দারুণ রেকর্ডের হাতছানি, তবুও নিরুত্তাপ তাইজুল ইসলাম

খেলেন মাত্র একটা ফরম্যাট। সেখানেও পাদপ্রদীপের মূল আলোটা তার উপর পড়ে খুব কম। পারফর্ম্যান্সে তিনি বরাবরই উজ্জ্বল। কিন্তু দলের সাফল্যের রোশনাইয়ে তার মুখ ঝলমল করে না সে রকম। তারপরও নিজের কাজটা করে যেতে তার জুড়ি নেই। বলা হচ্ছে তাইজুল ইসলামের কাছে। অন্যদের মতো তারকাদ্যুতিতে ভেসে না যাওয়া এই স্পিনারকে হাতছানি দিচ্ছে দারুণ এক হাতছানি। যদিও তাতে তার মনোযোগ আছে সামান্যই।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চলমান সিরিজের প্রথম ম্যাচে তাইজুল তুলে নিয়েছেন মোট সাত উইকেট। ব্যাট হাতেও করেছেন গুরুত্বপূর্ণ ৪০ রান। এর মধ্যে প্রথম ইনিংসেই করেছেন ৩৯ রান। ব্যাটে-বলে এ রকম উজ্জ্বলতা দেখিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচ জেতাতে তিনি রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

সর্বশেষ ছয় ইনিংসে চারবার পাঁচ বা এর চেয়ে বেশি উইকেট নেয়া তাইজুল এখন অপেক্ষা করছেন ১০০ টেস্ট উইকেটের। বাংলাদেশরে হয়ে তৃতীয় বোলার হিসেবে ১০০ টেস্ট উইকেট পেতে তার লাগবে মাত্র ছয় উইকেট। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা তাইজুল রেকর্ডটা গড়ে ফেলতে পারেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তৃতীয় টেস্টেই। যা শুরু হবে ৩০ নভেম্বর থেকে।

টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে ১০০ উইকেট পান মোহাম্মদ রফিক। তার লেগেছিলো ৩৩ টেস্টর ৪৮ ইনিংস। ২৮ টেস্টের ৪৬ ইনিংসে ১০০ উইকেট তুলে নিয়ে তাকে ছাড়িয়ে যান সাকিব আল হাসান। এবার দেশের হয়ে দ্রুততম ১০০ উইকেট নেয়ার রেকর্ডকে বর্তমান টেস্ট অধিনায়ককে পেছনে ফেলার সুযোগ এসেছে তাইজুলের সামনে।

তাইজুল ৯৪ উইকেট পেয়ে গেছন ২২ টেস্টের ৪০ ইনিংসে। রেকর্ডটা যে তার জন্যই অপেক্ষা করছে, তা নিশ্চয় অনুমান করা যায় এই তথ্যেই। কিন্তু এমন একটা রেকর্ডের আগেও তাইজুল একেবারেই নিরুত্তাপ। প্রচারের আলো তার উপর যেমন কম পড়ে, তাইজুলও যেনো তেমনই আবেগহীন।

সোমবার মিরপুরে ঐচ্ছিক অনুশীলনের ফাঁকে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন এই বাঁহাতি স্পিনার। এ সময় রেকর্ডের বিষয়ে তার মনোযোগ আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘আমার মাথায় এতো কিছু নেই। আমি শুধু চেষ্টা করে যাবো ভালো বোলিং করার। এই চিন্তাটাই মাঠে প্রয়োগ করার চেষ্টা করবো। উইকেট যদি কপালে থাকে, পাবো। আসলে ভালো বোলিং করলে উইকেট পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আমি ওই ভালো বোলিংটাই করার চেষ্টা করবো।’

তাইজুলের মনোজগত চলে এ রকমই সোজা চিন্তায়। যে চিন্তায় জনপ্রিয়তা পাওয়ার আকঙ্ক্ষা প্রায় অস্তিত্বহীন, যে চিন্তায় বোলিং করাটা কেবলই যেনো সাধনার বিষয়। ইতিহাস বলে, পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা যাদের ক্ষীণ, প্রাপ্তির অহঙ্কার এসে মাথা ঠুকে তাদেরই পায়ে। ইতিহাসের এই শিক্ষা আমলে নিলে দেশের হয়ে দ্রুততম ১০০ টেস্ট উইকেটের প্রাপ্তি কেবল তাইজুলকেই মানায়!