সামনের চাকা ছাড়াই ল্যান্ড করলো বিমান!

মাটিতে নামার আগ মুহূর্তে সামনের গিয়ারে সমস্যা টের পেলেন পাইলট ক্যাপ্টেন মিয়াত মো অং। ল্যান্ডিং ক্যান্সেল করে দিয়ে বিমান নিয়ে আবারও আকাশে উড়লেন তিনি। একটা সময় বুঝতে পারলেন বিমানের সামনের চাকা খুলছে না। তারমানে সামনের চাকা নাই ধরেই ল্যান্ড করতে হবে তাকে। ভয়ের একটা শিহরণ খেলে গেলো ক্যাপ্টেনের শরীরে।

আতঙ্কের সময়েও মাথা ঠাণ্ডা করে কাজ শুরু করলেন মিয়াত মো অং। পেশাদারি মনোভাব আর দক্ষতার চূড়ান্ত পরীক্ষায় নামলেন মিয়ানমারের সরকারি বিমান সংস্থা 'মিয়ানমার ন্যাশনাল এয়ারলাইনসের' এই পাইলট।

ইয়াঙ্গুন থেকে রওনা হয়ে মান্দালয় এয়ারপোর্টে পৌছেই এই সমস্যার মুখোমুখি হন তিনি। প্রথমেই মান্দালয় এয়ারপোর্টের ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ারের সাথে যোগাযোগ করলেন। সামনের চাকা নামছে কি না -এ ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে কন্ট্রোল টাওয়ারের সামনে দিয়ে বার দুয়েক উড়ে গেলেন।

একসময় নিশ্চিত হলেন যে ল্যান্ডিং গিয়ার কাজ করছে না। এরপর মনে মনে সামনের চাকা ছাড়াই মাটিতে নামার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করলেন মিয়াত।

বিমান চালনার আপৎকালীন কার্যপ্রণালী মেনে মাঝ আকাশে ঘুরে ঘুরে ট্যাংকিতে থাকা জ্বালানির প্রায় পুরোটাই পুড়িয়ে ফেললেন প্রথমে। এতে লাভ হলো দুটো- এক, বিমান হালকা হলো; দুই, ল্যান্ডিংয়ের সময় জ্বালানিতে আগুন লাগার সম্ভাবনা কমে গেলো।

এরপর নিজেকে শান্ত করে নিয়ে বিমানটিকে নিয়ে মাটিতে নেমে এলেন তিনি। অবতরণের সময় সামনের চাকা মাটি ছোঁয়ার বদলে মাটিতে ঘষতে ঘষতে এগিয়ে যাচ্ছিলো। প্রচণ্ড ঘর্ষণে আগুনের ফুলকি ছড়িয়ে গেলো সবখানে। আতঙ্কিত যাত্রীদের অবস্থা তখন মরণপ্রায়।

মাটিতে নাক ঘষতে ঘষতে শেষমেশ ভালোয় ভালোয় কমে এলো বিমানের গতি। একসময় নিরাপদে সবাই নেমে এলেন বিমান থেকে।

বিমান চালক ক্যাপ্টেন মিয়াত মো অংয়ের অসাধারণ দক্ষতার প্রশংসা করলেন মিয়ানমারের সিভিল অ্যাভিয়েশন বিভাগের উপ-মহাপরিচালক হুটাট হুয়াং। তাকে পুরস্কৃত করার কথাও জানালেন তিনি।