আ.লীগের নির্বাচনী প্রস্তুতি: পরিকল্পনায় কওমি আলেমরা

একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বহু আগেই মাঠে নেমেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে ভোটের সময় ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে তাদের পরিকল্পনাতেও বিস্তার ঘটেছে। তারা নির্বাচনে ভোট টানতে ১৪ দলের বাইরে বেশকিছু বাম দল, ধর্মভিত্তিক দলকে জোটে আনা এবং কওমি আলেমদের ভোট পাওয়ার কৌশল ঠিক করেছে।

এবিষয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় গণভবনে দলের নেতাদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৈঠক উপস্থিত এক নেতা জানান, বৈঠকে দলের নির্বাচনী কৌশল নির্ধারণ, নির্বাচনকালীন সরকার গঠন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার তৈরিসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের ওই নেতা বলেন, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় ১৪ দলের সঙ্গে বামগণতান্ত্রিক জোট, ইসলামী ফ্রন্ট ও জাকের পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আসার আবেদন করেছে, তাদের বিষয়ে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদ সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জানাবে।

এ ছাড়া আল্লামা আহমদ শফীর নেতৃত্বে হেফাজতে ইসলাম সম্পর্কে আওয়ামী লীগের নেতারা যাতে সমালোচনা না করে সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া, শরিক দলগুলো যেন আওয়ামী লীগের এই সিদ্ধান্ত মেনে চলে তাও খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে।

তাছাড়া হেফাজতে ইসলাম ও জামায়াতে ইসলামীকে যাতে এক করে না দেখা হয় তা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়।

আওয়ামী লীগ সম্পর্কে কওমী আলেমদের একটা ভুল ধারণা ছিল সেই ভুল ধারণা তারা ভাঙাতে পেরেছে উল্লেখ করে বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কওমী আলেমরা এখন আওয়ামী লীগের সুনাম করে। আমার বিশ্বাস কওমি আলেমদের ভোট আমরা পাব।’

তিনি দলের নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনার খেয়াল রাখবেন ১৪ দলের কোনও নেতা যেন এমন কিছু না বলে, যাতে তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে।’

সেই সাথে নির্বাচনের পূর্বে অনেকেই কওমী আলেমদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্কের দূরত্ব তৈরি করার চেষ্টা করবে বলেও সতর্ক করে দেন তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে ইসলাম ও রাসুলকে (সা.) কটূক্তিকারী নাস্তিক ব্লগারদের ফাঁসি দাবিতে আন্দোলনের মাধ্যমে টাইমলাইনে আসা হেফাজতে ইসলামকে আওয়ামী লীগ সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর তাদের কাছে টানার চেষ্টা করে।

তারই অংশ হিসেবে সংগঠনটির দাবি অনুযায়ী স্কুল কলেজের বইয়ে কিছু পরিবর্তন আনা হয়। গত বছরের মাঝামাঝিতে সুপ্রিম কোর্টের সামনে স্থাপন করা গ্রীক দেবী মূর্তি অপসারণ কারা হয়। সবশেষ এ বছরের মাঝামাঝিতে কওমি সনদকে স্বীকৃতি দিয়ে ১০০০ কওমি আলেমকে চাকরি দেয়া হয়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এ সবকিছুই বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি কওমি আলেমদের যে নেতিবাচক ধরণা তা ঘোচাতে করা হয়েছে।