আঞ্চলিক উত্তেজনা সত্ত্বেও পাকিস্তানে সৌদি যুবরাজ

একদিনের সফরে পাকিস্তান পৌঁছেছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান। রোববার রাতে রাওয়ালপিন্ডির নুর খান বিমানবন্দরে যুবরাজকে স্বাগত জানান পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও দেশটির সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া। দেশটির ডন নিউজের প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে ভয়াবহ আত্মঘাতী গাড়ি বোমা হামলা নিয়ে যখন ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লি উত্তেজনা এবং পাক সীমান্তে ইরানি সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ওপর হামলা নিয়ে যখন তেহরান ইসলামবাদকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে, তখন পাকিস্তান সফরে আসলেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান।

যদিও উল্লিখিত কারণে সফর একদিন পিছিয়ে রোববার আসলেন তিনি। সেইসঙ্গে দুই দিনের সফরের কথা থাকলেও সফর করবেন একদিনের। তবুও বিশ্লেষকরা বলছেন, আঞ্চলিক এই উত্তেজনা সৌদি যুবরাজের সফরকে অনেকটা ম্লান করে দিতে পারে।

গত বছর ইমরান খান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সৌদি সফর করলেও এই প্রথম সৌদি যুবরাজ পাকিস্তান সফরে আসলেন, যেটা যুবরাজ হওয়ার পর তারও প্রথম ইসলামাবাদ সফর।

পাকিস্তান দিয়েই দক্ষিণ এশিয়া ও চীনে কয়েকদিনের সফর শুরু করলেন বিন সালমান। সফরের অংশ হিসেবে ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার কথাও রয়েছে তার।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, কাশ্মিরের ঘটনা নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে বাড়তে থাকা উত্তেজনা সৌদি যুবরাজের এবারের সফরকে কালোছায়ায় ঢেকে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে আত্মঘাতী গাড়ি বোমা হামলায় ভারতীয় আধা-সামরিক বাহিনীর ৪৯ সদস্য নিহত হয়। এ ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে আসছে নয়াদিল্লি। যদিও ইসলামাবাদ সে অভিযোগ তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।

অন্যদিকে, কাশ্মির হামলার একদিন আগে পাক সীমান্তে ইরানি সীমান্তরক্ষী বাহিনীর একটি বহরে হামলা চালানো হয়। হামলায় অন্তত ২৭ নিরাপক্ষী নিহত হয়।

এ ঘটনায় পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে ইরানি কর্মকর্তারা বলেছেন, এর জন্য করুন পরিণতি ভোগ করতে হবে ইসলামাবাদকে।

উল্লেখ্য, সৌদি আরবের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছে ইরান। সুতরাং সৌদি যুবরাজের সফরের আগে ইরানি বাহিনীর ওপর হামলার ঘটনাকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখছে না তেহরান।

খবরে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পাকিস্তান সফরের পর সৌদি যুবরাজের এই সফরকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সফরে পাকিস্তানের সঙ্গে সৌদি আরবের ১০০০ কোটি ডলারের চুক্তি হতে পারে।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরই ইমরান খান দেশটির ভঙ্গুর অর্থনীতিকে টেনে তুলতে রিয়াদের দারস্থ হন। সৌদি আরবও তাকে নিরাশ করেনি। ওই সময়ই ৬০০ কোটি ডলার ঋণ দেয় পাকিস্তানকে। যা ইমরান খান তথা ইসলামাবাদকে খানিকটা স্বস্তি দেয়।