‘নতুন মিশন’ নিয়ে আরব সফরে ইসরায়েলি মন্ত্রীরা!

প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ইসরায়েলের সঙ্গে মুসলিম দেশ, বিশেষ করে আরবদের শত্রুতার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড জবর দখল করে দেশটি প্রতিষ্ঠা করার কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। আরবদের সঙ্গে যুদ্ধেও জড়িয়েছে ইসরায়েল। তারপর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়ে উঠেনি মুসলিম দেশগুলোর।

তবে সম্প্রতি মুসলিমদের পবিত্র স্থানের জিম্মাদার সৌদি আরব ও তার ঘনিষ্ট মিত্র সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সঙ্গে গোপন সম্পর্ক তৈরির অভিযোগ উঠেছে।

এরমধ্যে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান গোপনে ইসরায়েল সফর করেছেন বলেও গুঞ্জন রয়েছে। একই ধরনের অভিযোগ রয়েছে মোহাম্মদের ঘনিষ্ঠ আমিরাতের যুবরাজ আল নাহিয়ানের বিরুদ্ধেও। তবে দেশ দুটি এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

এমন প্রেক্ষাপটে হঠাৎ করেই সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করেছেন ইসরায়েলি দুই মন্ত্রী। আলাদা সফরে গেলেও তারা গোপনে নয়, প্রকাশ্যে আমিরাতের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকেও মিলিত হয়েছেন। কিন্তু কেন এই সফর?

আন্তর্জাতিক জুডু প্রতিযোগিতা উপলক্ষ্যে গত ২৬ অক্টোবর আমিরাত সফরে যান ইসরায়েলি ক্রীড়া ও সংস্কৃতিমন্ত্রী মিরি রেগেভ। তাদের সঙ্গে একটি প্রতিনিধিদলও ছিল।

এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ইসরায়েলি প্রতিযোগী একটি স্বর্ণপদক পায় এবং এরপরই আমিরাতের মাটিতে প্রথমবারের মতো ইসরায়েলি জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়। কোনো মুসলিম দেশে ইসরায়েলি জাতীয় সঙ্গীত বাজনোর ঘটনা এটাই প্রথম।

ইসরায়েলি মন্ত্রীকে এ প্রতিযোগিতায় অতিথি করা হয় এবং তিনি আমিরাতের জুডু ফেডারেশনের প্রধানের সঙ্গে বৈঠক ও করমর্দন করেন। এছাড়া নারী মন্ত্রী মিরি রেগেভ আবুধাবির ‘শেইখ জায়েদ বিন সুলতান’ মসজিদ পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় সমালোচনার ঝড় বইছে মুসলিম দেশগুলোতে।

ইসরায়েলি গণমাধ্যমে ছবিসহ এ খবর প্রকাশ করে ঘটনাটিকে ইসরায়েলের জন্য একটি বড় বিজয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়। অন্যদিকে এটিকে ফিলিস্তিনি জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে বর্ণনা করেছে হামাস।

এ ঘটনার তিনদিন পর দেশটি সফরে গেছেন ইসরায়েলি যোগাযোগমন্ত্রী আইয়ুব কারা। তিনি আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ বিষয়ক এক সম্মেলনে অংশ নিতে মঙ্গলবার দুবাই পৌঁছেছেন।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের নিরাপত্তা সহযোগিতা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। বিষয়টি প্রথম প্রকাশ্যে এনেছে আমিরাত। এরপর সৌদি আরবও একই পথে হাটবে।

কয়েকদিন আগে নিউ ইয়র্ক টাইমস বলেছে, আরব নেতাদের টেলিফোনে আড়িপাতার কাজে ইসরায়েলকে সহযোগিতা করেছে আমিরাত। আড়িপাতার শিকার নেতাদের মধ্যে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানিও রয়েছেন।

এর আগে গত ২৫ অক্টোবর আরেক আরব দেশ ওমানে গোপন সফর করেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। পরদিন সুলতান কাবুসের সঙ্গে তার সাক্ষাতের খবর ছবি ফাঁস করে মাস্কাট। নেতানিয়াহুর সফরে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা মোসাজ প্রধান হিনজ ক্রগও ছিলেন।