৫০০ বছর আগের চিঠিতে সুলতানকে কী লিখেছিলেন হুররম?

প্রায় পাঁচ শ বছর আগের কথা। ওসামানীয় খিলাফাতের সবচেয়ে দাপুটে বাদশাহ ছিলেন সুলতান সুলেমান। তিনি একটি যুদ্ধের মিশনে থাকার সময় তার কাছে দীর্ঘ চিঠি লিখেছিলেন স্ত্রী হুররম সুলতান। ১৫২৬ সালে হুররম সুলতানের লেখা চিঠিটি সম্প্রতি প্রকাশ করেছে তুরস্কের প্রেসিডেন্সিয়াল আর্কাইভ।

সুলতান সুলেমানকে লেখা হুররম সুলতানের লেখা সেই চিঠি, ইয়েনিসাফাক ডটকম থেকে নেয়া

সুলতান সুলেমান ছিলেন ওসমানীয় খিলাফতের সবচেয়ে সফল শাসক। ১৫২০ থেকে ১৫৫৬ সাল পর্যন্ত ছিল তার শাসনকাল।

মাত্র ১৫ বছর বয়সে রাজপ্রাসাদে দাসী হয়ে আসেন হুররম। অল্প দিনেই তিনি সুলতানের প্রিয় হয়ে ওঠেন। রাজ প্রটোকল ভেঙে তাকে বিয়ে করেন সুলতান সুলেমান। দাসী থেকে রাণী হওয়া হুররম ওই চিঠিতে লিখেছেন, ‘স্রষ্টার সৃষ্ট মহাবিশ্বে আমি যেন হারিয়ে গেছি। আপনার দেয়া সুরক্ষায় আমি যেন আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়গুলো কাটিয়েছি, যেমনটা গহনার বাক্সে সুরক্ষিত থাকে মুক্তা। আপনার অবর্তমানে আপনার এই অনুগত অসহায় সময় কাটাচ্ছে। শুধু আপনার সামনেই আমি শান্তি খুঁজে পাই। সেই সময়ে আমার আনন্দ ও সুখ প্রকাশ করার জন্য কোনো ভাষা কিংবা দোয়াতের কালি যথেষ্ট নয়।’

এর পর তিনি লিখেছেন, ‘আপনার সাথে যে সময়গুলো কাটিয়েছি, যতটা সময় আপনার সাথে থাকি সেটুকু সময় আপনার এই দাসীর হৃদয় যেন পরিপূর্ণ থাকে। আর আপনি যখন দূরে থাকেন, তখন আপনার স্মৃতিচারণ করেই আমি সময় কাটাই। আপনি দূরে থাকলে অসহায় বোধ করি, কোনো কিছুই আমার বেদনা দূর করতে পারে না।’

তুর্কি গণমাধ্যম ইয়েনিসাফাক ডটকম বলছে, দূত মারফত পাঠানো এই চিঠির সাথে হুররম তার চোখের পানিতে ভেজা একটি পোষাকও পাঠিয়েছিলেন সুলতানের কাছে। হুররম লিখেছেন, ‘আমার জীবন, আমার প্রিয় সুলতান, আল্লাহর কাছে একটাই প্রার্থনা যেন আবার আপনার হাস্যোজ্বল মুখ দেখতে পাই। কোনো কিছুই যেন আমাদের বিচ্ছিন্ন করতে না পারে। সব সময় চাই আমার প্রিয় সুলতান যেন দুনিয়াতে ও আখিরাতেও সুখী থাকেন।’

চিঠির শেষ দিকে লিখেছেন, দোয়া করি, আপনি সব সময় শত্রুর বিরুদ্ধে জয়ী হোন। আমি জানি, আমার জন্য আমার সুলতান ভাগ্যের কিছু নির্মমতাও সয়েছেন।’

চিঠির একেবারে শেষ লাইনে হুররম সুলতান লিখেছিলেন, ‘উভয় জীবনে আপনার সুখ ছাড়া আর কিছু চাই না। আপনার গরিব ও বিনীত দাসী হুররম।’