শাজাহানের ২৮ বছরের ‘সাম্রাজ্যে’ বিদ্রোহীর হানা

বহুল আলোচিত শ্রমিক নেতা নৌপরিবহনমন্ত্রী শাহজাহান খানের দীর্ঘ ২৮ বছরের সম্রাজ্যে এবার হানা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। আর এতে বিএনপি কিছুটা হলেও সুবিধায় থাকবে বলে মনে করছেন স্থানীয় ভোটাররা।

মাদারীপুর-২ আসনে ১৯৮৬ সাল থেকে টানা ছয় বারের নির্বাচিত সাংসদ শাহজাহান খান। তাকে ছাড়া এ আসনে অন্য কাউকে চিন্তা করে না আওয়ামী লীগ। তবে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার বিদ্রোহী হয়েছেন রাজৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আল-আমীন মোল্লা।

শাজাহান খান হেভিওয়েট প্রার্থী হলেও আল-আমীন এলাকায় বেশ জনপ্রিয়।

তবে শেষ পর্যন্ত এই দুই প্রার্থী মাঠে থাকলে ভোটের ফলাফলে এ আসনে বরাবরই পেছনে থাকা বিএনপির প্রার্থী সুবিধা পাবেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

মাদারীপুর সদরের একটি পৌরসভা, ১০টি ইউনিয়ন এবং রাজৈর উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মাদারীপুর-২ আসন। এবারের নির্বাচনে এই আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন শাজাহান খান, আল-আমীন মোল্লাসহ মোট সাতজন প্রার্থী।

শেষপর্যন্ত বনিবনা না হলে এবার নির্বাচনে মূল লড়াই হবে শাজাহান খান ও আল-আমীন মোল্লার মধ্যে। নৌমন্ত্রী সদর উপজেলার আর আল-আমীন মোল্লা রাজৈর উপজেলার বাসিন্দা। ভোটের হিসাবে রাজৈর উপজেলার ভোটার বেশি। নিজ জেলার পাশাপাশি সদর উপজেলায়ও আল-আমীন মোল্লার প্রভাব ও জনপ্রিয়তা রয়েছে। এসব বিবেচনায় আল-আমীন মোল্লা এগিয়ে থাকবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে এ আসনে বিএনপি বরাবরই পেছনে থাকলেও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রাথী থাকায় এবার কিছুটা স্বস্তিতে দলের মনোনয়ন পাওয়া কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক নেতা মিল্টন বৈদ্য ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহান্দার আলী জাহান।

তবে শেষপর্যন্ত কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে এ আসনে বিএনপির একজন প্রার্থীই থাকবে।

আসছে সংসদ নির্বাচনে নিজের নির্বাচন করা নিয়ে আল-আমীন মোল্লা বলছেন, ‘দীর্ঘ ২৮ বছর রাজৈর উপজেলার মানুষ সংসদ সদস্য পায়নি। এজন্য স্থানীয়রা তাকে দাঁড়িয়ে দিয়েছেন।’ সেই সঙ্গে তার কর্মী সমর্থকদের নানা ভাবে হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।

অন্যদিকে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, দলীয় মনোনয়ন নিয়ে প্রার্থী হয়েছি। এরই মধ্যে মাদারীপুরে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। আগামীতেও উন্নয়নের ধারা অবহ্যাত থাকবে।’

তবে কেউ প্রার্থী হতে চায়, হবে। আহ্বান করব সবাই যেন নির্বাচনী আচারণবিধি মেনে চলে বলেও জানান মন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, মাদারীপুর-২ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৭২৬ জন, যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭৬ হাজার ৬৪৭ জন, নারী ভোটার ১ লাখ ৭০ হাজার ৭৯ জন।