চিড়িয়াখানার 'পিকনিক-স্পট' বন্ধ ঘোষণা, বাড়লো প্রবেশ ফি

পরিবেশ রক্ষায় জাতীয় চিড়িয়াখানার পিকনিট স্পট বন্ধ ঘোষণা করেছে জাতীয় চিড়িয়াখানা উপদেষ্টা কমিটি। সেইসঙ্গে বাড়ানো হয়েছে চিড়িয়াখানার প্রবেশ মূল্য। রোববার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দের সভাপতিত্বে জাতীয় চিড়িয়াখানার উপদেষ্টা কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চিড়িয়াখানার সৌন্দর্য ও পরিবেশরক্ষার স্বার্থে চিড়িয়াখানায় ভাড়ায় পিকনিক করার সুযোগ বাতিল করে পিকনিক-স্পটগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এতদিন উৎসব দ্বীপ ও নিঝুম দ্বীপ নামক ২টি পিকনিক-স্পটে যথাক্রমে ১০ ও ৬ হাজার টাকায় যে কেউ দিনব্যাপী বনভোজন করার অনুমতি পেতো। চিড়িয়াখানার পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়াতে চিড়িয়াখানার লেকে টিকেট কেটে বড়শিতে মাছ মারা বন্ধ অথবা সীমিত করার পরামর্শও দেয় উপদেষ্টা কমিটি।

সভায় চিড়িয়াখানায় প্রবেশের মূল্য ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি চিড়িয়াখানার বাইরের গাড়ি-পার্কিংয়ের ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্তসহ রিক্সা, ভ্যান বা-সাইকেলের প্রচলিত পার্কিং-পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে। আর ১১৫টি কার ও ১০টি মিনিবাসের রাখার একটি বর্ধিত বহিঃপার্কিং নির্মাণেরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সভায়।

এছাড়া ঢাকার জাতীয় চিড়িয়াখানাসহ রংপুর চিড়িয়াখানার আধুনিকায়নের জন্য 'মাস্টার প্লান স্ট্রাকচারাল ডিজাইন প্রণয়নসহ ৩৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে বর্তমানে বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যাসহ জনদুর্ভোগ দূরীভূত হবার পাশাপাশি জাতীয় চিড়িয়াখানাটি বিশ্বে অত্যাধুনিক চিড়িয়াখানার কাতারে নাম লেখাতে সক্ষম হবে।

মন্ত্রী চিড়িয়াখানার বিনোদনধর্মী উদ্দেশ্য-লক্ষের সাথে সংগতিপূর্ণ নয়, এমন সব প্রকল্প ও সিদ্ধান্ত পরিহার করে জনগণ ও পরিবেশবান্ধব প্রকল্পগ্রহণের আহবান জানান। অত্যাধুনিক চিড়িয়াখানার স্বার্থে সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলিপদ্ধতি বাতিলসহ বিভিন্ন দেশের উন্নত চিড়িয়াখানা পরিদর্শন মাধ্যমে অভিজ্ঞতার্জনের ওপর জোর দেন।
প্রসঙ্গত, চিড়িয়াখানার ভবিষ্যত পরিকল্পনা, সার্বিক উন্নয়নসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্তগ্রহণের অধিকারী ৩২ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি বছরে দুবার সভার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।

২০১৪ সালে গঠিত উপদেষ্টা কমিটি পুনর্গঠন করে ২৪ অক্টোবরে যে নতুন কমিটি গঠন করা হয়, এটিই তার প্রথম সভা। জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থা, প্রাণিবিশেষজ্ঞ ও স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে এই কমিটি। বর্তমান কমিটির উল্লেখযোগ্য সদস্য হলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী, উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, আসলামুল হক এমপি, ইলিয়াস হোসেন মোল্লাহ এমপি, বাংলাদেশের এটর্নি জেনারেল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এ তথ্যমন্ত্রণালয়ের সচিবগণ।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, মন্ত্রণালয়ের সচিব রইছউল আলম মণ্ডল, প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ডিজি হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক, প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের ডিজি নাথুরাম সরকার, মৎস অধিদপ্তরের ডিজি আবু সাঈদ মো. রাশেদুল হক প্রমুখ বক্তৃতা করেন।