দুর্দান্ত বোলিংয়ে খুলনার প্রথম জয়

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ষষ্ঠ আসরে প্রায়সব দলের অন্তত বড় একটা সংগ্রহ আছে। এই জায়গায় ব্যতিক্রম খুলনা টাইটানস। আগের চারটি ম্যাচেই স্বল্প পুঁজি তুলেছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দল। আজ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পঞ্চম ম্যাচেও তাই।

পার্থক্য একটা জায়গায়। আগের চারটি ম্যাচই হেরেছে খুলনা। আজ হারের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এসেছে মাহমুদুল্লাহর দল। তাও আবার মামুলি পুঁজি নিয়ে। নির্ধারিত ওভারে নয় উইকেটে ১২৮ রান করার পরও আসরের প্রথম জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে খুলনা। মাহমুদুল্লাহ-জুনাইদ, তাইজুলদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ইনিংসের এক বল বাকি থাকতে ১০৩ রানে গুটিয়ে গেছে রাজশাহী কিংস। খুলনা জিতেছে ২৫ রানে।

খুলনার ছুড়ে দেওয়া স্বল্প পুঁজির জবাব দিতে নেমে ইনিংসের আগা-গোড়া নাজেহাল অবস্থা হয়েছে রাজশাহীর। ইনিংসের প্রথম ওভারেই বড়সড় ধাক্কা খায় তারা। রাতের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরে যান বিধ্বংসী ওপেনার এভিন লুইস। ধাক্কাটা প্রায় সামলে উঠেছিল রাজশাহী দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে। যা ইনিংসে তাদের সর্বোচ্চ যুগলবন্দি।

২৯ রানের জুটির এই প্রতিরোধ গুঁড়িয়ে যায় মাহমুদুল্লাহর বলে। এরপর থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট খোয়াতে থাকে রাজশাহী। ৫৫ রানের মধ্যে ছয় উইকেট খুইয়ে বসে তারা। এদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান মেহেদি হাসান মিরাজের। ১৬ বলে ২৩ রানের ছোটখাটো ঝড় তুলে বিদায় নেন রাজশাহী অধিনায়ক।

১৩ বলে ১৩ রান করেছেন রায়ান টেন ডেসকাটে। ক্রিশ্চিয়ান জোঙ্কার ১৫ রানের জন্য খরচ করেছেন ২৪টি বল। শেষ দিকে আরাফাত সানি ও কামরুল ইসলাম রাব্বি নিষ্ফল লড়াই করেছেন। তাতে কাজ হয়নি। ১৩ রানে দুর্ভাগ্যবশৎ রান আউটের শিকার হন রাব্বি। ১৫ রানে শেষ পর্যন্ত অজেয় ছিলেন সানি।

শেষ দিকে এই দুজনের ছোট্ট ইনিংসের ওপর ভর করে কোনোরকম দলীয় সংগ্রহ এক শ ছাড়িয়েছে রাজশাহী কিংস। তাদের গুটিয়ে দিতে মূল অবদান রেখেছেন জুনাইদ খান ও তাইজুল ইসলাম। ২৬ রানে তিন উইকেট নেন পাকিস্তানি পেসার। সেখানে চার ওভারে মাত্র দশ রান দিয়ে তিন উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচ সেরার দাবিটা জানিয়ে রাখলেন তাইজুল। এ ছাড়া চার ওভারে ১২ রান দিয়ে দুই উইকেট নেওয়া মাহমুদুল্লাহও দলের প্রথম জয়ে রেখেছেন কার্যকর ভূমিকা।

এর আগে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি খুলনা টাইটানস। আগের ম্যাচগুলোর মতো এদিনও খুলনা টাইটানস ঘুমপাড়ানি ব্যাটিং করেছে। তাদের কাছ থেকে বড় সংগ্রহের প্রত্যাশা করাটা অমূলকই ছিল। কারণ আগের ম্যাচ গুরোর মতোই আজ ব্যাটিং শুরু করেছে খুলনা।

আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপাকে পরে মাহমুদুল্লাহর দল। সেই ধস এমনই যে, খুলনার টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানের কেউই ১৫ রানের বেশি করতে পারেনি। ক্রমাণ্বয়ে জহুরুল ইসলাম ১৩, জুনায়েদ সিদ্দিকি ১৪ ও ডেভিড মিলার করেন ১৫ রান। অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ তো দুই অঙ্কের ঘরেই পৌছাতে পরেননি। মাত্র ৯ রানে আউট হয়ে গেছেন তিনি।

দলীয় ৮২ রান তুলতেই খুলনার ৬ উইকেট নেই। মান বাঁচাতে লড়াই করে যান সাতে নামা আরিফুল হক ও ডেভিড ভিসে। সেই লড়াইটা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। জুটি ভাঙেন লঙ্কান অলরাউন্ডার ইসুরু উদানা; ১৩ রানে সাজ ঘরে ফেরান ওয়াইসেকে। পরে হাত খোলার আগেই মুস্তাফিজুর রহমানের বলে বিদায় নেন আরিফুল।

আরিফুলে ২৬ রান রানের ক্যামিও ইনিংসের ওপর দাঁড়িয়ে কোনোরকম লড়াকু পুঁজি তুলতে সক্ষম হয় খুলনা টাইটানস। খুলনার পতন হওয়া উইকেটের দুটি করে নিয়েছেন উদানা, মেহেদি হাসান মিরাজ ও আরাফাত সানি। মুস্তাফিজের শিকার একটি।