স্বস্তির জয়ে ফিরল খুলনা

আট ম্যাচের সাতটিতেই হার খুলনা টাইটানসের। অন্যদিকে সাত ম্যাচের দুটিতে জয় সিলেট সিক্সার্সের। বিপিএলের পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা দুটি দলই গিয়ে দাঁড়িয়েছে খাদের কিনারায়। অভাবনীয় কিছু না ঘটলে দুটো দলই বিদায় নিচ্ছে কোয়ালিফায়ার পর্বের আগেই।

তবু রূপকথার এক প্রত্যাবর্তনের আশায় আছে দল দুটি। তাদের জন্য আজকের ম্যাচটা স্রেফ ঘুরে দাঁড়ানোর উপলক্ষ্য। সিলেট সিক্সার্স জিততে পারলে তাদের জন্য কিছুটা হলেও আশার প্রদীপটা জ্বলে উঠত। কিন্তু জিতে গেল খুলনা টাইটানস। আজ মিরপুরে খুলনার কাছে ২১ রানে হেরে গেছে সিলেট।

মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে নয় উইকেটে স্কোর বোর্ডে ১৭০ রান জমা করেছে খুলনা টাইটানস। জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ওভারে সাত উইকেটে ১৪৯ রান তুলতে সক্ষম হয়েছে সিলেট সিক্সার্স। খুলনা জিতেছে ২১ রানে। টুর্নামেন্টের চলতি আসরে নয় ম্যাচে এটা দ্বিতীয় জয় মাহমুদুল্লাহদের।

খুলনা টাইটানসের দলীয় সংগ্রহ আরো বাড়তে পারতো। কিন্তু সেটা হয়নি অলোক কাপালির দুর্দান্ত বোলিংয়ের কারণে। চার উইকেট তুলে নিয়ে খুলনার টপ ও মিডল অর্ডার ধসিয়ে দিয়েছেন কাপালি। দুটি করে শিকার মোহাম্মদ নওয়াজ ও আসরের শুরু থেকে দারুণ ছন্দে থাকা তাসকিন আহমেদের।

খুলনার ইনিংসের শুরুটা ছিল উড়ন্ত। সাত ওভার শেষ হওয়ার আগেই বিনা উইকেটে দলের সংগ্রহ ৭০ ছাড়িয়েছেন দুই ওপেনার ব্রেন্ডন টেলর ও জুনায়েদ সিদ্দিক। খুলনার ৭৩ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে জুনায়েদ ৩৩ রানে বিদায় নিলে। ফেরার আগে ২৩ বলের ইনিংসে ছয়টি চার মেরেছেন জুনায়েদ।

দারুণ শুরু করা খুলনা হঠাৎই বিপাকে পড়ে নিয়মিত বিরতিতে কয়েকটা উইকেট হারিয়ে। বিনা উইকেটে ৭৩ থাকা খুলনা ১১৯ রানের মধ্যে খুইয়ে বসে ছয় উইকেট। সেখান থেকে ভেডিড ভিসার ঝড়ো ব্যাটিংয়ের সুবাদে শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছেছে খুলনা। ২৫ বলে ৩৮ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে তাসকিনের বলে বিদায় নিয়েছেন ভিসা। তার ইনিংসে ছিল দুটি করে চার-ছক্কা।

তবে খুলনার শক্তিশালী সংগ্রহের আসল নায়ক টেলর। ৩১ বলে ৪৮ রানের সর্বোচ্চ ইনিংসটি দেখিয়েছে জিম্বাবুইয়ান তারকার ব্যাট। ১১১ রানে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরার আগে চারটি চার ও দুটি ছক্কা মেরে গেছেন টেলর। ব্যাটসম্যানরা নিজেদের কাজটা করেছে। বাকি কাজটা সেরেছেন খুলনার বোলাররা।

দলকে জয়ে ফেরানোর জন্য বড় পুঁজিই পেয়েছেন মাহমুদুল্লাহরা। ১৭১ রানের কঠিন লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট খোয়াতে থাকে সিলেট সিক্সার্স। অথচ দলের পাঁচজন ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন উইকেটে থিতু হয়ে। এদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৪ বলে ৫৪ রান করেছেন মোহাম্মদ নওয়াজ।

কিন্তু পাকিস্তানি তারকার ইনিংসটা সিলেট সিক্সার্সের হারের ব্যবধানটাই শুধু কমিয়েছে। ২৪ বলে ২৯ রান করেছেন আফিফ হোসেন। ২১ বলে ২৮ রান এসেছে নিকোলাস পুরানের ব্যাট থেকে। এ ছাড়া সাব্বির রহমান ১৩ ও ১১ রান করেছেন কাপালি। তাদের এসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ইনিংস একটা পর্যায়ে লড়াইয়ের আভাস দিয়েছিল সিলেটের পক্ষে। কিন্তু ম্যাচের শেষ দিকে একতরফাভাবে জয় তুলে নেয় খুলনা টাইটানস।

মিডল অর্ডার দুই ব্যাটসম্যান পুরান ও নওয়াজের ব্যাটিং দৃঢ়তায় কিছুটা হলেও লড়াইয়ে ছিল সিলেট। কিন্তু ১৮ ও ১৯তম ওভারে এই দুজনকে ফিরিয়ে খুলনা হাতের মুঠোয় নিয়ে আসে জয়টা। শেষ চার ওভারে ৪২ রানের কঠিন সমীকরণটা হয়তো মেলাতে পারতো সিলেট। যদি পুরান ও নওয়াজের পঞ্চম উইকেটে ৮১ রানের জুটিটা না ভাঙতো। ৫৬ রানে চার উইকেট হারানোর পর এই দুজনই তো সিলেটকে জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। কিন্তু স্বপ্নটা আর বাস্তবে রূপ নেয়নি।