প্রার্থী শূন্য হওয়া আসনগুলো নিয়ে কঠিন সমীকরণে ঐক্যফ্রন্ট

আদালতের রায়ে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের চূড়ান্তভাবে ১২ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে গেছে। ফলে এসব প্রার্থীর আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। নির্বাচন কমিশনে বৈধতা পেলেও উচ্চ আদালতে তাদের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়। এর ফলে নির্বাচনের খুব কাছে এসে প্রার্থী শূন্য হওয়া আসনগুলোতে হিসেব মেলাতে বেশ হিমশিম খাচ্ছে নবগঠিত নির্বাচনী জোট ঐক্যফ্রন্ট।

ঐক্যফ্রন্ট যেসব আসনে প্রার্থী শূন্য হয়ে পড়েছে সেগুলো হচ্ছে- ঢাকা-২০ আসনের তমিজ উদ্দিন, ঢাকা-১ আসনে খন্দকার আবু আশফাক, সিলেট-২ আসনে নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদির লুন, রাজশাহী-৬ আসনের আবু সাইদ চাঁদ, বগুড়া-৩ আসনের আব্দুল মোহিত তালুকদার, বগুড়া-৭ আসনের মোরশেদ মিলটন, মানিকগঞ্জ-৩ আসনের আফরোজা খান রিতা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের মোসলেম উদ্দিন, জামালপুর-৪ আসনে ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম, ময়মমনসিংহ-৮ আসনের মাহমুদ হোসেন, ঝিনাইদহ-২ আসনের আব্দুল মজিদ, জয়পুরহাট-১ আসনের ফজলুর রহমান।

জানা গেছে, প্রার্থী শূন্য হওয়া এসব আসনের নতুন করে প্রার্থী দিতে বিকল্প দল ও স্বতন্ত্রপ্রার্থীদের সঙ্গে সমঝোতায় যেতে হচ্ছে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে। কয়েকটি আসনে বিকল্প প্রার্থীও চূড়ান্ত করেছে এই নির্বচনী জোট। এ বিষয়ে গণফোরামের কার্যকারী সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্ট নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী জানান, তিন আসনে বিকল্প প্রার্থী আছে। এরমধ্যে মানিকগঞ্জ, সিলেটে আমাদের প্রার্থীকে সমর্থন দেয়া হয়েছে। জামালপুরেও চূড়ান্ত হবে।

জানা যায়, সিলেট-২ আসনে লুনার বিকল্প গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির খানকে সমর্থন দেয়া হয়েছে। উদীয়মান সূর্য প্রতীক নিয়ে তিনি মহাজোট প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে লড়বেন।

মানিকগঞ্জ-৩ আসনে আফরোজা খান রিতার বিকল্প গণফোরামের মফিজুল ইসলাম খান কামালের পক্ষে ভোট করছে বিএনপি নেতাকর্মীরা।

ঐক্যফ্রন্ট সূত্র বলছে, বগুড়া-৩ আসনে বিএনপির আবদুল মহিত তালুকদারের আসনে আপেল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আফজাল হোসেন ও ডাব প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মজিদের দুজনের একজনের সঙ্গে সমঝোতা হতে পারে। রাজশাহী-৬ আসনে আবু সাইদ চাঁদের জায়গায় জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেনের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চলছে।

এছাড়া, জয়পুরহাট-১ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানের একমাত্র বিকল্প স্বতন্ত্র প্রার্থী ডাব প্রতীকের আলেয়া বেগম। তার সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছতে চায় বিএনপি।

ঢাকা-২০ আসনে ধানের শীষের তমিজউদ্দিনের জায়গায় জেএসডির এম এ মান্নানকে সমর্থন দেয়ার কথা ভাবছে ঐক্যফ্রন্ট। মান্নান তারা মার্কা নিয়ে নৌকার বেনজির আহমেদ, জাতীয় পার্টির খান মহামদ ইসরাফিলের বিরুদ্ধে লড়বেন।

জামালপুর-৪ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ফরিদুল কবির তালুকদার শামীমের সঙ্গে নির্বাচন করছেন নৌকা, জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীরা। তবে আসনটিতে বিএনপির সমর্থন দেয়ার মতো কেউ নেই।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনেও বিএনপির মুসলিম উদ্দিনের জায়গায় কোনো প্রার্থী দেয়ার মতো অবস্থা নেই বিএনপির। এটি আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের আসন।

ঝিনাইদহ-২ আসনেও বিএনপির আবদুল মজিদের জায়গায় অন্য কাউকে প্রার্থী দেয়ার মতো অবস্থা নেই ঐক্যফ্রন্টের। 

বগুড়া-৭ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও গাবতলী পৌর মেয়ার মোরশেদ মিলটন। উভয়ের মনোনয়ন উচ্চ আদালতে বাতিল হয়েছে। এ আসনে বিএনপি কোনো বিকল্প প্রার্থী নেই।

এখানে বর্তমান এমপি মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির আলতাফ আলী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ডাব প্রতীক নিয়ে লড়বেন ফোরদৌস আরা। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এইচ এম আজম খানের স্ত্রী।

ঢাকা-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন দোহার উপজেলা চেয়ারম্যান খোন্দকার আবু আশফাক। তার প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় এ আসনে সমর্থন দেয়ার মতো কেউ নেই বিএনপির। ফলে আসনটিতে প্রার্থী শূন্য থাকছে ঐক্যফ্রন্ট।