কর্মব্যস্ত ঢাকা এখন প্রায় ফাঁকা

রাত পেরুলেই ভোট। ভোট দিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকেই চলে গেছেন গ্রামের বাড়ি। ফলে কর্মব্যস্ত এই নগরী এখন প্রায় ফাঁকা। রাজপথে নেই মানুষের আনাগোনা, তেমন কোনো গাড়িও নেই। মাঝেমধ্যে দু’একটা ব্যক্তিগত গাড়ি গেলেও গণপরিবহনের সংখ্যা খুবই কম। তবে অলি গলিতে শোনা যায় রিকশার টুংটাং শব্দ।

আজ শনিবার সকাল ৮টার পর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত রাজধানী ঢাকার মালিবাগ, পল্টন, শাহবাগ, বাংলামটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, গুলিস্তান ঘুরে দেখা যায় রাস্তায় তেমন কোনো গণপরিবহন নেই, রাস্তায় লোকজনের সংখ্যাও কম। তবে হাসপাতাল, গণমাধ্যম এ জাতীয় কিছু জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের গাড়ির জন্য দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

এরসঙ্গে যোগ হয়েছে আজ রাত ১১টা থেকে সারা দেশে সব ধরনের যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা। এ জন্য ঢাকার যাত্রীবাহী বাস কোম্পানিগুলো সন্ধ্যার পর থেকেই গাড়ি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এজন্য জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠানের যাত্রীদের ভোগান্তির শিকার হতে হবে বলে অশঙ্কা করছেন অনেকেই।

বাস মালিকরা বলছেন, বিগত নির্বাচনে রাত ১১টা পর্যন্ত যাত্রীসেবা দিতে গিয়ে বেশ বিপাকে পড়েছিলেন। অনেককে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে ফিলিং স্টেশনে গাড়ি রেখে পায়ে হেঁটে বাড়ি যেতে বাধ্য হয়েছিলেন।

ঢাকার বাইরে বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর এবং চট্টগ্রামেও গণপরিবহনের একই ধরনের চিত্রের খবর পাওয়া গেছে। অফিস বন্ধ থাকায় শনিবার সকাল থেকেই যাত্রীর চাপ কম।

নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা চলাচলকারী বন্ধন, উৎসবও শীতল এবং সোনারগাঁও থেকে চলাচলকারী দোয়েল, স্বদেশ ও বোরাক পরিবহনের গাড়ি কম দেখা গেছে।

এ ব্যাপারে দোয়েল পরিবহনের চেয়ারম্যান আবদুস সাত্তার জানান, যাত্রী কম থাকায় গতকাল রাত ১০টার পর থেকেই গাড়ি কিছুটা কম নামানো হয়েছে। এছাড়া, টানা তিন দিনের ছুটি পেয়ে মেঘনা শিল্পাঞ্চলের অনেকেই সপরিবারে বাড়ি চলে গেছেন। এজন্য আজ রাত ১১টা পর্যন্ত রাস্তায় গাড়ি রাখার কোনো ইচ্ছে নেই।

এদিকে গাজীপুরও অনেকটা ফাঁকা হয়ে পড়েছে। পোশাক কারখানাগুলো বৃহস্পতিবার থেকেই ছুটি হয়ে যাওয়ায় এ চিরচেনা রূপ নেই। তাই বলাকা, গাজীপুর পরিবহনসহ গণপরিবহনের পরিমাণ কম দেখা গেছে।

শিক্ষা ও জীবিকার তাগিদে চট্টগ্রামে বসবাসকারী অন্য জেলার বাসিন্দারা বৃহস্পতিবার থেকেই বাড়ি ফেরা শুরু করেছে। ফলে অনেকটাই ফাঁকা হয়ে পড়েছে ব্যস্ত নগরী চট্টগ্রাম। নগরীতে চলা লেগুনা, বাস চালকরা একরকম ছুটি কাঁটাতে শুরু করেছে।

কিছুটা ফাঁকা হয়ে আসা চট্টগ্রাম নগরীরে যাত্রীর সংখ্যা কম বলে জানান লাভ লেইন এলাকার এক রিকশাচালক। তিনি বলেন, ভোট দিতে বাড়ি চলে যাওয়ার কারণে হয়ত যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে।

বহদ্দারহাটের লেগুনা চালক সুমন জানান, তিনি শুক্রবার গাড়ি নিয়ে দুপুরেই বাসায় ফিরে আর বের হননি। কারণ হিসেবে বলছেন রাস্তায় তেমন যাত্রী নেই।

প্রসঙ্গত, ভোটের দিন সরকারি ছুটি হওয়ায় টানা তিন দিনের ছুটিতে দেশ।