কুমিল্লার শ্বাসরুদ্ধকর জয়, ঘোর বিপদে ঢাকা

সমীকরণ ছিল শেষ চারে যেতে হলে গ্রুপ পর্বের বাকি দুই ম্যাচের মধ্যে একটিতে জিততেই হবে ঢাকা ডায়নামাইটসকে। আজ প্রথমটি খেলতে নেমে শুরুটা দারুণই করেছিল সাকিব আল হাসানের দল। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স গুটিয়ে গিয়েছিলো মাত্র ১২৭ রানে। নিশ্চিত শেষ চারের অপেক্ষায় ছিলেন ঢাকার সমর্থকরা। কিন্তু রোমাঞ্চে ভরপুর ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত জিততে পারেনি ঢাকা। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ১ রানের জয় তুলে নিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।

এই হারে প্লে-অফ অনিশ্চিতই থাকল ঢাকার। গ্রুপ পর্বে সাকিবদের বাকি আর একটি ম্যাচ। প্লে-অফে যেতে হলে ওই ম্যাচ জিততেই হবে ঢাকাকে।

মাঝারি সংগ্রহের জবাব দিতে নেমে ঢাকার শুরুটাই হয়েছিল বাজে। উপল থারাঙ্গাকে উড়িয়ে এনে আজ ওপেনিংয়ে নামিয়ে দিয়েছিল ঢাকা, কিন্তু সফল হতে পারেননি অভিজ্ঞ শ্রীলঙ্কান। ছয় বল খেলে শূন্য রানে আউট হয়েছেন, ঢাকার রান তখন ৬।

শুধু থারাঙ্গা নয়, ঢাকার টপ অর্ডার আজ পুরো ব্যর্থ। পাওয়ার প্লে-র শেষ বলে সাকিব আল হাসান চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন ফিরে গেলেন ঢাকার রান তখন ২৯! শুরুতেই এতো বড় চাপে পড়াতে ঢাকার পরবর্তী ব্যাটসম্যানরা আর স্বাচ্ছেন্দে খেলতে পারেননি।

তবে মিডল অর্ডারে দারুণ একটা জুটি গড়ে তুলেছিলেন কাইরন পোলার্ড ও পাঁচে ব্যাটিং করতে নামা সুনিল নারিন। পোলার্ড ৩৪ বলে করেন ৩৩ রান। নারিনের ব্যাট থেকে আসে ২৪ রান। কিন্তু অল্প বিরতিতে এই দুজন ফিরলে আবারও বড় চাপে পড়ে যায় ঢাকা। টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সফল দলটির চাপ আরও বেড়ে গিয়েছিল আন্দ্রে রাসেলের স্বভাববিরোধী ব্যাটিংয়ে।

প্রথম ১২ বলে মাত্র ২ রান করতে পেরেছিলেন রাসেল। শহিদ আফ্রিদিকে পরপর দুই ছক্কা হাঁকিয়ে অবশ্য খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন রাসেল। এই ক্যারিবীয়ান অনেকক্ষণ একপ্রান্ত ধরে রেখেছিলেন বলে ঢাকার জয়ের সম্ভাবনা টিকে ছিল শেষ ওভার পর্যন্ত। কিন্তু পারেননি রাসেল।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য ঢাকার প্রয়োজন ছিল ১৩। তরুণ সাইফুদ্দিনকে ছক্কা হাঁকিয়ে সমীকরণ ১ বলে ৬ রান করেন রাসেল। শেষ বলে ছক্কা মেরে ঢাকাকে শেষ চারে তুলতে পারেননি ক্যারিবীয়ান তারকা। সাইফুদ্দিনের নিখুঁত ইয়র্কারে শটই নিতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত রোমাঞ্জে ভরপুর ম্যাচে ১ রানের জয় নিশ্চিত হয়ে যায় কুমিল্লার। সাইফুদ্দিন চার ওভার বোলিং করে ২২ রান খরচায় তুলে নেন চার উইকেট।

এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে ১২৭ রান তুলেছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। কুমিল্লার হয়ে শুরুতে দারুণ ব্যাটিং করছিলেন তামিম ইকবাল। কিন্তু অপর প্রান্ত থেকে তাকে সঙ্গ দিতে পারেনি কেউই। সাকিব আল হাসান, রুবেল হোসেন, সুনিল নারিনদের বোলিংয়ের সামনে কুমিল্লার মিডল অর্ডার পুরো ব্যর্থ। শেষ দিকে তরুণ স্পিনার মেহেদি হাসান ও পাকিস্তানি পেসার ওয়াহাব রিয়াজ 'ব্যাটসম্যান' হয়ে উঠলে মাঝারি ওই সংগ্রহটা পেয়েছিল কুমিল্লা।

তামিম ইকবাল ২০ বল খেলে ৪টি চার ২টি ছক্কার সাহায্যে ৩৮ রান করেছিলেন। স্পিনার মেহেদি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০ রান করেছেন। ওয়াহাব রিয়াজের ব্যাট থেকে এসেছে ১৬ রান। ঢাকার পক্ষে ৩০ রানে চার উইকেট পেয়েছেন রুবেল হোসেন। সাকিব আল হাসান ও সুনিল নারিন দুটি করে উইকেট তুলে নিয়েছেন।