এবার ৯৬ ঘণ্টা ধর্মঘটের হুমকি!

সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’-এর কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ মোট ৮ দফা দাবি আদায়ে পরিবহন ধর্মঘটের কর্মসূচি পালন করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। তাদের ডাকা আটচল্লিশ ঘণ্টার ধর্মঘট শেষ হওয়ার আগেই পরিবহন শ্রমিক নেতা ওসমান আলী জানান, তাদের দাবি মেনে সড়ক পরিবহন আইন সংশোধন না করলে সামনের মাসে ৯৬ ঘণ্টার একই ধরনের কর্মসূচি দেয়া হবে।

রোববার সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া শ্রমিকদের এই ধর্মঘট মঙ্গলবার সকাল ছয়টায় শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। রোববার থেকেই মূলত অবরোধে অচল হয়ে পড়েছে পুরো দেশের সড়কপথ। গণপরিবহন না পেয়ে দুর্ভোগে পড়ছে সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন স্থানে পরিবহন শ্রমিকরা সাংবাদিক, প্রাইভেট গাড়ি চালক ও মোটর সাইকেল চালকদের হেনস্তা করেন।

ফেডারেশেনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেন, 'আপাতত আমাদের কর্মসূচি শেষ। এরপর মূলত সরকারকে নোটিস দেয়া হবে। ২১ দিনের মধ্যে সরকার দাবি না মানলে সামনে ৯৬ ঘণ্টার কর্মসূচি দেয়া হবে। আগামী ৩ নভেম্বর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে নোটিস দেয়ার কথা জানান তিনি।

এদিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সংসদ অধিবেশন বসছে না বলে পরিবহন শ্রমিকদের দাবি মেনে আইন সংশোধনের সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি পরিবহণ শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে অপেক্ষা করার নিদের্শ দেন।

এ বিষয়ে শ্রমিক নেতা ওসমান আলী বলেন, 'সরকার চাইলেই সব সম্ভব। আইন বানাতে সংসদ লাগে না। অধ্যাদেশ জারি করে পরবর্তী পার্লামেন্টে পাস করলেই হয়। আমাদের প্রায় ৭০ লাখ পরিবহন শ্রমিকের পক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কি একটা অধ্যাদেশ জারি করে শ্রমিকদের রেহাই দিতে পারেন না।'

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন যে আট দফা দাবিকে সামনে রেখে আন্দোলন করছে সেগুলো হলো- সড়ক দুর্ঘটনায় মামলা জামিনযোগ্য করতে হবে, শ্রমিকদের অর্থদণ্ড ৫ লাখ টাকা করা যাবে না, সড়ক দুর্ঘটনা তদন্ত কমিটিতে শ্রমিক প্রতিনিধি রাখতে হবে, ড্রাইভিং লাইসেন্সে শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি করতে হবে, ওয়েস্কেলে (ট্রাক ওজন স্কেল) জরিমানা কমানোসহ শাস্তি বাতিল করতে হবে।

এছাড়াও সড়কে পুলিশের হয়রানি বন্ধ করতে হবে, গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের সময় শ্রমিকদের নিয়োগপত্র সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সত্যায়িত স্বাক্ষর থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। সব জেলায় শ্রমিকদের ব্যাপক হারে প্রশিক্ষণ দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করতে হবে এবং লাইসেন্স ইস্যুর ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধ করতে হবে।