের মধ্যে যখন তীব্র সংঘাত শুরু হয়। সে সময় আশ্বিন উইরাথু তার জ্বালাময়ী বক্তব্য নিয়ে জনসমক্ষে আসেন।

সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তার একটি পরিচিত উক্তি ছিল, ‘তুমি যাই করো, একজন জাতীয়তাবাদী হিসেবে সেটা করবে।’