আবারো ভেঙ্গে গেলো এরশাদের জাতীয় পার্টি?

কার্যত আবারো ভেঙ্গে দুই ভাগ হলো হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি। নেতৃত্ব নিয়ে দলটির নেতাদের অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরে দুই ভাগ হলো দলটি। অবশ্য এর আগেও ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নেয়াকে কেন্দ্র করে দলটি দুই ভাগ হয়েছিলো।

জিএম কাদেরকে এরশাদের পরবর্তী উত্তরসূরি হিসেবে দলের কো-চেয়ারম্যান ঘোষণার পরদিনই পাল্টা ঘোষণা এলো রওশন এরশাদের পক্ষ থেকে। রওশনের অনুসারী নেতারা দলের একাংশের পক্ষ থেকে তাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার ঘোষণা দিয়েছে। রওশনের পক্ষের নেতারা বলছেন, দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নিষ্ক্রিয় থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এরপর গতকাল রাতেই হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জানিয়েছেন, রওশনের পক্ষ যে বৈঠকটি করেছে সেটি সহ তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্বাচন পুরোপুরি অবৈধ।

এর আগে গত ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করেও জাতীয় পার্টিতে ভাঙন শুরু হয়। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদ এরশাদকে বহিষ্কার করে নিজেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন। পরে এরশাদও পাল্টা বহিষ্কারের ঘোষণা দিলে কাজী জাফর তাঁর দলবল নিয়ে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে যোগ দেয়।

তবে কাজী জাফরের আলাদা হওয়া ছাড়াও জাতীয় পার্টিতে সেসময়ই একটি সুস্পষ্ট ফাটল দেখা দেয়। এরশাদ ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলে তাঁকে অসুস্থততার কারন দেখিয়ে সিএমএইচে নিয়ে যাওয়া হয়। এবং রওশন এরশাদ অনুসারী জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং মন্ত্রিসভায় যোগ দেন। এরপর থেকে দলের ত্যাগী নেতারা এরশাদের পক্ষ নিলেও মন্ত্রী-এমপি পদপ্রাপ্ত নেতারা রওশন এরশাদের পক্ষে থাকেন।

সর্বশেষ গত রোববার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রংপুরে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ছোট ভাই জিএম কাদেরকে দলের কো- চেয়ারম্যান মনোনীত করেন এবং তাঁকে পরবর্তী উত্তরসূরি হিসেবে ঘোষণা দেন। মূলত এ ঘোষণার পরেই রওশন এরশাদের অনুসারী নেতাকর্মীদের মধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়।

গতকাল রাতে রাজধানীর গুলশানস্থ রওশন এরশাদের বাসভবনে এক জরুরি বৈঠকে বসেন দলীয় এমপি ও কয়েকজন সিনিয়র নেতা। ওই বৈঠকে রওশন এরশাদকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্বাচিত করার কথা জানান দলের মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। তিনি বলেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এমপিরা মিলে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরপর পরই মূলত দলটির বিভক্ত চেহারা সবার সামনে উন্মোচিত হয়ে পড়ে।

এদিকে এই বৈঠক সম্পর্কে জিএম কাদের বলেছেন, প্রথম কথা হলো তারা চেয়ারম্যানের অনুমতি ছাড়া কোনো বৈঠক ডাকতে পারে না। এটা গঠনতন্ত্রবহির্ভূত। তাছাড়া চেয়ারম্যান মারা না যাওয়া পর্যন্ত কেউ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে পারেন না।

আপনি আরও পড়তে পারেন

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী: সাদা পোশাক নয়, নির্ধারিত পোশাকে কাজ করবে পুলিশ

পৌর নির্বাচন স্বচ্ছ, সন্দেহমুক্ত ও বিশ্বাসযোগ্য ছিল না: সুজন

মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরির বয়সসীমা বাড়ছে না