চীনের ‘মুসলিম দমনপীড়নে’ সৌদি যুবরাজের সমর্থন?

চীনের ‘সন্ত্রাস দমন’ এবং ‘চরমপন্থা নির্মূলকরণ’-এর অধিকারকে সমর্থন দিয়েছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান। মানবাধিকার কর্মীরা যুবরাজের এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে বলছেন, চীন দেশটির সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের ওপর যে দমনপীড়ন চালাচ্ছে এর মাধ্যমে তাকেই সমর্থন করা হলো।

চলমান এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে চীনে গিয়ে গতকাল শুক্রবার বিন সালমান দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে তার সমর্থনের কথা জানান। এর আগে পাকিস্তান ও ভারত সফর করেন সৌদি যুবরাজ।

চীনা গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আলজাজিরা বলছে, ‘সন্ত্রাস দমনে’ দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের ব্যাপারেও একমত পোষণ করেন বিন সালমান।

চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিনহুয়া বলেছে, চীনা প্রেসিডেন্ট সৌদি যুবরাজকে বলেন, ‘অনুপ্রবেশ ও সন্ত্রাসবাদ ছড়ানো ঠেকাতে’ চরমপন্থা নির্মূলকরণে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা শক্তিশালী করতে দুই দেশের অবশ্যই ভূমিকা পালন করতে হবে।

এ সময়, একই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি যুবরাজ বলেন, চীনের নিরাপত্তা রক্ষার অধিকার এবং সন্ত্রাস দমন ও উগ্রপন্থা নির্মূলের উদ্যোগকে রিয়াদ শ্রদ্ধা ও সমর্থন করে। সেইসঙ্গে পারস্পারিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতেও আগ্রহী সৌদি আরব।

চীনা সরকারি গণমাধ্যম সিসিটিভি বলছে, বিন সালমান জিনপিংকে বলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় সন্ত্রাসবিরোধী ও উগ্রপন্থা দমনের পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকার চীনের রয়েছে।’

‘সৌদি আরব এটিকে সমর্থন ও শ্রদ্ধা করে এবং এ ব্যাপারে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহী,’ বলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে ১০ লাখের বেশি উইঘুর এবং অন্যান্য মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনের ওপর ব্যাপক দমনপীড়ন চালাচ্ছে বেইজিং। এমনকি তাদের বন্দি শিবিরে আটকে রাখা হয়েছে।

এ নিয়ে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ও গণমাধ্যমগুলো সোচ্চার হলেও রিয়াদের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য দিতে দেখা যায়নি। অথচ বিশ্ব মুসলিম সৌদি রাজপরিবারকে মুসলমান ও দুটি পবিত্র গৃহের ‘রক্ষক’ হিসেবেই বিবেচনা করে।

এদিকে, সৌদি যুবরাজের এই অবস্থানের নিন্দা জানিয়েছেন মানবাধিকার কর্মীরা।

ব্রিটেন’স মুসলিম কাউন্সিলের মুখপাত্র মিকদাদ ভারেসি বলেছেন, এটি ন্যাক্কারজনক এবং উইঘুর মুসলমানদের ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রাখার চীনা পদক্ষেপকে সমর্থন করা।

জার্মানভিত্তিক অ্যাডভোকেসি গ্রুপ দ্য ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেস বলেছে, সৌদি যুবরাজ উইঘুরদের বন্দি শিবিরের বিষয়টি উত্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং এটি ‘চীনের অব্যাহত মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ প্রতি নীরব সমর্থন।