রিজভী: প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী আচরণবিধি মানছেন না

আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনী আচরণবিধি ন্যূনতম অনুসরণ করছেন না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শনিবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তিনি।

বিএনপি মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী বলেন, 'একের পর এক নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে দলটির প্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনী আচরণবিধির ন্যুনতম অনুসরণ করছেন না। পুরোপুরি নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন।'

রিজভী বলেন, 'নির্বাচনী আচরণবিধিমালা ১৪ (২) ধারা ভঙ্গ করে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা গণভবনে তার দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন।'

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘হাসিনা: এ ডটার’স টেল’ ডকুমেন্টারি ফিল্ম প্রচার নিয়েও প্রশ্ন তোলেন রিজভী। তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনে একজন প্রার্থী। তিনি একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সেই কারণে ইতিহাসের নানা ঘটনা, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, ক্ষমতার পালাবদল, ব্যক্তি-রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতাসহ বিভিন্ন বিষয় এককেন্দ্রিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। যা আচরণবিধির চরম লঙ্ঘন।'

রিজভী অভিযোগ করেন, 'আচরণবিধি অনুযায়ী এমন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা যাবে না। এটি প্রচারের ফলে প্রচারণা শুরুর আগেই নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করবে। শেখ হাসিনা নিজেই প্রার্থী হয়ে কীভাবে আচরণবিধি ভঙ্গ করেন, বিষয়টি বোধগম্য নয়। নির্বাচন আচরণবিধিমালার ১২ ধারায় স্পষ্ট বলা আছে, ভোট গ্রহণের তিন সপ্তাহ পূর্বে কোনো প্রকার প্রচার শুরু করা যাবে না। এই ডকুমেন্টারি ফিল্মটি কি প্রচারণামূলক নয়? ডকুফিল্মটি সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অর্থাৎ সিনেমা হলগুলোয় প্রধানমন্ত্রীর ছবি সংবলিত পোস্টারসহ রীতিমতো মহড়া আকারে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।'

রিজভী আরো বলেন, 'ধানমণ্ডির সুধাসদনে অবস্থিত সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) পক্ষে শেখ হাসিনাকে নিয়ে এই ডকুফিল্মটি প্রযোজনা করেছেন রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিকী ববি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। দেশব্যাপী ঢাকঢোল পিটিয়ে এসব প্রচার করা হলেও নিশ্চুপ নির্বাচন কমিশন।'

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বারা আচরণবিধি ভঙ্গের অসংখ্য প্রমাণ থাকলেও নির্বাচন কমিশন চুপচাপ। ফলে নির্বাচনে ন্যুনতম লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি অভিযোগ করেন রিজভী। তিনি অবিলম্বে শেখ হাসিনার ওপর নির্মিত ডকুফিল্মটি সিনেমা হলগুলো থেকে প্রত্যাহারের আবেদন জানান। এছাড়াও গণভবনকেও নির্বাচনী কাজে ব্যবহার না করার আহ্বান জানান।