লটারি বেচে সরকারের আয় ১০০ কোটি টাকা

গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত লটারি বিক্রি করে সরকারের ৭১ কোটি টাকা আয় হয়েছে। আর ডিসেম্বর পর্যন্ত হিসাব হলে তা ১০০ কোটিতে পৌঁছবে বলে মনে করা হচ্ছে। আগামী দিনে লটারি থেকে বছরে এক হাজার কোটি টাকা আয়ের চিন্তাও আছে সরকারের।

ছবি: অনলাইন থেকে নেওয়া

সরকারি তথ্য বলছে, প্রতিদিন ১০ কোটি লটারির টিকিট ছাড়া হয়। প্রতিটি টিকিটের দাম ৬ টাকা। দিনে গড়ে ৭ কোটি টিকিট বিক্রি হয়। অর্থাৎ, প্রতিদিন ৪০-৪২ কোটি টাকার লটারির কারবার চলে।

এতক্ষণ যে হিসাব দেখানো হলো তা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের। বলা হচ্ছে, ওই রাজ্যে ধর্মের পরই লটারির পেছনে খরচ করা হয়।

পশ্চিমবঙ্গের প্রভাবশালী বাংলা গণমাধ্যম আনন্দবাজার সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, রাজ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় লটারি নাগাল্যান্ড সরকারের ‘ডিয়ার লটারি’। প্রতিদিন ৩০ কোটি টাকার টিকিট বিক্রি করে নাগাল্যান্ড সরকার। পশ্চিমবঙ্গের লটারি বাজারের ৫০ শতাংশ নাগাল্যান্ডের দখলে। এর পরই অবশ্য ৩০ শতাংশ বাজার ধরেছে রাজ্যেরই ‘বঙ্গশ্রী’ ও ‘বঙ্গলক্ষ্মী’ লটারি। আগে ১০ শতাংশ বাজারও ছিল না এ রাজ্যের হাতে। কারণ পশ্চিমবঙ্গ সরকার সাপ্তাহিক লটারি চালাতো।

গত বছরের ১৪ মে থেকে প্রতিদিনকার লটারি শুরু করেছে রাজ্য কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিকভাবে প্রতিদিন ৩০ লাখ টিকিট ছেড়ে বাজার ধরার চেষ্টা হয়। তবে সাধারণ মানুষের আগ্রহের কারণে গত ২৯ অক্টোবর থেকে প্রতিদিন তিন কোটি টিকিট বাজারে ছাড়া শুরু করেছে রাজ্য সরকার। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশ টিকিটই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিন্তু কোটি কোটি টাকার এই লটারিতে সাধারণ মানুষের তেমন কোনো লাভ নেই।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্বের শিক্ষক রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় মনে করেন, এ খেলার সবচেয়ে বড় খেলোয়াড় রাষ্ট্র। ফলে সহজে একে আটকানোর উপায় নেই।

তিনি বলেন, ‘এটা সংগঠিত আইনি জুয়া। তথ্য বলছে, সারাদেশে টাকা খরচের নিরিখে প্রথম স্থানটি ধর্মের দখলে রয়েছে। দ্বিতীয় লটারির টিকিট।’

আর মনোবিদ মোহিত রণদীপ বলেন, ‘মাদক থেকে আলাদা নয় এই নেশা। ক্ষতি হচ্ছে বুঝেও একটা সময়ে ফেরার জায়গা থাকে না। ফলে হার হলেও জিতের আশায় খেলে যাওয়া।’