কোহলির ম্যাচে অবিশ্বাস্য টাই

লক্ষ্যটা কঠিন। তবে আধুনিক ক্রিকেটের যুগে সেটা মোটেও অসম্ভব নয়। ভারতের ছুঁড়ে দেওয়া ৩২১ রানের চ্যালেঞ্জ জয়ের খুব কাছেই চলে এসেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পা হড়কালো ক্যারিবীয়দের। শেষ ২৪ বলে ২৭ রানের সহজ সমীকরণটা মেলাতে পারেনি তারা। অথচ হাতে অক্ষত ছিল পাঁচ পাঁচটি উইকেট!

তাই বলে হারেওনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ বলে চার মেরে ভারতের সঙ্গের ম্যাচটা টাই করেন শাই হোপ। বুধবার বিশাখাপত্নমে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয়টা তাই অমীমাংসিতই থেকে গেল। শনিবার পুনেতে তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে ফের মুখোমুখি হবে স্বাগতিক ভারত ও সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

শেষ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার ছিল ১৪ রান।ততোক্ষণে ভারতের হাতের নাগালে ম্যাচটা নিয়ে এসেছেন আগের দুই ওভার করা মোহাম্মদ শামি এবং চাহাল। প্রচণ্ড চাপের মুখে শেষ ওভারটি করতে আসেন উমেশ যাদব। নখ কামড়ানো ওই ওভারের নাটকীতা পৌঁছালো চরমে। ম্যাচের শেষ বলটা হোপের ব্যাট ছুঁয়ে থার্ডম্যানের হাতে লেগে পেরিয়ে যায় সীমানাদড়ি। ম্যাচ টাই।

ভারত ম্যাচটা সহজে জিতবে এমনটাই ধরে নেওয়া হয়েছিল তাদের ইনিংস শেষে। নির্ধারিত ওভারে ছয় উইকেটে ৩২১ রানের পাহাড় গড়ে স্বাগতিকরা। শুরুর ধাক্কা সামলে ভারতীয়দের বড় সংগ্রহের নায়ক বিরাট কোহলি। এদিন টানা দ্বিতীয় ম্যাচে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ভারতের অধিনায়ক।

১২৯ বলে ১৫৭ রানে শেষ পর্যন্ত অজেয় থাকলেন কোহলি। ইনিংসটি ১৩টি চার ও চারটি ছক্কায় হাঁকিয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ৬১তম সেঞ্চুরি করার পথে কোহলি ছুঁয়েছেন ওয়ানডেতে দশ হাজার রানের মাইলফলক। ইনিংসে কোহলি সবচেয়ে বড় সঙ্গটা পেয়েছেন আম্বাতি রাইডুর কাছ থেকে। ব্যক্তিগত ৭৩ রানে ফিরে গেছেন রাউডু। ইনিংসে তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৯ রান করেছেন শিখর ধাওয়ান।

৩২২ রানের বিশাল লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজের শুরুটা হলো সাদামাটা। ৭৮ রানের মধ্যে হারাতে হয়েছে দুই ওপেনার ও মারলন স্যামুয়েলসকে। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় সফরকারীরা। শিমরন হেটমায়ার-শাই হোপ গড়ে তোলেন ১৪৩ রানের দারুণ জুটি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২২১ রানে জুটি বিচ্ছিন্ন করে ভারতকে ম্যাচে ফেরান চাহাল।

ফেরার আগে ৬৪ বলে ৯৪ রানের বিস্ফোরক এক ইনিংস খেলে গেছেন হেটমায়ার। চারটি চার ও সাতটি ছক্কায় বিধ্বংসী ইনিংসটি সাজিয়েছেন তিনি। হেটমায়ারের বিদায়ে এক প্রান্তে খুঁড়িয়ে চলতে থাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অন্যপ্রান্তে, আশার আলো হয়ে টিকে থাকলেন হোপ। লড়াই করলেন ম্যাচের শেষ বল পর্যন্ত। তবু মধুর একটা সমাপ্তি উপহার দিতে পারেননি তিনি। ১৩৪ বলে ১২৩ রানে অপরাজিত থাকলেন হোপ। ইনিংসে ১০টি চার ও তিনটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি।

রঙ ছড়ানোর এই ম্যাচে ৩২ ওভারের আগেই তিন উইকেটে ২২১ রান করে ফেলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ভারতের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজই পড়ে গিয়েছিল। শেষ দিকে জাদেজা-চাহালদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সুবাদে হার ঠেকিয়েছে ভারত। স্বাগতিকরা উপহার দিয়েছে রোমাঞ্চকর একটা লড়াই। যে লড়াইয়ে হারেনি ভারত, হারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজও। সত্যিকার অর্থে এই ম্যাচে জয় হয়েছে ক্রিকেটেরই।