আপনি পড়ছেন

সম্প্রতি ভারত অধ্যুষিত জম্ম-কাশ্মিরের পুলওয়ামায় ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলায় দেশটির ৪৯ জন সেনা সদস্য নিহত হওয়ায় পাকিস্তানের সঙ্গে নতুন করে উত্তেজনা চলছে। কারণ হামলার পর পরই দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মাদ।

pakistani missile 1পাকিস্তানি ক্ষেপণাস্ত্র শাহীন-৩, ২০১৬ সালে রাজধানী ইসলামাবাদে প্রদর্শন করা হয়। ছবি: এপি

সংগঠনটি ও এর নেতা মাহমুদ আজহার পাকিস্তানে নিষিদ্ধ হলেও ভারত দাবি করছে ইসলামাবাদের মদতেই এ হামলা হয়েছে। কিন্তু ভারতের এ অভিযোগ তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান।

বিষয়টি নিয়ে উভয় দেশ তাদের দূত প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। ভারত পাকিস্তানকে দেওয়া বিশেষ দেশের মর্যাদা তথা এমএফএন প্রত্যাহার করেছে। সেইসঙ্গে দেশটির পণ্য আমদানির ওপর ২০০ শতাংশ শুল্কারোপ করেছে।

ভারত পাকিস্তানকে কূটনৈতিক দিক থেকে সম্পূর্ণ একঘরে করার ঘোষণা দিয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশটির সেনাবাহিনীকে ছাড়পত্র দিয়েছেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।

কিন্তু পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে যদি তাদের দেশের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তাহলে তারাও বসে থাকবেন না। বরং পাল্টা ব্যবস্থা নেবেন।

এ অবস্থায় পারমাণবিক অস্ত্র সমৃদ্ধ প্রতিবেশী দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে আরেকটি সংঘাতের আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। ১৯৪৭ সালে ভাগ হওয়ার শুধু কাশ্মির ইস্যুতেই দুটি যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে পাকিস্তান ও ভারত।

যুদ্ধ লাগুক বা না লাগুক সেটা পরের বিষয়। কিন্তু উভয় দেশ যুদ্ধের জন্য কতটা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে তা নিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হলো-

সেনাবাহিনীর বাজেট
ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর স্ট্যাটেজিক স্টাডিজের (আইআইএসএস) মতে, ২০১৮ সালে ভারত ৫ হাজার ৮০০ কোটি ডলার বরাদ্দ করে। যা দেশটির জিপিডির ২.১ শতাংশ। এর মধ্যে ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার শুধু সক্রিয় সেনাবাহিনীর জন্য বরাদ্দ করা হয়।

গত বছর পাকিস্তান এ খাতে ১ হাজার ১০০ কোটি ডলার বরাদ্দ করে, যা দেশটির জিপিডির ৩.৬ শতাংশ। এটি ৬ লাখ ৫৩ হাজার ৮০০ সেনাবাহিনীর জন্য। এ ছাড়া দেশটি ২০১৮ সালে বিদেশি সামরিক সহায়তা হিসেবে ১০ কোটি ডলার পেয়েছে।

ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক অস্ত্র
ভারত ও পাকিস্তান দুটি দেশই ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক অস্ত্র ক্ষমতাসম্পন্ন। ভারতের ৯ ধরনের সচল ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- অগ্নি-৩, ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা কেন্দ্র সিএসআইএসের তথ্য অনুযায়ী যার পরিসর ৩ হাজার কিলোমিটার থেকে ৫ হাজার কিলোমিটার (৩ হাজার ১০৬ মাইল)।

সিএসআইএস বলছে, পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রম চালু রয়েছে। এর মধ্যে ভ্রাম্যমাণ ছোট ও মাঝারি পাল্লার আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে যেগুলো ভারতের যেকোনো অংশে পৌঁছাতে পারে। এ ছাড়া শাহিন-২ নামে পাকিস্তানের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। এর পরিসর ২ হাজার কিলোমিটার বা ১ হাজার ২৪২ মাইল।

স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসআইপিআরআই) মতে, পাকিস্তানের ১৪০-১৫০টি পরমাণুবাহী যুদ্ধাস্ত্র রয়েছে। অন্যদিকে, ভারতের ১৩০-১৪০টি রয়েছে।

সেনাবাহিনী
ভারতের ১২ লাখ শক্তিশালী সেনাবাহিনী রয়েছে। এর জন্য রয়েছে ৩ হাজার ৫৬৫টি যুদ্ধ ট্যাংক, ৩ হাজার ১০০ পদাতিক বাহিনীর যুদ্ধযান, ৩৩৬টি সাঁজোয়া যান ও ৯ হাজার ৭১৯টি আর্টিলারি।

অন্যদিকে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তুলনামূলক ছোট। দেশটির ৫ লাখ ৬০ হাজার সেনাবাহিনীর জন্য ২ হাজার ৪৯৬টি ট্যাংক, ১ হাজার ৬০৫টি সাঁজোয়া যান, ৪ হাজার ৪৭২টি আর্টিলারি গান ও ৩৭৫টি স্ব-চালিত হ্যালোজার্স রয়েছে।

চলতি মাসে আইআইএসএসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের বিশাল সেনাবাহিনী থাকলেও এর সক্ষমতা সীমিত। কারণ অপর্যাপ্ত লজিস্টিকস, ব্যবস্থাপনা এবং গোলাবারুদ ছাড়াও খুচরা যন্ত্রাংশের ঘাটতি রয়েছে।

বিমানবাহিনী
ভারতের ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ কর্মী বাহিনীর জন্য ৮১৪টি যুদ্ধবিমান রয়েছে। ভারতীয় বিমান বাহিনী অবশ্যই বেশ বড়, কিন্তু তার যুদ্ধবিমানের বহর নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।

ভারতের প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা অনুযায়ী চীন ও পাকিস্তানের দ্বিমখী আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য ৪২টি স্কোয়াড্রন জেট এবং প্রায় ৭৫০টি বিমান দরকার। রাশিয়ান পুরাতন মিগ-২১ যুদ্ধবিমান রয়েছে ভারতের, যা প্রথম ১৯৬০ সালে ব্যবহৃত হয়েছে এবং এগুলো খুব শিগগিরই আর কাজে আসবে না। তবে দেশটির কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী ২০৩২ সাল নাগাদ ভারতের ২২টি স্কোয়াড্রন থাকতে পারে।

আইআইএসএসের সূত্র অনুযায়ী, পাকিস্তানের ৪২৫টি যুদ্ধবিমান রয়েছে। এর মধ্যে চীনের তৈরি এফ-৭পিজি এবং আমেরিকান এফ-১৬ ফ্যালকন যুদ্ধবিমান রয়েছে। পাকিস্তানের ৭টি বায়ুবাহী পূর্ব সতর্কতা নিয়ন্ত্রিত বিমান রয়েছে যা ভারতের চেয়ে তিনটি বেশি।

আইআইএসএস তাদের ২০১৯ সালের মূল্যায়নে বলেছে, পাকিস্তানের বিমান বাহিনীতে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে দেশটি নিখুঁত আঘাত এবং আইএসআর (বুদ্ধিমত্তা, নজরদারি ও প্রাথমিক নিরীক্ষণ) এর ক্ষমতার উন্নয়ন করছে।

নৌবাহিনী
ভারতীয় নৌবাহিনীর রয়েছে একটি বিমান বহনকারী, ১৬টি সাবমেরিন, ১৪টি সাবমেরিন ধ্বংস করার ক্ষেপণাস্ত্র, ১৬টি উপকূলীয় যুদ্ধজাহাজ ও ৭৫টি যুদ্ধ ক্ষমতাসম্পন্ন বিমান। দেশটির নৌবাহিনীর সামুদ্রিক ও নৌবিমান কর্মীসহ ৬৭ হাজার ৭০০ কর্মী রয়েছে।

অন্যদিকে, পাকিস্তানের সমুদ্র উপকূল তুলনামূলক ছোট। দেশটির রয়েছে ৯ ফ্রিগেটস, ৮টি সাবমেরিন, ১৭টি সামুদ্রিক যুদ্ধজাহাজ এবং ৮টি যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষমতাসম্পন্ন যুদ্ধবিমান।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.