তাইজুল-নাঈমের বিস্ময়কর ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের দিন পার

২৫৯ রানে আট উইকেট পড়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের ইনিংস আর কতোটুকু বড় হতে পারে? বাংলাদেশের টেলএন্ডারদের ব্যাটিংয়ের যে দশা, তাতে এমন ইনিংসে ৩০০ রান আশা করা একটু কঠিনই।

তারপরও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ তা করলো। ২৫৯ রানে আট উইকেট পড়ে যাওয়ার পর এক রকম বিস্ময়কর ব্যাটিংই করেছেন অভিষিক্ত স্পিনার নাঈম হাসান ও তাইজুল ইসলাম। নবম উইকেটে এ দুজন যোগ করেছেন ৫৬ রান!

তাইজুলকে টুকটাক ব্যাটিং করতে জানেন, তা মোটামুটি সবারই জানা ছিলো। কিন্তু ১৭ বছর বয়সে টেস্ট অভিষিক্ত হওয়া নাঈমও যে এতোটা অবিচলতা দেখাবেন, তা বোধহয় কেউ আশা করেননি।

আশা না করার ব্যাপার অবশ্য চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ওভারেই ঘটেছে, যখন মাত্র দুই বল খেলে বিদায় নেন সৌম্য সরকার। অথচ প্রস্তুতি ম্যাচেও দারুণ এক হাফ সেঞ্চুরি করে টেস্টে নিজের ফেরাটাকে যৌক্তিক বলে প্রমাণ করেছিলেন তিনি।

মাত্র এক রানেই বাংলাদেশ হারিয়ে বসে প্রথম উইকেট। শুরুর সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতেও অবশ্য সময় লাগেনি। দ্বিতীয় উইকেটে ইমরুল কায়েস ও মুমিনুল হক যোগ করেন ১০৪ রান। সৌম্যর আউটটা বাদ দিলে প্রথম সেশনে বাংলাদেশের আর তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি নেই। ৪৪ রানে ইমরুলের আউট হওয়া নিয়ে কিছুটা আফসোস অবশ্য থাকতে পারে। কিন্তু ওই রান করতেই ইমরুল যেহেতু তিন তিনটি লাইফ পেয়েছেন, সুতরাং তার রানটা বাংলাদেশ ‘বোনাস’ হিসেবেই ভাবতে পারে!

বাংলাদেশ সবচেয়ে ক্ষতির মুখে পড়ে দ্বিতীয় সেশনে। যখন ২২২ থেকে ২৩৫ রানের মধ্যে একে চারটি উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। এই ভাঙনের আগে বিদায় নেন মোহাম্মদ মিঠুন। এরপর ২২২ থেকে ২৩৫ রানের মধ্যে আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকেন মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও সাকিব আল হাসান।

এদের মধ্যে মুমিনুল অবশ্য নিজের কাজটা ঠিকই করে গেছেন। হাঁকিয়েছেন ক্যারিয়ারের অষ্টম টেস্ট সেঞ্চুরি। যা আবার চট্টগ্রামের মাঠেই ষষ্ঠ। তার এমন রানে অনুপ্রাণিত হতে হতেও হননি মিঠুন ও সাকিব। তারা দুজন করে গেছেন ২০ ও ৩৪।

কিন্তু তাদের পরে নামা মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ করতে পারেননি কিছুই। দুজনের মিলিত অবদান মাত্র সাত রান। এরপরই নবম উইকেটে জুটি গড়েন নাঈম ও তাইজুল। তখনও এটা ধারণাতেও ছিলো না যে তারা দিনটা পার করে দিবেন!

এ দুজন মিলে ১৫ ওভারের বেশি ব্যাটিং করে আট উইকেটেই দিন শেষ করেছেন। অথচ একটা সময় মনে হয়েছিলো প্রথম দিনেই হয়তো ওয়েস্ট ইন্ডিজ কয়েক ওভার ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাবে।

ক্যারিবীয়দের হয়ে এ দিন বল হাতে আগুন ঝড়িয়েছেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। ১৮ ওভারে ৬৯ রান দিয়ে চার উইকেট তুলে নিয়েছেন তিনি। জোমেল ওয়ারিক্যান নিয়েছেন দুটি উইকেট।

এই ম্যাচে বাংলাদেশ সর্বশেষ টেস্ট একাদশে তিনটি পরিবর্তন নিয়ে নামে। সাকিব আল হাসানের ফেরা নিশ্চিত হওয়ার একটি পরিবর্তন নিশ্চিতই ছিলো। এ ছাড়া লিটন দাসের বাদ পড়াও তৈরি করেছিলো একটি শূন্যস্থান। সাকিবকে সুযোগ করে দিতে বাইরে থাকতে হয় আরিফুল হককে আর লিটনের শূন্যস্থান পূরণ করেন সৌম্য সরকার। তৃতীয় পরিবর্তন হিসেবে দলে সুযোগ পান চতুর্থ স্পিনার নাঈম হাসান। তার জন্য জায়গা ছাড়তে হয় সৈয়দ খালেদ আহমেদকে।