ভারতীয় পুলিশের কারণেই আত্মঘাতী আদিল

তিন বছর আগের কথা, স্কুল থেকে ফিরছিল আদিল দার ওয়াক্কাস। সে সময় ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের পুলিশ তাকে ধরে ব্যাপক মারধর করে। তারপর নাকখত দিয়ে ঘোরানো হয় পুলিশের জিপের চার পাশে। তখনই থেকেই পুলিশের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে উঠে আদিল। যার বিস্ফোরণ ঘটে বৃহস্পতিবার।

কাশ্মিরের পুলওয়ামায় ওইদিন ভারতীয় সেনাবহরকে টার্গেট করে আত্মঘাতী হামলায় অংশ নেয় ঘটনাস্থল থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে কাকাপোরার বাসিন্দা আদিল। ওই হামলায় ৪৪ ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছে।

ঘটনার অল্প সময়ের মধ্যে দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠন জইশ-ই-মুহাম্মাদ। আদিল এই সংগঠনের সদস্য এবং এক বছর আগে সে সেখানে যোগ দেয় বলে দাবি করা হচ্ছে ভারতীয় গণমাধ্যমে।

আদিল কীভাবে জইশ-ই-মুহাম্মাদের সঙ্গে যুক্ত হলো- বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তার ফিরিস্তি দিয়েছেন বাবা গুলাম হাসান দার ও মা ফাহমিদা।

কলকাতাভিত্তিক আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, বাবা-মা জানান, আদিল ছোটবেলায় এমন ছিল না। স্কুলে যেত, আসতো। মোটামুটি শান্ত স্বভাবেরই ছেলে। কিন্তু পুলিশের ওই ঘটনাই তাকে রাগিয়ে দিয়েছিল।

বাড়ি বাড়ি ঘুরে ফেরি করে হরেক রকমের জিনিস বিক্রি করা গুলাম হাসান জানান, তিন বছর আগেকার ওই ঘটনার পর থেকেই অনেক বদলে গিয়েছিল আদিল। তার স্বভাবটাও খুব রুক্ষ হয়ে গিয়েছিল।

কেন পুলিশ তাকে ধরে মারধর করেছিল— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে আদিল পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়েছিল। কাজটা যে ও খুব বুঝেসুজে করেছিল, তা মনে হয় না। কিন্তু তার জন্য ওর কপালে যা জুটেছিল, তা ওকে খুব চটিয়ে দিয়েছিল। মাঝে-মধ্যেই বলতো, ওসব দলে ভিড়ে যাবে।’

আদিলের মা বলেন, ‘ওই ঘটনায় ও খুব রেগে গিয়েছিল। সব সময় চাইত বদলা নিতে। আমি সব সময় চাইতাম ও ওসব সঙ্গ ছেড়ে বেরিয়ে আসুক। বোঝাতাম, আমি ওকে অনেকবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু পারিনি।’

শুক্রবার পরিবারের লোকজন ও গ্রামবাসী লাশ ছাড়াই আদিলের জানাজা-দাফন সেরেছে। তবে কাকাপোরার সেই গ্রামে যাতে বাইরের লোকজন যেতে না পারে, আবার অশান্তির আবহ তৈরি না হয়, সেজন্য কাকাপোরার কয়েক কিলোমিটার দূর থেকেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করা হয়।