ঘরের মাঠে সিলেটের ‘বড় লজ্জা’

অভিষেক আসরেই সবাইকে চমকে দিয়েছিল সিলেট সিক্সার্স। নাসির হোসেনের নেতৃত্বে প্রথম চার ম্যাচের সবকটিতেই জয় তুলে নিয়েছিল দলটি। সেই নাসিরকে ধরে রেখেছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। কিন্তু তার এবারের সিলেটযাত্রাটা বড্ড দুঃস্বপ্নের। হারিয়েছেন নেতৃত্ব, উপেক্ষিত থাকছেন একাদশে।

আজ তো সিলেট সিক্সার্সের একাদশ, খেলোয়াড় তালিকা কোথাও নেই তিনি। পুরনো অধিনায়ককে ছাড়াই বিপিএলে ঘরের মাঠে প্রথম ম্যাচটি খেলতে নেমেছে সিলেট সিক্সার্স। এবারো চেনা দুর্গে চমক দিয়ে শুরু করেছে দলটি। কিন্তু এবার আর ইতিবাচক অর্থে নয়, সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের শুরু হলো নেতিবাচকভাবে।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের বিপক্ষে ব্যাট করতে নেমে কী দুঃস্বপ্নের সূচনাই না হয়েছে সিলেট সিক্সার্সের। মেহেদি-রিয়াজদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের বিপরীতে ১৫ রানে ৫ এবং ২২ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারিয়ে বসে তার। বিপিএলের ইতিহাসে সর্বনিম্ন রানে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়েছিল ওয়ার্নারের সিলেট।

এ যাত্রায় দলটিকে বড্ড বাঁচা বাঁচিয়ে দিয়েছেন অলোক কাপালি। ধ্বংসস্তূপে ওপর দাঁড়িয়ে ৩৩ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেছেন তিনি। কিন্তু তার নামের সতীর্থদের রানসংখ্যার যা অবস্থা সেটা যে কোনো দলের জন্যই বিব্রতকর। কাপালি ছাড়া স্বাগতিকদের কোনো ব্যাটসম্যানই যে দুই অংকেই যেতে পারেননি! এমন দায়িত্বহীন ব্যাটিংয়ের পর ১৪.৫ ওভারে ৬৮ রানে গুটিয়ে গেছে সিলেট।

বিপিএলে সর্বনিম্ন সংগ্রহ ৪৪ রান। সেটা ২০১৬ সালে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে এমন বিব্রতকর রেকর্ড গড়েছিল রাজশাহী কিংস। আজ আরেকটু হলে তো রাজশাহীর রেকর্ডই ভেঙে ফেলতে সিলেট। মুড়ি-মুরকির মতো উইকেট পড়তে থাকে সিলেট সিক্সার্সের। অবশেষে অষ্টম উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে তোলে স্বাগতিকরা।

এই জুটিতে আসে সর্বোচ্চ ২৩ রান। জুটি ভাঙে তাসকিন বিদায় নিলে। কিন্তু এক প্রান্ত আগলে রেখে ঠিকই দলকে বড় ধরণের লজ্জার হার থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছিলেন কাপালি। শেষ অবধি তিনিই অজেয় থাকলেন। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হয়ে যান আল আমিন হোসেন। তার স্টাম্প উড়িযে ফেলেন ওয়াহাব রিয়াজ।

৩১ বলে ৩৩ রানে অপরাজিত থাকলেন কাপালি। ইনিংসে চারটি চার ও একটি ছক্কা হাঁতিকয়েছেন তিনি। কাপালি ছাড়া দলীয় সর্বোচ্চ ছয় রান করেছেন দুজন- সাব্বির রহমান ও লিটন দাশ। চার জন ব্যাটসম্যান তো রানের খাতাই খুলতে পারেননি। একই সঙ্গে কাপালি ছাড়া কেউ যেতে পারেননি দুই অংকে।

কাপালি না থাকলে হয়তো সিলেটের আগের ফ্র্যাঞ্চাইজি সিলেট সুপার স্টার্সের রেকর্ডটাও ভেঙে ফেলতে স্বাগতিকরা। ২০১৫ সালে রংপুর রাইডার্সের বিরুদ্ধে ১১.৫ ওভারে মাত্র ৫৯ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল সিলেট সুপার স্টার্স। যা এতদিন বিপিএলের সর্বনিম্ন তৃতীয় সংগ্রহ ছিল। আজ সুপার স্টার্সের পেছনেই নাম লেখালেন ওয়ার্নারটা টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বনিম্ন চতুর্থ সংগ্রহ তুলে। সিলেটের প্রতিপক্ষ কুমিল্লা অবশ্য কদিন আগে ৬৩ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল। তালিকায় তাদের অবস্থান এখন পাঁচে।

স্বাগতিকদের এমন লজ্জায় ফেলেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের দুর্দান্ত বোলিং বিভাগ। চার ওভারে ২২ রান দিয়ে চার উইকেট তুলে নিয়ে সিলেটকে ধসিয়ে দিয়েছেন মেহেদি হাসান। তৃতীয় ওভার শেষ করার আগেই তিন উইকেট তুলে নেওয়া ওয়াহাব রিয়াজ শিকার করেছেন তিনি। দুটি শিকার লিয়াম ডওসনের।

তিন ওভারে মেডেনসহ মাত্র চার দিয়ে দুই উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন তিনি। মেডেন নিয়েছেন কুমিল্লা পেসার সাইফুদ্দিনও। চার ওভারে ১৮ রানে এক উইকেট শিকার করেছেন সাইফুদ্দিন। বোলাররা প্রত্যাশার চেয়েও বেশিকিছু করেছেন। এবার জয়ের আনুষ্ঠানিকা সারার পালা কুমিল্লার ব্যাটসম্যানদের।